Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
Most powerful vacuum bomb

বাতাসের ছোঁয়া পেলেই জেগে ওঠে ‘দৈত্য’! আগুনের গোলায় ছারখার হয় আস্ত শহর, কী সেই অ-পরমাণু অস্ত্র?

থার্মোবারিক অস্ত্র বা ভ্যাকুয়াম বোমার মধ্যে যে জ্বালানি থাকে, তা বাতাসের সংস্পর্শে আসামাত্রই প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। বোমার আঘাতে চোখের নিমেষে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে শত্রু দেশের একাধিক শহর।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:৪৮
Share: Save:
০১ ১৭
Most powerful vacuum bomb

গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র। বোমা ছুড়লে চোখের নিমেষে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে শত্রু দেশের একাধিক শহর। ১৯৪৯ সালের জেনিভা চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধক্ষেত্রে এই বিশেষ বোমাটির ব্যবহার নিষিদ্ধ। কারণ অন্য বিস্ফোরকের থেকে এটি বহু গুণ বেশি বিধ্বংসী। পরমাণু বোমার ঠিক পরেই স্থান রয়েছে বিধ্বংসী এই হাতিয়ারটির।

০২ ১৭
Most powerful vacuum bomb

সবচেয়ে শক্তিশালী অ-পরমাণু অস্ত্রের তকমা জুড়েছে এই নিষিদ্ধ যুদ্ধাস্ত্রটির নামের সঙ্গে। সমরাস্ত্র বিশারদদের মতে, ভ্যাকুয়াম বোমা বা থার্মোবারিক বোমাই হল অ-পরমাণু অস্ত্রগুলির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী। এর প্রয়োগের ফলাফল পারমাণবিক বোমার মতোই ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।

০৩ ১৭
Most powerful vacuum bomb

থার্মোবারিক অস্ত্র বা ভ্যাকুয়াম বোমার মধ্যে যে জ্বালানি থাকে, তা বাতাসের সংস্পর্শে আসামাত্রই প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। অস্ত্রটিতে ফুয়েল-এয়ার এক্সপ্লোসিভস বা এফএই নামে যে বিস্ফোরক থাকে, তা ব্ল্যাক পাউডারের মতোই। এতে ২৫ শতাংশ জ্বালানি এবং ৭৫ শতাংশ অক্সিডাইজ়ার থাকে। এই বোমা ছোড়ার পর তা বাতাস থেকে অক্সিজেন শুষে নিতে শুরু করে। বিস্ফোরণ তরঙ্গটি একটি প্রচলিত বোমার বিস্ফোরকের চেয়ে বহু গুণ বেশি সময় ধরে স্থায়ী হতে পারে।

০৪ ১৭
Most powerful vacuum bomb

মানবদেহকে বাষ্পে পরিণত করার ক্ষমতা রয়েছে অ-পারমাণবিক এই বোমার। বিস্ফোরণের প্রবল তরঙ্গের চাপেই তা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। ওই চাপে ফুসফুস ফেটে যায়। বোমাটিতে কোনও রকমের বিস্ফোরণ না ঘটলেও তা হঠাৎই জ্বলে উঠে সামনে থাকা কোনও ব্যক্তিকে অগ্নিদগ্ধ করে দিতে পারে।

০৫ ১৭
Most powerful vacuum bomb

সংশ্লিষ্ট বোমাটি বাতাসে ভাসমান কণা বা অ্যারোসলের সংস্পর্শে এলে তা থেকে বিশাল আগুনের গোলা বেরিয়ে আসে। দীর্ঘ চাপে তরঙ্গ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে বাতাসের অক্সিজেন গ্রহণ করে। অন্যান্য বোমার তুলনায় বাতাসে বিস্ফোরণের বেশি ঢেউ খেলিয়ে দেয় এটি। চোখের পলকে ছারখার করে দেয় স্থানটিকে। বদ্ধ কোনও জায়গা, যেমন বাঙ্কার এবং সুড়ঙ্গ উড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই হাতিয়ারটিকে আদর্শ বলে মনে করেন সাবেক সেনাকর্তাদের একাংশ।

০৬ ১৭
Most powerful vacuum bomb

রাশিয়া-ইউক্রেনে যুদ্ধ চলাকালীন, মস্কোর বিরুদ্ধে এই বোমা ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল একাধিক বার। ইউক্রেনের দাবি ছিল, নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করেছে পুতিনবাহিনী। রাশিয়ার এই ভ্যাকুয়াম বা থার্মোবারিক বোমা দিয়ে হামলার লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ, এমনটাই দাবি করে সুর চড়ায় কিভের মানবাধিকার সংগঠনগুলি।

০৭ ১৭
Most powerful vacuum bomb

উৎক্ষেপণকারী যন্ত্র বা রকেট লঞ্চারের সাহায্যে এই বোমা ছুড়ে শত্রু দেশকে ঘায়েল করা হয়। আবার যুদ্ধবিমান থেকেও এটি ফেলা যায়। মারাত্মক বিধ্বংসী ক্ষমতা থাকার জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা সত্ত্বেও বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ তাদের আধুনিক সমরাস্ত্র ও পরমাণু হাতিয়ারের পাশাপাশি থার্মোবারিক বোমাকে জায়গা দিয়েছে অস্ত্রভান্ডারে।

০৮ ১৭
Most powerful vacuum bomb

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে থার্মোবোরিক বোমা নিক্ষেপে অভিযুক্ত রাশিয়ার কাছে রয়েছে এফওএবি বা ফোয়াব (ফাদার অফ অল বম্ব)। এখনও পর্যন্ত পরীক্ষিত সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক থার্মোবারিক অস্ত্র বলে দাবি করা হয় এটিকে। বোমাটিকে বিমান থেকে নিক্ষেপ করতে হয়। বোমায় থাকা দাহ্য বস্তু অ্যারোসলের সংস্পর্শে আসামাত্রই কয়েকশো মিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে আগুনের গোলা তৈরি করে। প্রচলিত বিস্ফোরকের তুলনায় দ্বিগুণ তাপমাত্রা উৎপন্ন হয়।

০৯ ১৭
Most powerful vacuum bomb

২০০৭ সালে বিস্ফোরণ ঘটানো এফওএবি ৪৪ টন টিএনটি সমতুল্য বিস্ফোরণ উৎপন্ন করে বলে জানা গিয়েছে। এই বোমাটি আমেরিকার ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স এয়ার ব্লাস্ট বা এমওএবি-এর চেয়ে চার গুণ বেশি ক্ষমতাধর বলে দাবি তোলা হলেও তার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবুও থার্মোবারিক বোমার শক্তি পরীক্ষা করতে এফওএবিকে মানদণ্ড হিসাবে ধরা হয় এখনও।

১০ ১৭
Most powerful vacuum bomb

‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ থার্মোবারিক বা ভ্যাকুয়াম বোমা তৈরির ক্ষেত্রে রাশিয়া এগিয়ে থাকলেও আমেরিকা ছিল এই ধরনের বোমা তৈরির পথিকৃৎ। ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স এয়ার ব্লাস্ট বোমাটি হল এই ধরনের বোমার সবচেয়ে প্রচলিত রূপ। এর ওজন ১০ হাজার কেজির মতো। ৮,১৬৪ কেজির মতো বিস্ফোরক থাকে এর মধ্যে।

১১ ১৭
Most powerful vacuum bomb

ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স এয়ার ব্লাস্ট সংক্ষেপে মোয়াব। টিএনটি বিস্ফোরকের তুলনায় ১১ গুণ শক্তিশালী এই বোমা। এর ধ্বংসাত্মক প্রভাব প্রায় আড়াই কিলোমিটার জুড়ে পড়ে। বোমাটি পরখ করার পর মাশরুমের মতো দেখতে মেঘের সৃষ্টি হয়েছিল, যা প্রায় ৩২ কিমি দূর থেকে দেখা গিয়েছিল।

১২ ১৭
Most powerful vacuum bomb

আমেরিকার দাবি ছিল এটাই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অ-পারমাণবিক বোমা। কিন্তু থার্মোবারিক বোমা ফোয়াব পরীক্ষার পর রাশিয়া দাবি করে মোয়াব-এর থেকে এটি চার গুণ বেশি শক্তিশালী।

১৩ ১৭
Most powerful vacuum bomb

ফোয়াব ও মোয়াব ছাড়াও রাশিয়ার হাতে রয়েছে টিওএস ৩ ড্রাগন নামের থার্মোবারিক রকেট সিস্টেম। এটি বিখ্যাত রুশ রকেট আর্টিলারি সিস্টেমের তৃতীয় সংস্করণ। একটি টি-৭২ ট্যাঙ্কের উপর থার্মোবারিক বোমাগুলি বসানো থাকে। ২৪-ব্যারেলের মাল্টিপল রকেট লঞ্চার ব্যবহার করে অত্যন্ত শক্তিশালী থার্মোবারিক ওয়ারহেড-সহ রকেট নিক্ষেপ করতে পারে এই সিস্টেমটি। প্রতিটি রকেট একটি থার্মোবারিক ওয়ারহেড বহন করে।

১৪ ১৭
Most powerful vacuum bomb

রাশিয়া আমেরিকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চিনও মজুত করেছে মারাত্মক ভ্যাকুয়াম বোমা। ওয়ারহেড প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে চিন। স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে থার্মোবারিক বোমাগুলিকে। এই ওয়ারহেডগুলিতে পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়াই বাঙ্কার এবং বিমানঘাঁটি ধ্বংস করার নকশা করা হয়েছে।

১৫ ১৭
Most powerful vacuum bomb

থার্মোবারিক বোমাগুলিকে বহনযোগ্য করে তোলার জন্য এর একের পর এক উন্নত সংস্করণ উদ্ভাবন করছেন অস্ত্রনির্মাতারা। বোমাগুলিকে ক্ষুদ্র আকৃতি দেওয়া হয়েছে। তেমনই একটি আমেরিকার তৈরি এসএমএডব্লিইউ-এনই। বহনযোগ্য ও কাঁধে রেখে চালানো যায় এমন এক বহুমুখী অস্ত্র রাশিয়ার তৈরি আরপিও শমেল। জ্বালানি-বায়ু বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক আঘাতেই বাঙ্কার বা সুড়ঙ্গ ধ্বংস করতে সক্ষম এটি।

১৬ ১৭
Most powerful vacuum bomb

ভ্যাকুয়াম বোমায় প্রায় পুরোটাই জ্বালানিনির্ভর বিস্ফোরক হওয়ায় জলের তলায় বা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অধিক উচ্চতায় অথবা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় তা ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু, যুদ্ধের ময়দানে সুড়ঙ্গ কিংবা বাঙ্কারের মতো জায়গায় তা ঘাতক।

১৭ ১৭
Most powerful vacuum bomb

যুদ্ধের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ভিয়েতনামের যুদ্ধে এফএই-র মতো ভ্যাকুয়াম বোমার প্রয়োগ করার অভিযোগ উঠেছিল আমেরিকার বিরুদ্ধে। ২০০০ সালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর একটি রিপোর্টে এ কথা দাবি করা হয়। সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে রাশিয়ার কাছে তৃতীয় প্রজন্মের ভ্যাকুয়াম বোমার ওয়ারহেড (ক্ষেপণাস্ত্রের সামনের দিকের অংশ, যাতে বিস্ফোরক বোঝাই করা থাকে) রয়েছে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy