Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
Zimbabwe elephant culling

খরায় জর্জরিত দেশ, খেতে পাচ্ছে না মানুষ, হাতি মেরে জনগণের হাতে মাংস তুলে দেবে আফ্রিকার দেশ!

প্রাণ নেওয়া হবে ৫০টি হাতির। হাতির সংখ্যা কমাতে ও দেশের মানুষের পাতে খাবার জোগাতে বাধ্য হয়ে জ়িম্বাবোয়ে সরকার এই পদক্ষেপ করছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশব্যাপী প্রবল খরার কারণেও ২০০টি হাতি হত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এই দেশে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৫ ১২:১৮
Share: Save:
০১ ১৬
elephant

বন্য হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘাত নতুন কিছু নয়। ভারত-সহ বিশ্বের যে সমস্ত দেশ হাতির বাসভূমি, সেখানে প্রায়ই জনবসতির মধ্যে হাতির অনুপ্রবেশের কথা শোনা যায়। আবার বন্যপ্রাণ ধ্বংস করে হাতির ডেরা থেকে তাদের উৎখাত করার ফলেও মানুষ ও পশুর সংঘাত উত্তরোত্তর বাড়ছে। উভয় পক্ষেরই মঙ্গল যাতে হয় সেই রকম এক সমাধানের প্রচেষ্টাও করা হয়েছে।

০২ ১৬
elephant

পরিবেশ ও বন্যপ্রাণের মধ্যে সামঞ্জস্য বিগড়ে গেলে তা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায় সরকারের। হাতির সংখ্যা বেড়ে গেল খাদ্য ও বাসস্থানের সঙ্কট দেখা দিতে শুরু করে হাতি সমাজেই। ফলশ্রুতি, ব্যাপক শস্যহানি ও জনবসতি জুড়ে হাতির অনুপ্রবেশ। জ়িম্বাবোয়েতে সম্প্রতি আবার হাতির সংখ্যাবৃদ্ধির সেই সমস্যা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

০৩ ১৬
elephant

দক্ষিণ জ়িম্বাবোয়ের সেভ ভ্যালি কনজ়ারভেন্সি নামের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে হাতিদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্য ও জলের অভাবের কারণে এই সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়েছে। খাবারের খোঁজে, জলের সন্ধান করতে করতে হাতির পাল হানা দিচ্ছে বসতি এলাকায়। অতিরিক্ত হাতি বেড়ে যাওয়ায় তাদের আবাসস্থলের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে এবং মানুষ-বন্যপ্রাণী সংঘাতের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

০৪ ১৬
elephant

এ ছাড়াও খরা-পীড়িত দক্ষিণ আফ্রিকার দেশটিতে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং ক্রমবর্ধমান মানুষ-বন্যপ্রাণী সংঘাত নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের বন দফতর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে সংরক্ষিত অঞ্চলটিতে কমপক্ষে ৫০টি হাতি হত্যার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশব্যাপী প্রবল খরার কারণেও ২০০টি হাতি হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জ়িম্বাবোয়ে সরকার।

০৫ ১৬
elephant

পরিবেশগত চাপ কমানোর জন্য হাতি নিধন একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, এই মর্মে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে জ়িম্বাবোয়ে পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (জিমপার্কস)। তাদের দাবি, বর্তমানে এই সংরক্ষিত এলাকায় প্রায় ২ হাজার ৫৫০টি হাতি রয়েছে। অথচ এই সংরক্ষিত অঞ্চলটিতে ৮০০টির বেশি হাতি রাখা সম্ভব নয়।

০৬ ১৬
elephant

হাতির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সংরক্ষণাগারটি গত পাঁচ বছরে ইতিমধ্যেই ২০০টি হাতিকে দেশের অন্যান্য সংরক্ষিত অঞ্চলে স্থানান্তরিত করেছে। আবাসস্থলের ধারণক্ষমতার চেয়ে তিন গুণ বেশি হাতি রয়েছে বলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। কিন্তু কর্তাদের দাবি, বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য কেবল হাতিদের স্থানান্তরই যথেষ্ট নয়।

০৭ ১৬
elephant

দক্ষিণ আফ্রিকার এই দেশটিতে আনুমানিক ৮৪ হাজার হাতি বাস করে। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের সঙ্গে যুক্ত কর্তা ও পরিবেশবিদেরা দীর্ঘ দিন ধরে সতর্ক করে আসছেন যে দেশের সংরক্ষিত উদ্যান এবং সংরক্ষিত অঞ্চলগুলিতে কেবল ৫৫ হাজার হাতির ভরণপোষণ করা যাবে। সংখ্যাবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাতির খোরাক জোগাতে গিয়ে প্রভূত ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে খরাপীড়িত এই দেশটিকে।

০৮ ১৬
elephant

দেশটিতে খুবই কম বৃষ্টি হয়েছে গত বছর থেকে। ভয়াবহ খরার মুখে পড়েছেন দেশের জনগণ। খাদ্যের ভাঁড়ারেও টান পড়েছে। গত বছর থেকেই আফ্রিকার অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের মতো খরার সঙ্গে লড়াই করে আসছে জ়িম্বাবোয়ের জনগণ। বৃষ্টির আকাল দেখা দেওয়ায় দেশ জুড়ে চাষবাসের অবস্থা সঙ্গিন। আর সেই কারণে দেশের মজুত শস্যের ভান্ডারও প্রায় ফুরিয়ে যায়। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে খাদ্যসঙ্কট এতটাই প্রবল হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে ২০০টি হাতি মেরে তাদের মাংস দিয়ে ক্ষুধা মেটানো হয়েছিল দেশবাসীর।

০৯ ১৬
একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে চলতি বছরেও। জনগণের একটা বড় অংশই যেখানে দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পারছেন না, সেখানে হাতির খাবার জোগানো মুখের কথা নয়। তার উপর হাতির উপদ্রবের ফলে নষ্ট হচ্ছে সামান্য ফসলটুকুও। হাতির সংখ্যা কমাতে তাই তাদের মেরে ফেলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। হাতি মেরে দেশবাসীর মুখে খাবার তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জ়িম্বাবোয়ে সরকার।

একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে চলতি বছরেও। জনগণের একটা বড় অংশই যেখানে দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পারছেন না, সেখানে হাতির খাবার জোগানো মুখের কথা নয়। তার উপর হাতির উপদ্রবের ফলে নষ্ট হচ্ছে সামান্য ফসলটুকুও। হাতির সংখ্যা কমাতে তাই তাদের মেরে ফেলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। হাতি মেরে দেশবাসীর মুখে খাবার তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জ়িম্বাবোয়ে সরকার।

১০ ১৬
elephant

৫০টি হাতি মেরে তাদের মাংস শুকিয়ে তা জনগণের হাতে তুলে দেবে বলে সরকার ঘোষণা করেছে। মরা হাতির দাঁতগুলি সংরক্ষণ করে সরকারি সম্পত্তি হিসাবে গণ্য করা হবে। যদিও বিশ্বব্যাপী হাতির দাঁতের কেনাবেচা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে শুধুমাত্র জ়িম্বাবোয়েতেই ৫ হাজার ২০০ কোটিরও বেশি টাকার হাতির দাঁত মজুত রয়েছে।

১১ ১৬
elephant

হাতির দাঁত বিক্রি করে জ়িম্বাবোয়ে সরকার বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার ভরানোর জন্য আন্তর্জাতিক মহলে বহু দিন ধরে তদ্বির করে আসছে। হাতির দাঁতের ব্যবসা নিষিদ্ধ হওয়ায় সরকারি ভাবে তা বেচার উপায় নেই। ‘আইভরি’ তহবিল থেকে অর্থ সংগ্রহ করেও যে তা হাতিদের সংরক্ষণের কাজে লাগানো যাবে সেই পথও বন্ধ সরকারের।

১২ ১৬
elephant

জ়িম্বাবোয়েতে হাতির মাংস বিতরণ নতুন কোনও প্রথা নয়। অতীতেও খাদ্যের ঘাটতি হলে প্রাণীদের মেরে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে মাংস ভাগাভাগি করে দেওয়া হত। এল নিনোর প্রভাবে জলবায়ু পরিবর্তন এবং কম বৃষ্টিপাতের কারণে আফ্রিকার এই দেশটিতে খাদ্যসঙ্কট তীব্র। তাই সরকার আবারও এই বিকল্পের দিকে ঝুঁকছে।

১৩ ১৬
zebra

১৯৮৮ সালে প্রথম বার দেশটিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে হাতি মারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। জ়িম্বাবোয়ের মতো আরও একটি দেশে খাদ্যসঙ্কট মোকাবিলার জন্যে পশুর মাংস দিয়ে জনতার ক্ষুধানিবৃত্তি করা হয়। দেশটি নামিবিয়া। গত বছরেরই সেপ্টেম্বর মাসে দেশের ৭০০-রও বেশি বড় পশু হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা। সেই তালিকায় ছিল হাতি, জলহস্তী, মহিষ থেকে শুরু করে জ়েব্রা, ইম্পালা।

১৪ ১৬
পশুনিধনের আগে নামিবিয়ার পরিবেশ, বন ও পর্যটন মন্ত্রক একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করে। তাতে বলা হয়েছিল, ৩০টি জলহস্তী, ৬০টি মহিষ, ৫০টি ইম্পালা (হরিণ জাতীয় প্রাণী), ১০০টি নীল ওয়াইল্ডার বিস্ট, ৩০০টি জ়েব্রা, ৮৩টি হাতি এবং ১০০টি ইল্যান্ড (হরিণ জাতীয় প্রাণী)— মোট ৭২৩টি প্রাণীকে মারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাণীগুলিকে জাতীয় উদ্যান এবং আশপাশের এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল।

পশুনিধনের আগে নামিবিয়ার পরিবেশ, বন ও পর্যটন মন্ত্রক একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করে। তাতে বলা হয়েছিল, ৩০টি জলহস্তী, ৬০টি মহিষ, ৫০টি ইম্পালা (হরিণ জাতীয় প্রাণী), ১০০টি নীল ওয়াইল্ডার বিস্ট, ৩০০টি জ়েব্রা, ৮৩টি হাতি এবং ১০০টি ইল্যান্ড (হরিণ জাতীয় প্রাণী)— মোট ৭২৩টি প্রাণীকে মারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাণীগুলিকে জাতীয় উদ্যান এবং আশপাশের এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল।

১৫ ১৬
শিকার করে তাদের মাংস ক্ষুধার্ত দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল নামিবিয়ার পরিবেশ মন্ত্রক। কারণ সেখানেও তৈরি হয়েছে ভয়ঙ্কর খরা পরিস্থিতি। এল নিনোর প্রভাবে আফ্রিকার একাধিক দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে। পুড়ে খাক হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে খেতের ফসল।

শিকার করে তাদের মাংস ক্ষুধার্ত দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল নামিবিয়ার পরিবেশ মন্ত্রক। কারণ সেখানেও তৈরি হয়েছে ভয়ঙ্কর খরা পরিস্থিতি। এল নিনোর প্রভাবে আফ্রিকার একাধিক দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে। পুড়ে খাক হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে খেতের ফসল।

১৬ ১৬
elephant

জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে আফ্রিকার দেশগুলিতে এত ভয়াবহ খরার উদাহরণ ইতিপূর্বে মেলেনি। ভয়াবহ খরার প্রকোপ পড়েছে নামিবিয়া, জ়িম্বাবোয়ে, জ়াম্বিয়া এবং মালাউই-সহ আফ্রিকার অনেক দেশেই। আঞ্চলিক সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য জ়িম্বাবোয়ের রাজধানী হারারেতে বৈঠকে বসেছিলেন আফ্রিকার ১৬টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা। সেখানেও খাদ্যসঙ্কটের বিষয়টি তীব্র ভাবে উঠে আসে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy