Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Ration Distribution Case

রেশন দুর্নীতি মামলা কী? কোন অভিযোগের সূত্রে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করল ইডি?

কী ভাবে রেশনের আটা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে, তার একটা ধারণা মিলেছে ইডির নথি থেকে। বৃহস্পতিবারে জ্যোতিপ্রিয়দের জেরার নেপথ্যেও সেই নথির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৩ ১২:২৭
Share: Save:
০১ ২০
What is Ration Distribution Case, how Jyotipriya Mallick got involved in this case by ED

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবারই ইডি গ্রেফতার করেছে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী, অধুনা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পরেই তাঁকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

০২ ২০
What is Ration Distribution Case, how Jyotipriya Mallick got involved in this case by ED

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় এই প্রথম কোনও মন্ত্রী গ্রেফতার হলেন। বৃহস্পতিবার রাত ৩টে নাগাদ জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সিজিও কমপ্লেক্সের ইডি দফতরে তাঁকে নিয়ে আসা হয়।

০৩ ২০
What is Ration Distribution Case, how Jyotipriya Mallick got involved in this case by ED

সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকার মুখে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হলাম আমি। শুধু এটুকুই বলে গেলাম। ভারতীয় জনতা পার্টি খুব ভাল কাজ করেছে। তাঁরা আমাকে শিকার করলেন।”

০৪ ২০
What is Ration Distribution Case, how Jyotipriya Mallick got involved in this case by ED

ইডি সূত্রে জানা যায়, আগেই এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া জ্যোতিপ্রিয়-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মন্ত্রীর নাম উঠে আসে। জ্যোতিপ্রিয় খাদ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে রেশনের খাদ্যসামগ্রী নিয়ে দুর্নীতি চলত বলে ইডির ওই সূত্রের খবর। ওই সূত্রের আরও খবর, এই মামলায় মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে জ্যোতিপ্রিয় এবং বাকিবুরকে।

০৫ ২০
What is Ration Distribution Case, how Jyotipriya Mallick got involved in this case by ED

কী ভাবে রেশনের আটা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে, তার একটা ধারণা মিলেছে ইডির একটি নথি থেকে। বৃহস্পতিবার জ্যোতিপ্রিয়দের জেরার নেপথ্যেও সেই নথির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

০৬ ২০
কী ভাবে চলত দুর্নীতি? ইডির নথিতে বলা হয়েছে, মিল মালিকেরা সরকারি অর্থ মিলিয়ে নিতেন কড়ায়-গণ্ডায়। কিন্তু তার বিনিময়ে সরবরাহকৃত রেশনের হিসাব মিলত না।

কী ভাবে চলত দুর্নীতি? ইডির নথিতে বলা হয়েছে, মিল মালিকেরা সরকারি অর্থ মিলিয়ে নিতেন কড়ায়-গণ্ডায়। কিন্তু তার বিনিময়ে সরবরাহকৃত রেশনের হিসাব মিলত না।

০৭ ২০
প্রতি ১ কেজি আটার দামে অন্তত ২০০ গ্রাম কম আটা দিতেন আটাকলের মালিকেরা। বাংলার রেশন বণ্টন মামলার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য উঠে এসেছে ইডির হাতে।

প্রতি ১ কেজি আটার দামে অন্তত ২০০ গ্রাম কম আটা দিতেন আটাকলের মালিকেরা। বাংলার রেশন বণ্টন মামলার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য উঠে এসেছে ইডির হাতে।

০৮ ২০
চাল এবং আটাকলের মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই ইডি জানতে পারে যে, কমিয়ে নেওয়া আটার পরিমাণ কখনও কখনও ৪০০ গ্রামও হত। অর্থাৎ ১ কেজি আটার মূল্যে সরকারি সরবরাহকারীরা হাতে পেতেন ৬০০ গ্রাম আটা।

চাল এবং আটাকলের মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই ইডি জানতে পারে যে, কমিয়ে নেওয়া আটার পরিমাণ কখনও কখনও ৪০০ গ্রামও হত। অর্থাৎ ১ কেজি আটার মূল্যে সরকারি সরবরাহকারীরা হাতে পেতেন ৬০০ গ্রাম আটা।

০৯ ২০
তবে এই গরমিলের কথা জানত দু’পক্ষই। পুরোটাই চলত মিলমালিক এবং সরকারি সরবরাহকারীদের বোঝাপড়ায়। সঠিক দামে কম আটা বুঝে নেওয়ার ভাল দাম পেতেন রেশনের সরকারি সরবরাহকারীরা।

তবে এই গরমিলের কথা জানত দু’পক্ষই। পুরোটাই চলত মিলমালিক এবং সরকারি সরবরাহকারীদের বোঝাপড়ায়। সঠিক দামে কম আটা বুঝে নেওয়ার ভাল দাম পেতেন রেশনের সরকারি সরবরাহকারীরা।

১০ ২০
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে এসে রাজ্যের ‘মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী বাকিবুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছিলেন ইডির তদন্তকারীরা। পরে তাঁর কাছ থেকেই নদিয়ার আটা এবং চালকল ‘মেজার্স এনপিজি রাইস মিল প্রাইভেট লিমিটেডে’র খোঁজ মেলে।

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে এসে রাজ্যের ‘মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী বাকিবুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেছিলেন ইডির তদন্তকারীরা। পরে তাঁর কাছ থেকেই নদিয়ার আটা এবং চালকল ‘মেজার্স এনপিজি রাইস মিল প্রাইভেট লিমিটেডে’র খোঁজ মেলে।

১১ ২০
ইডি জানতে পারে, ওই চাল এবং আটাকল সংস্থার ডিরেক্টর বাকিবুরই। এর পরে ওই সংস্থার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে দুর্নীতির রকমফের জানতে পারে ইডি। কিন্তু এই একই তথ্য বাকিবুরের কাছ থেকে যাচাই করতে গিয়ে ইডি কর্তারা দেখেন, সরকারি রেশন সরানো নিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন বাকিবুর।

ইডি জানতে পারে, ওই চাল এবং আটাকল সংস্থার ডিরেক্টর বাকিবুরই। এর পরে ওই সংস্থার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে দুর্নীতির রকমফের জানতে পারে ইডি। কিন্তু এই একই তথ্য বাকিবুরের কাছ থেকে যাচাই করতে গিয়ে ইডি কর্তারা দেখেন, সরকারি রেশন সরানো নিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন বাকিবুর।

১২ ২০
তবে আটা যে সরানো হত, তা স্বীকার করে নেন বাকিবুর। ইডি সূত্রে খবর, বাকিবুর তাদের জানান, আটা সরানো হলেও তা ২০-৪০ শতাংশ হারে হত না। বাকিবুরের কথায় বড়জোর ৫-১০ শতাংশ আটা সরানো হত। অর্থাৎ প্রতি এক কেজিতে বড়জোর ১০০ গ্রাম হারে।

তবে আটা যে সরানো হত, তা স্বীকার করে নেন বাকিবুর। ইডি সূত্রে খবর, বাকিবুর তাদের জানান, আটা সরানো হলেও তা ২০-৪০ শতাংশ হারে হত না। বাকিবুরের কথায় বড়জোর ৫-১০ শতাংশ আটা সরানো হত। অর্থাৎ প্রতি এক কেজিতে বড়জোর ১০০ গ্রাম হারে।

১৩ ২০
রেশনের কয়েকশো কেজি আটা থেকে এ ভাবে আটা সরিয়ে, তা বাজারজাত করে যে অর্থ আসত, সেই ‘লাভের’ টাকা ৮০:২০ অনুপাতে ভাগ হত সরবরাহকারী এবং মিল মালিকদের মধ্যে।

রেশনের কয়েকশো কেজি আটা থেকে এ ভাবে আটা সরিয়ে, তা বাজারজাত করে যে অর্থ আসত, সেই ‘লাভের’ টাকা ৮০:২০ অনুপাতে ভাগ হত সরবরাহকারী এবং মিল মালিকদের মধ্যে।

১৪ ২০
বাকিবুরের কথায়, তাঁর মতো মিল মালিকেরা পেতেন ওই অর্থের ২০ শতাংশ। আর সিংহভাগ অর্থাৎ ৮০ শতাংশ লাভ যেত রেশন সরবরাহকারী এবং এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত অন্য মধ্যস্থতাকারীদের ভাঁড়ারে।

বাকিবুরের কথায়, তাঁর মতো মিল মালিকেরা পেতেন ওই অর্থের ২০ শতাংশ। আর সিংহভাগ অর্থাৎ ৮০ শতাংশ লাভ যেত রেশন সরবরাহকারী এবং এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত অন্য মধ্যস্থতাকারীদের ভাঁড়ারে।

১৫ ২০
ইডি সূত্রে খবর, তাদের তল্লাশি অভিযানে যে সমস্ত তথ্য হাতে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, কোটি কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে সরকারি রেশন সরবরাহকারীদের অ্যাকাউন্টে। ফলে মিলের ম্যানেজার এবং মিল মালিকের সঙ্গে বাকিবুরের বক্তব্য না মেলায় ধন্দে পড়েছে ইডি।

ইডি সূত্রে খবর, তাদের তল্লাশি অভিযানে যে সমস্ত তথ্য হাতে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, কোটি কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে সরকারি রেশন সরবরাহকারীদের অ্যাকাউন্টে। ফলে মিলের ম্যানেজার এবং মিল মালিকের সঙ্গে বাকিবুরের বক্তব্য না মেলায় ধন্দে পড়েছে ইডি।

১৬ ২০
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় এর আগে বাকিবুরের কলকাতার কৈখালির ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল ইডি। বাকিবুরের পাশাপাশি তাঁর শ্যালক অভিষেক বিশ্বাসের চিনার পার্কের বাড়িতে গিয়েও তল্লাশি চালানো হয়। ইডি সূত্রে জানা যায়, তল্লাশির পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় অভিষেককে।

রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় এর আগে বাকিবুরের কলকাতার কৈখালির ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল ইডি। বাকিবুরের পাশাপাশি তাঁর শ্যালক অভিষেক বিশ্বাসের চিনার পার্কের বাড়িতে গিয়েও তল্লাশি চালানো হয়। ইডি সূত্রে জানা যায়, তল্লাশির পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় অভিষেককে।

১৭ ২০
এই মামলার তদন্তে নেমে তারও আগে ইডি গিয়েছিল নদিয়ার বিভিন্ন রেশন দোকান এবং দোকানের মালিকের বাড়িতে। একই দিনে সল্টলেক এবং নিউ টাউনের অনেকগুলি জায়গাতেও তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি।

এই মামলার তদন্তে নেমে তারও আগে ইডি গিয়েছিল নদিয়ার বিভিন্ন রেশন দোকান এবং দোকানের মালিকের বাড়িতে। একই দিনে সল্টলেক এবং নিউ টাউনের অনেকগুলি জায়গাতেও তল্লাশি অভিযান চালায় ইডি।

১৮ ২০
ইডি সূত্রে জানা যায়, বাকিবুরের কৈখালির ফ্ল্যাট থেকে ১০০-র বেশি সরকারি দফতরের সিলমোহর (স্ট্যাম্প) মিলেছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে এ-ও জানা যায় যে, খাদ্য সরবরাহ সংক্রান্ত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ১০৯টি স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে তাঁর ফ্ল্যাট থেকে।

ইডি সূত্রে জানা যায়, বাকিবুরের কৈখালির ফ্ল্যাট থেকে ১০০-র বেশি সরকারি দফতরের সিলমোহর (স্ট্যাম্প) মিলেছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে এ-ও জানা যায় যে, খাদ্য সরবরাহ সংক্রান্ত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ১০৯টি স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে তাঁর ফ্ল্যাট থেকে।

১৯ ২০
গত ১৪ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয় বাকিবুরকে। ইডি সূত্রে জানা যায়, বাকিবুরের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া নথি মোতাবেক বাকিবুরের বিভিন্ন সংস্থায় ৫০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ ঢুকেছে। একাধিক হোটেল, রিসর্ট, পানশালা রয়েছে এই প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর। পাশাপাশি রয়েছে বেশ কয়েকটি রাইস মিলও।

গত ১৪ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয় বাকিবুরকে। ইডি সূত্রে জানা যায়, বাকিবুরের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া নথি মোতাবেক বাকিবুরের বিভিন্ন সংস্থায় ৫০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ ঢুকেছে। একাধিক হোটেল, রিসর্ট, পানশালা রয়েছে এই প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর। পাশাপাশি রয়েছে বেশ কয়েকটি রাইস মিলও।

২০ ২০
বাংলার বাইরে আরও তিনটি রাজ্যে বাকিবুরের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ রয়েছে। বছর তিনেক আগে খাদ্যবীজের দুর্নীতির সূত্রে প্রথম বাকিবুরের নাম প্রকাশ্যে এসেছিল। সেই দুর্নীতিতে উদ্ধার হওয়া খাদ্যবীজের বস্তায় বাকিবুরের সংস্থার নাম ছিল বলে খবর। সে কথাও আদালতে জানিয়েছে ইডি।

বাংলার বাইরে আরও তিনটি রাজ্যে বাকিবুরের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ রয়েছে। বছর তিনেক আগে খাদ্যবীজের দুর্নীতির সূত্রে প্রথম বাকিবুরের নাম প্রকাশ্যে এসেছিল। সেই দুর্নীতিতে উদ্ধার হওয়া খাদ্যবীজের বস্তায় বাকিবুরের সংস্থার নাম ছিল বলে খবর। সে কথাও আদালতে জানিয়েছে ইডি।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE