Train in Japan said to be ran with Just one Passenger for three years dgtl
Japan Train
এক জন মাত্র যাত্রীকে নিয়ে চলত, তিন বছর ধরে ‘মরা’ গ্রামের ছাত্রীকে স্কুলে পৌঁছে দিত আস্ত ট্রেন! কতটা সত্যি এই কাহিনি?
বর্তমানে দীপাবলি এবং ছটপূজার কারণে ভারতের ট্রেনগুলিতে প্রচুর ভিড় দেখা যাচ্ছে। নির্দিষ্ট কিছু রুটে প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে ভ্রমণ করতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। এমনকি, অনেক ট্রেনে অপেক্ষা-তালিকার টিকিটও পাওয়া যাচ্ছে না।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৫৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
ভারতে প্রতি দিন ১৩ হাজারেরও বেশি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে শতাব্দী এবং রাজধানীর মতো দূরপাল্লার ট্রেন যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে অসংখ্য লোকাল ট্রেন।
০২১৬
ভারতে ২৪টি কোচ বিশিষ্ট একটি ট্রেনে সাধারণত ১,২০০ থেকে ১,৪০০ যাত্রী পরিবহণ করা হয়। উৎসবের মরসুমে সেই সংখ্যা বেড়ে যায়। সাধারণ এবং স্লিপার কোচগুলিতে ভিড় হয় বেশি।
০৩১৬
বর্তমানে দীপাবলি এবং ছটপূজার কারণে ভারতের ট্রেনগুলিতে প্রচুর ভিড় দেখা যাচ্ছে। নির্দিষ্ট কিছু রুটে প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে ভ্রমণ করতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। এমনকি, অনেক ট্রেনে অপেক্ষা-তালিকার টিকিটও পাওয়া যাচ্ছে না।
০৪১৬
ভারতীয় রেলে কেমন ভিড় হয় তা বোঝার জন্য বেশি দূরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। চট করে এক বার শিয়ালদহ বা হাওড়া স্টেশনে ঢুঁ মেরে এলেই হবে।
০৫১৬
কিন্তু এখন যদি বলা হয় এমন একটি ট্রেনও পৃথিবীর বুকে ছিল, যা চালানো হত কেবল এক জন যাত্রীর জন্য! সেই যাত্রীও আবার কোনও কেউকেটা নন। সাধারণ এক পরিবারের কন্যা। সেই যাত্রীকে নিয়েই চলত নির্দিষ্ট সেই ট্রেনটি। অন্য কোনও যাত্রী ট্রেনে চড়তেন না।
০৬১৬
অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে? কিন্তু সত্যিই নাকি তেমনটা ঘটেছিল। প্রায় তিন বছর ধরে শুধুমাত্র এক জন যাত্রীর জন্যই চালানো হয়েছিল আস্ত একটি ট্রেন।
০৭১৬
জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপে এক প্রত্যন্ত গ্রামের কিউ-শিরাটাকি স্টেশন। গ্রামের জনসংখ্যা মেরেকেটে ৪০ জন। কম জনসংখ্যার জন্য স্থানীয় ভাবে সেটি পরিচিত ছিল ‘মরা’ গ্রাম নামে।
০৮১৬
যাত্রী না মেলায় ২০১৩ সাল নাগাদ সেই স্টেশন বন্ধ করে দিয়েছিল জাপান রেলওয়ে। লোকসান থেকে বাঁচতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
০৯১৬
ওই গ্রামের আর কোনও যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। লোকেদেরও খুব একটা গ্রামের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হত না। দীর্ঘ দিন ধরে লোকসানে চলায় রেলকর্তারা রুট বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
১০১৬
কিউ-শিরাটাকি স্টেশনের কাছেই বাড়ি ছিল কানা হারাদা নামে এক ছাত্রীর। স্কুলে যাওয়ার জন্য তার ভরসা ছিল ট্রেন।
১১১৬
তাই জাপান রেলের কাছে তাদের স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চালু রাখার আবেদন করে হারাদা। সে জানায়, ট্রেন পরিষেবা না থাকলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হবে তার পক্ষে।
১২১৬
জাপানের রেল কর্তৃপক্ষ হারাদার শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রুটটিকে আরও তিন বছরের জন্য চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যাতে যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে এক ছাত্রীকে স্কুলছুট না হতে হয়। যাতে ওই ছাত্রীর স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই তা না ভেঙে যায়।
১৩১৬
এর পর আরও তিন বছর ওই রুটে একটি ট্রেন চালায় জাপান রেল। হারাদা ছাড়াও গুটি কয়েক যাত্রী কিউ-শিরাটাকি স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়তেন। তবে বেশির ভাগ দিনই সে ছিল একমাত্র যাত্রী।
১৪১৬
একটি নির্দিষ্ট ট্রেন প্রতি দিন সকালে হারাদাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসত। সন্ধ্যায় তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেত।
১৫১৬
যদিও অনেকেরই দাবি, এই কাহিনির সবটা সত্যি নয়। হারাদা ছাড়াও আরও বেশ কয়েক জন পড়ুয়া ওই ট্রেনে করে যাতায়াত করত সেই সময়। জাপান রেলও নাকি কোনও দিন এ কথা বলেনি যে, শুধু হারাদার জন্য ট্রেনটি চালানো হত।
১৬১৬
২০১৬ সালের মার্চ মাসে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে হারাদা। কাকতালীয় ভাবে তার পরেই ওই স্টেশনটি বন্ধ করে দেয় জাপান রেল।