Advertisement
E-Paper

ক্যামেরাদারি

শুধু কাপড় ছাড়ার ট্রায়াল রুমে নয়, নজরদারি চলেছে অফিস, ইস্কুল, ক্লাব, হোটেল, সর্বত্র। সিসিটিভি আর তার দোসরদের দাপটে, মানুষের সব ব্যক্তিগত মুহূর্তই এখন খুল্লমখুল্লা।এক জন খানদানি পাগলের কথা বলি। সুপারিলাল। রাতে বাড়ি ফেরার সময় তিনি একটা পাঁচ সেলের আধমণি টর্চ তাক করে থাকতেন পিছন দিকে। পিছিয়ে যাওয়া টর্চলাইট দেখে নতুন লোক ভিরমি খেলেও, পুরনো লোকে জানত সুপারিলাল বাড়ি ফিরছে। এ বিষয়ে সুপারিলালের যুক্তিটা ছিল জোরদার, যেমন হয়ে থাকে তার-কাটা মানুষজনের। শোন, সামনে বিপদ এলে, তা সে সাপ-খোপ-বাঘ-পুলিশ-ভূত-পিশাচ যাই হোক না কেন, তাকে তোয়াক্কা করবি না।

বরুণ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০৪
ছবি: সুমন চৌধুরী।

ছবি: সুমন চৌধুরী।

এক জন খানদানি পাগলের কথা বলি। সুপারিলাল। রাতে বাড়ি ফেরার সময় তিনি একটা পাঁচ সেলের আধমণি টর্চ তাক করে থাকতেন পিছন দিকে। পিছিয়ে যাওয়া টর্চলাইট দেখে নতুন লোক ভিরমি খেলেও, পুরনো লোকে জানত সুপারিলাল বাড়ি ফিরছে। এ বিষয়ে সুপারিলালের যুক্তিটা ছিল জোরদার, যেমন হয়ে থাকে তার-কাটা মানুষজনের। শোন, সামনে বিপদ এলে, তা সে সাপ-খোপ-বাঘ-পুলিশ-ভূত-পিশাচ যাই হোক না কেন, তাকে তোয়াক্কা করবি না। আসল বিপদ তোর ওপর নজর রাখে পিছন থেকে। ওই জন্যেই চর্চটাকে পিছনবাগে বাগিয়ে রাখি! সুপারিলাল পুলিশ আর জমিদারের চর পর্যন্ত দেখেছিলেন। তারা পিছন থেকেই নজর রাখত। কিন্তু সিসিটিভি আসার আগেই সাধনোচিত ধামে গমন করায় তাঁকে সিসিটিভি দেখতে হয়নি। নজরের আড়ালে থেকে যে কী সব বিচিত্র পোজিশন থেকে নজর রাখা যায় তা তিনি জানতে পারেননি। শক্তিমান মাত্রেই জানেন জবরদস্ত নজরদারি ছাড়া শক্তি ধরে রাখা যায় না। লোক লাগিল বিস্তর এবং তাদের উপর নজর রাখিবার জন্য লোক লাগিল আরও বিস্তর।— সেই রবিবাবুর ‘তোতাকাহিনী’-তেই এত, তা হলে এই কালে কত? বহু রূপে শুধু সম্মুখে নয়, ঊর্ধ্ব, অধঃ, ঈশান, অগ্নি— সর্বত্রই নজরদারি সমানে চলিতেছে।

এই সে দিন পর্যন্ত লুকিয়ে নজর রাখা বলতে বাঙালির গেরস্ত কালচারস্মৃতিতে প্রথমেই আসত ফুলশয্যা। সেখানে উঁকি আছে, ঝুঁকিও যে নেই তা নয়, তবে ত্রাস নেই। ফ্যাতাড়ুকুলতিলক মদন তার সদ্য স্যাঙাত ডি এস-কে উড়ুক্কুপনায় দীক্ষিত করেই বেডরুম সিেন উঁকিঝুঁকিতে প্ররোচিত করে। সেটাও নির্বিষ ফ্যাতাড়ুগিরির বেশি কিছু মনে হয় না। তবে এই আড়ালের মোড়লিতে বিষ ছিল অনেক কাল ধরেই। আড়াল থেকে পুকুরঘাটে বা স্নানঘরে পড়শি মেয়ের ছবি তুলে তার বিয়েতে ভাংচি আর সম্ভব হলে দীর্ঘমেয়াদি যৌনশোষণ— গোপনীয়তার এই সব সওদা করা মহাজন সংখ্যায় খুব কম ছিলেন না। তবে প্রযুক্তি তাঁদের হাতে নৈবেদ্যর নাড়ুর মতো মারণাস্ত্র তুলে দেয়নি। নিরাপত্তার সোনার হরিণ চেয়ে শোওয়ার ঘরে ক্যামেরা গাঁথলে গৃহশিক্ষিকার মারণমার ধরা পড়ে যায় ঠিকই, সাজাও হয় দোষীর।

কিন্তু একই দোকান থেকে কেনা ওই একই মডেলের ক্যামেরাই হয়তো লাগানো থাকে কোনও ইকো-ফ্রেন্ডলি রিসর্টের মধুচন্দ্রিমা কামরায়। সাদাসিধে এক দম্পতির প্রথম শারীরিক মেলামেশা অজান্তেই ছড়িয়ে যায় ইন্টারনেটে। অপরাধ ছাড়াই চরম শাস্তি পেয়ে যায় অপরাধীর সম্পূর্ণ অপরিচিত দুজন মানুষ। ব্যক্তির বিকার ফুলেফেঁপে ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কেলে চলে যায়। বাস্তবের মিস জম্মু আনারা গুপ্ত বা বাংলাদেশের মডেল প্রভা থেকে মহেশ ভট্ট প্রযোজিত বলিউডি বায়োস্কোপ ‘কলযুগ’-এর কিশোরী রেণুকা— নজরদারির বিকার-শিকারের দৃষ্টান্তের অভাব নেই।

নজরদারি এক চিরায়ত গোছের ব্যাপার হলেও সিসিটিভি এসে গোটা কনসেপ্টটাকেই একদম লাট খাইয়ে দিয়েছে। দুঁদে দারোগা থেকে ছোঁকছোঁকানির মন্ত্রসিদ্ধ লম্পট— যিনিই হোন না কেন, নজরদারিটা একটু আড়াল-আবডাল থেকেই করতেন। সিসিটিভি কিন্তু ও সবের ধার-টার ধারে না। দশাননের মতো গাঁক গাঁক করে একেবারে ঘোরতর আত্মপ্রচার করে জানিয়ে দেয়, সে আছে। অদ্ভুত এক নব প্যারাডক্স! এক বিদঘুটে প্রকাশ্য গোপন! গোপনীয়তার মালিকানাকেই এমন করে ঝেঁটিয়ে উদ্বাস্তু করে দিতে গেস্টাপো, সিয়া, কেজিবি কেউ পারেনি।

রাষ্ট্রীয় স্তরে গোপন নজরদারির ফল যে কী মারাত্মক হতে পারে, সর্বশক্তিমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন। তবু তিনি শুধু গোপন অডিয়ো-হানা চালিয়েছিলেন, ক্যামেরা লাগানোর সুযোগ পাননি। তাতেই একেবারে ইমপিচমেন্ট— হোয়াইট হাউস থেকে সোজা বানপ্রস্থের ফার্ম-হাউসে নির্বাসন। কিন্তু শত্রু থাকা রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রপ্রধান মাত্রেরই ভবিতব্য। আর শত্রুর হাত থেকে তো বাঁচতেই হবে। স্যাটেলাইট থেকে বুকপকেটে লুকনো ক্যামেরায় নানান ধরনের সতর্কতামূলক নজরদারি আর খবরদারি তাই চালিয়ে যেতেই হয় রাষ্ট্রকে। মুশকিল ঘটে এখানেই। পলিসি তো আর বাছবিচার করে না, সম্ভাব্য শত্রুর সঙ্গে সঙ্গে গোবেচারা, নির্ঝঞ্ঝাট নাগরিক নজরদারির চাপে আচমকাই এমন নিরাপত্তার গেরোয় বাঁধা পড়ে যে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে। অবশ্য শুধু নিরাপত্তার ব্যাপার নয়, সব কিছু সব সময় দেখতে পাওয়ার ইচ্ছে, প্রায় ভগবানের মতো সর্বত্র উপস্থিত থাকার একটা নেশা সমস্ত মানুষকে বোধহয় পেয়ে বসেছে। তাই গুগ্‌ল এমন ব্যবস্থা করেছে, ইচ্ছে করলে যে কোনও এলাকায় অমুক রাস্তায় এখন ক’টা গাড়ি চলেছে, ক’টা ফেরিওয়ালা আম বেচছে, এমনকী আপনার ঠিকানা ফটাফট টাইপ করলেই সেখানে ছাদে আপনি কাপড় মেলছেন না প্রতিবেশীর মেয়ের সঙ্গে খুনসুটি করছেন— সমস্তটা যে কোনও কম্পিউটারবাজের মাউস-দর্পণে! আর যদি ব্যাপারটাকে আর একটু প্রসারিত অর্থে ধরেন, আপনার ই-মেলগুলোর ওপরেও তো রাষ্ট্র নজর রাখছে, এবং এক দিন না এক দিন হয়তো স্নোডেনের সংখ্যা কমে আসবে আর সব লোকে স্বীকার করে নেবে, ব্যক্তির এই মৌলিক অধিকার হরণ রাষ্ট্রের অধিকারের মধ্যেই পড়ে!

তবে এ ব্যাপারে শুধু রাষ্ট্রকে অপবাদ দিলে ঘোর অন্যায় হবে। বিগ হোক আর স্মল, সব ধরনের বসেরাই নজরদারির নেশায় মশগুল। অফিস, ইস্কুল, মায় ক্লাবের দরজা থেকেই সকলকে ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ ইদানীং এ দেশেও বেশ চালু হয়ে গেছে। বেশ কিছু স্কুল গর্বের সঙ্গে জানায়, প্রত্যেকটা ক্লাসরুমে সিসিটিভি বসানো আছে। অফিসেও আজ বাদে কাল ডেকে পাঠানো হবে রেকর্ডিং সামনে রেখেই, আপনি তো মশায় ষোলো মিনিট করে টেবিলে মাথা রেখে ঘুমোন! মানুষের প্রাইভেসির ধারণা তার শোওয়ার ঘর আর সর্বত্রই যে অনায়াসে লঙ্ঘিত হতেই পারে, এটাকে অনেকেই এখন জীবনের আবশ্যিক অঙ্গ হিসেবে ধরে নিয়েছেন। আপনি হোটেলের করিডোরে আপনমনে নাক খুঁটতে খুঁটতে তাকিয়ে দেখুন, সিসিটিভি হামলে পড়ে আপনাকে ভেংচি কাটছে! পিছিয়ে নেই মিডিয়াও। আবডালের হাঁড়ি হাটে ভাঙার মেছো গন্ধে ইলেকট্রিক মিডিয়ারও জিভ লকলক করে। অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল ‘দ্য ট্রুম্যান শো’ নামের এক হলিউডি ছবি। নায়ক বেচারা জানতেই পারে না যে তার অষ্টপ্রহর নিয়ে মেগা রিয়েলিটি শো চলছে। সে যখন বাথরুমের আয়নার সামনে দাঁড়ায়, জানে না, আয়নার পেছনেও ক্যামেরা ফিট করা আছে। যখন কোনও মেয়ের সঙ্গে কথা বলে, মেয়েটির বুকের বোতামেও ক্যামেরা ফিট করা আছে। তার জীবনের প্রতিটি, প্রতিটি মুহূর্তই ‘লাইভ’ সম্প্রচারিত হয়ে চলেছে কোটি কোটি টেলিভিশনের পরদায়। আবার ‘১৯৮৪’ উপন্যাসে জর্জ অরওয়েল এক দেেশর কথা লিখেছিলেন। নজরদারির বজ্র-আঁটুনি সেখানে নির্লজ্জ। সামান্যতম নড়াচড়া থেকে ফিসফিসানি রেকর্ড হয়ে চলেছে ঘরে ঘরে দেওয়াল-জোড়া টিভি পরদায়। তার নাম ‘টেলিস্ক্রিন’। এই নভেল থেকে নানা ভাষায় বহু ছবি তৈরি হয়েছে। ব্যক্তিমানুষের গোপনতম বা ব্যক্তিগত মুহূর্ত শক্তিমানের হাতের মুঠোয় থাকলে, তা যে মানুষের প্রবল অপছন্দের ব্যাপার, আবার একই সঙ্গে এই সম্ভাবনা যে মানুষের চরম দুঃস্বপ্নের অপরিহার্য অঙ্গ, সেটা মালুম হয়েছে এই সব ছবির তুমুল জনপ্রিয়তায়।

আমজনতা যে নজরদারির চোটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই। শুধু তো ট্রায়াল রুমে কাপড় ছাড়ার সময় চরম অস্বস্তির ব্যাপার নয়, এই ‘মোবাইল ফোন’ যন্তরটা এসে গিয়ে সবার কাছে এটা একটা বাস্তব থ্রেট, যে, একটা মানুষের যে কোনও মূহূর্ত যখন-তখন ইউটিউবে আপলোড করা হয়ে যেতে পারে। সে কোন গলির কোেণ লুকিয়ে চুমু খাচ্ছিল, কোন চ্যাংড়া তা তার বারান্দা থেকে ফোনে রেকর্ড করে নিল! পরের সেকেন্ডে তা বিশ্বে ‘ভাইরাল’ হয়ে গেল! এর পর এক দিন হয়তো লোকের পেছনে সিসিটিভি লাগানো ড্রোন লেলিয়ে দেওয়া হবে। বেয়াড়া ধরনের লোকেরা না হয় ভাঙচুর করে ব্যাপারটা বুঝে নেবে, কিন্তু সংখ্যাগুরু ভদ্রজন? তাদের হাতে একটাই অস্ত্র— আইন-আদালত।

গোপনীয়তা যে এক মহামূল্য মানবাধিকার এবং এর জন্য আইনি মোকাবিলায় লোকে পিছপা হয় না সেটা এখন বেশ বোঝা যাচ্ছে। মহিলা মন্ত্রীর পোশাক বদলানোর ছবি ক্যামেরায় ধরা পড়লে বিগ হাউসের কপালে যে দুর্গতি জুটবে সে না হয় জানা কথা। চুনোপুঁটি গোত্রের আমি-আপনিও কিন্তু চুপ করে থাকছি না। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ নম্বর ধারাটিকে আরও ধারালো করার জন্য ২০১৩-তে একাধিক সংশোধন আনা হয়েছে। শুধু ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা নয়, দর্শকাম বা ভয়্যারিজ্ম-কেও গর্হিত অপরাধের গোত্রে ফেলা হয়েছে। শুধু পুকুরঘাটে চোখ দিয়ে শরীর গেলা জাতীয় ছ্যাঁচড়ামি নয়, নীতি-বহির্ভূত ভাবে প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ব্যক্তির গোপন পরিসরে হানা দিলে রাষ্ট্রও যাতে ছাড় না পায় তার বন্দোবস্ত করারও চেষ্টা হয়েছে। সিসিটিভি লাগালেই ধূমপানের আইনি থ্রেটের মতো গোটা গোটা করে সেটা লিখে রাখতে হবে।

সংবিধান মোতাবেক গোপনীয়তা যে অধিকারের পর্যায়ে পড়ে, সেটা ১৯৬৪ সালেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট। এই অধিকারে সাইবার-হানা নিয়ে নানা সংশোধনী আনা হয়েছে ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত। কিন্তু এই সংক্রান্ত ন্যায়-অন্যায়ের ধারণায় বড় রকমের আঘাত হানল ২০০৪-এর দিল্লি পাবলিক স্কুলের এমএমএস কেলেঙ্কারি। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই পেয়িং গেস্ট মেয়েদের ঘরে পুণের এক বুড়োভাম বাড়িওয়ালার স্পাইক্যাম বসানোর কদর্য ঘটনা সামনে এল। বেশ নড়েচড়ে বসলেন দেশের আইনপ্রণেতারা। ২০০৫ সালেই সংসদে পেশ করা হল ‘প্রোটেকশন অব প্রাইভেসি অ্যান্ড প্রিভেনশন অব ভিডিয়ো ভয়্যারিজ্ম’ বিল।

এই বিল আইনে পরিণত হবার পর আড়ালবাজি হয়তো খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে। কিন্তু ব্যাপারটা যে কালচার কারখানাকে সাংঘাতিক প্রভাবিত করেছে টলিউডেই তার নজির পাওয়া গেল। ভিডিয়ো আইন পাশের কয়েক দিনের মধ্যেই ছ’টি ছবির গুচ্ছ হিসাবে রিলিজ করল একটি ছবি, এবং তার প্রথমটিতেই চলে এল এক নজরদার বুড়োর বিকারে এক দম্পতির ট্র্যাজেডি। আবার বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত-র ‘আমি, ইয়াসিন আর আমার মধুবালা’ ছবি বাংলা রুপোলি পরদাকে এক ধাক্কায় অনেকটাই সাবালক করে দিল। এই ছবিতে মিশে গেল সিসিটিভি বসানোর পেশা, পাশের ঘরের মেয়েকে আড়ালের মনিটরে দেখে অবদমিত ইচ্ছেপূরণ এবং এই নজরদারির কারিগরির সূত্রেই শেষ পর্যন্ত দুই বন্ধুর সন্ত্রাসবাদী ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়ার কাহিনি। এখন তো এমএমএস-নির্ভর ছবি সারা ভারতেই রীতিমত ট্রেন্ড।

ভয়ংকর দেখে-নেওয়ার বাই এখন আর স্কিনডিপ গোপনীয়তায় থেমে নেই। ঢুকে গেছে কোষ, কলা, রক্তে। বায়োমেট্রিক নামের যে প্রযুক্তি আর কিছু দিন পর সুলভ শৌচালয়েও দেখা যাবে সেটি শুধু মরমে পশিবে না, এক্স রে-এমআরআই’কে হার মানিয়ে গোটা শরীরকে পরিসংখ্যান বানিয়ে তুলে দেবে অথরিটির হাতে। ইতিমধ্যেই হয়তো কোনও হীরকতর রাজ্যে শরীর পেরিয়ে মনের ওপর নজরদারির যন্ত্র আবিষ্কারের কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে।

বাজারে গেলেও কোনও কাউন্টারে আমরা হাতের ছাপ দিতে বাধ্য হব। বারকোড হয়ে আমার ইনফরমেশন পৌঁছে যাবে এক অদৃশ্য ডেটাবেসে। বেতন থেকে অবচেতন— সবই নথিভুক্ত হবে। সুপারিলালের মতো আমাদের হাতে আর কোনও টর্চ নেই যা পিছন বাগে ধরলে আমার পিছু নেওয়া বন্ধ হবে। কোনও পানে চেয়েই কোনও অর্থ খুঁজে না পেয়ে রঙ্গ দেখে যেতে হবে। আপনাকে জানা আমার ফুরোক আর না ফুরোক, নজরদারেরা যা জানার ঠিক জেনে নেবে।

barun.chattopadhyay@gmail.com

robibasoriyo feature cctv camera camera surveillance secret camera barun chattopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy