Advertisement
০২ মে ২০২৪
ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৭
Bengali Story

শূন্যের ভিতর ঢেউ

চিরশ্রীকে যে কী অপরূপ লাগছিল! যেন আলোর ফুলদানি হয়ে চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছিল তার। শরীর থেকে ভেসে আসছিল স্নিগ্ধ সুগন্ধ। এই দীন হতশ্রী জীবনে এটুকুই হয়তো প্রাপ্তি।

ছবি: প্রসেনজিৎ নাথ।

সুমন মহান্তি
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৪:৪৫
Share: Save:

এখন নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে অভ্রর অবস্থান। নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানেই মাসের প্রথম সাত দিন রাজা, পরের বারো দিন সাধারণ মানুষ, শেষের এগারো-বারো দিন বিপিএল। আজ দোসরা অগস্ট। পকেটে একটা টিউশনের দু’হাজার টাকা। উৎসাহে সকাল সকাল বাজারে এসেছে অভ্র। পকেট গরম বলে সে প্রথমেই মাছের বাজারে ঢুকল। অনেক দিন তার স্বাদেন্দ্রিয় গলদা চিংড়ির স্বাদ পায়নি। দাম শুনলেই ছ্যাঁকা খাওয়ার উপক্রম হত তার। আজ সে দামের পরোয়া করবে না।

মেজাজে সে জিজ্ঞেস করল, “ওই বড় চিংড়িগুলো কত করে?”

“আটশো টাকা কিলো।”

“ভাল হবে?”

“গ্যারান্টি দিচ্ছি দাদা। খারাপ হলে পুরো পয়সা ফেরত দেব।”

“এই ক’টা ওজন করো,” অভ্র বেছে নিয়ে বলল।

ওজন হল সাতশো গ্রাম, তার মানে সাড়ে পাঁচশো টাকা খসে যাবে। যাকগে, একটা দিন এমন বিলাসিতা করা যেতেই পারে।

গলদা চিংড়ি কিনে মাছের বাজার থেকে বেরোনোর মুখেই সে তনুময়কে দেখতে পেল। তনুময়ের পরনে সাদা ফুলস্লিভ শার্ট, কালো প্যান্ট, পায়ে স্লিপার, হাতে দু’খানা ব্যাগ। তনুময় স্কুলের সহপাঠী, তবে গত তিন বছর ধরে সে অভ্রকে যেন চিনতেই পারে না, হাবেভাবে অহঙ্কার। সে এড়িয়ে চলে যেতে চাইল।

আজ তনুময় নিজে থেকেই জিজ্ঞেস করল, “কেমন আছিস অভ্র?”

“দিনগত পাপক্ষয় চলছে।”

“আচ্ছা, তোর কোনও জানাশোনা সুপারি-কিলার আছে?”

আচমকা এমন প্রশ্নে চমকে উঠল অভ্র,
“সুপারি-কিলার?”

“জানা আছে কাউকে?”

তনুময়ের চোখের দিকে তাকিয়ে বিভ্রমে পড়ে গেল সে। উদ্‌ভ্রান্ত ঘোলাটে চোখ, দেখলেই কেমন যেন অসংলগ্ন মনে হচ্ছে ওকে।

“সুপারি-কিলার পাব কোথায়? ওতে তোর
কী দরকার?”

“দরকার আছে। দুটো মার্ডার করাব।”

“সেই দু’জন কারা?”

যেন খুব গোপন কিছু বলছে এমন ভঙ্গিতে নিচু স্বরে তনুময় বলল, “তা বলা যাবে না।”

“না বলাই ভাল। তবে ওই সব মার্ডারের পোকা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল। বিয়ে করেছিস, শুনেছি একটা ফুটফুটে মেয়ে হয়েছে, মাঝখান থেকে খুনোখুনির শখ হচ্ছে কেন?”

“পরে সব বলব।”

“আচ্ছা। আবার দেখা নিশ্চয়ই হবে। তবে এ রকম কথা প্রকাশ্যে বলে বেড়াস না। বিপদ আছে।”

তনুময় দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “বিপদ তো দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে।”

“বুঝলাম না।”

তনুময় ম্লান হাসল, “সব না বোঝাই ভাল।
আসি এখন।”

দু’হাজার ষোলোতে স্কুল সার্ভিস কমিশন পরীক্ষা নিয়েছিল, দু’বছর পরে ঝাড়গ্রামের কাছে একটি স্কুলে জয়েন করেছিল তনুময়। সে অযোগ্য, তনুময় যোগ্য বলেই চাকরিটা পেয়েছিল। এমনটাই কিছু দিন আগেও ভাবত সে। কী ভাবে যোগ্যদের বঞ্চিত করে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে তা প্রকাশ্যে আসায় অভ্র রাগে-ক্ষোভে একেবারে চুপ হয়ে গিয়েছিল।

তা হলে তনুময়ও কি বাঁকা পথে চাকরিটা পেয়েছে? তনুময় পড়াশোনায় যথেষ্ট ভাল, সে এই ভাবে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা কেন করবে? কিন্তু একটা চাকরির বড় প্রয়োজন ছিল তনুময়ের। ঘরে অবিবাহিত বোন, বাবা রিটায়ার্ড পিওন, অভাব ও দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছিল। তনুময়ের মতো ছেলেদের ফাঁদে ফেলাও সহজ।

তনুময়কে মোটেই প্রকৃতিস্থ মনে হল না তার।

মল্লারের রাতগুলি এখন ঝলমলে, আলোর ফুলঝুরি দিয়ে সাজানো। রাত সাড়ে ন’টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত চিরশ্রীর সঙ্গে তার কখনও হোয়াটসঅ্যাপে, কখনও মেসেঞ্জারে কথাবার্তা চলে। পরস্পর পরস্পরকে পছন্দের গান পাঠায়। কথা নির্দিষ্ট কিছু থাকে না, এ-কথা সে-কথায় সময় কোথা দিয়ে যে কেটে যায় বুঝতেও পারে না মল্লার।

আজ মল্লার লিখল, “আগামী কাল রবীন্দ্রনিলয়ে একটা প্রোগ্রাম আছে। সন্ধে ছ’টায়। আমি ওই প্রোগ্রামে সিন্থেসাইজ়ার বাজানোর ডাক পেয়েছি।”

“বাহ! বলেছিলাম আপনার উন্নতি হবে। পঁচিশে বৈশাখের মতো দিনে শুধু একটা প্রোগ্রাম?”

“না। সকালেও একটা আছে। বাণীসদনে কবিপ্রণাম অনুষ্ঠান।”

“বাহ!”

“দুটো অনুষ্ঠানে বাজিয়ে মোট দু’হাজার পাব। মন্দ নয়।”

“শুরুতে কম প্রোগ্রাম পেলেও ক্ষতি নেই। পরিচিতি ধীরে ধীরে বাড়বে।”

মল্লার লিখল, “আসবেন কাল সন্ধেয়? রবীন্দ্রনিলয়ের অনুষ্ঠানে?”

“যাওয়ার ইচ্ছে আছে। মার্কেটিং লাইনে তো অত পঁচিশে বৈশাখ মানে না। ওর ভিজ়িট থেকে ওই সময় ফেরার কথা থাকলে যাওয়া হবে না।”

“চেষ্টা করবেন।”

“অবশ্যই চেষ্টা করব। তবে কথা দিতে পারছি না। কথা দিয়ে কথার খেলাপ করতে চাই না।”

“আচ্ছা। আপনি কি কোনও রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুর শিখেছেন আমার কাছে?”

চিরশ্রী লিখল, “মনে পড়ছে না আপনার? শেখাতে এসে প্রথমে ‘আলো আমার আলো’ গানটা দিয়ে শুরু করেছিলেন। বলেছিলেন যে এটার সুর খুব সোজা, সহজেই বাজানো যাবে।”

“ও! মনে নেই।”

“মনে না থাকাই স্বাভাবিক। কত জনকে শেখান, আমি তাদের মধ্যে নিতান্তই সাধারণ এক জন।”

“তাই কি? এখনও কি তাই?”

হাসির ইমোজি পাঠাল চিরশ্রী, “এখনও তাই। এক জন শিষ্যা।”

মল্লার লিখল, “শিষ্যা তা হলে রাত দশটায় ইনবক্সে এসেছে কেন?”

“ইচ্ছে হয়েছে বলে।”

“এমন ইচ্ছেই কেন হয়?”

“পৃথিবীতে সমস্ত কিছু কার্য-কারণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না।”

ইতস্তত করে লিখল মল্লার, “আপনি ছেড়ে তুমি বলতে পারি?”

চিরশ্রী উত্তর দিল, “না।”

“কেন?”

“আপনির ব্যবধানটা থাকুক। তুমি সম্বোধন খুব কাছের। দূরত্ব কমলে তবেই কাউকে ‘তুমি’
বলা চলে।”

“দূরত্ব কবে কমবে?”

চিরশ্রী লিখল, “সময় বলবে।”

“বেশ ছিলাম। কেন যে আপনি কাছে টানলেন!”

আবার হাসির ইমোজি দিল চিরশ্রী, “আমি তো টানিনি। সিন্থেসাইজ়ারের রিডে আপনার
শিল্প টেনেছে।”

“ও! আমি তা হলে গৌণ? আপনি একটা যন্ত্রের মোহে পড়েছেন!”

“যন্ত্র নয়, যন্ত্রী আমাকে টেনেছে। বুঝলেন?”

মল্লার লিখল, “বুঝলাম। আসছেন কাল?”

“বলেছি তো কথা দিতে পারছি না। আমার জন্য অপেক্ষা করবেন, এ দিকে আমি যেতেই পারলাম না। তখন আপনার মন খারাপ হবে,” চিরশ্রী যোগ করল, “যদি মন বলে কিছু থেকে থাকে!”

“মন একটা বয়সের পর মরে গেছে। রুক্ষ, কর্কশ হয়ে গিয়েছে।”

“সেই রুক্ষ কর্কশের ভিতরে নরম শাঁস কি নেই? আছে, অবশ্যই আছে।”

মল্লার খুশি হয়ে লিখল, “শুনে ভাল লাগল। এতটা বিশ্বাস কেউ রাখেনি আমার উপর। রুক্ষ প্রান্তরেও তা হলে পলাশ ফোটে। মন রাঙিয়ে দেয়।”

চিরশ্রী লিখল, “যা ব্যতিক্রমী তা-ই সুন্দর।
তাই না?”

“হ্যাঁ।”

“আর কথা বলা যাবে না। ও উপরে আসছে। শুভরাত্রি।”

“শুভরাত্রি। আজ স্বপ্নে যেন আপনার
দেখা পাই।”

মোবাইল রেখে মল্লার চুপচাপ কিছু ক্ষণ বসে রইল। তার এবং চিরশ্রীর সম্পর্কটা দ্রুত অন্য দিকে বাঁক নিতে চাইছে। এই বাঁক খুব বিপজ্জনক, যে কোনও মুহূর্তে খাদে তলিয়ে যেতে পারে। এই সম্পর্ক সমাজের চোখে নিষিদ্ধ। প্রতিটি মুহূর্তে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় থাকবে। সে এগোবে না পিছিয়ে আসবে? এই বয়সে এক পরস্ত্রীর সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়াটা বড়সড় ভুল হয়ে যাবে না? জেনেবুঝে সে ভুলপথে পা বাড়াবে? তার পক্ষে একটু বেশিই ঝুঁকি নেওয়া হয়ে যাবে না!

আলো নিবিয়ে বিছানায় শুয়ে ছটফট করল মল্লার। এই সম্পর্কের কোনও পরিণতি নেই। সামনে ধূসর ভবিষ্যৎ, নিজের পায়ে আদৌ সে ভাবে দাঁড়াতে পারবে কি না ঠিক নেই। মনে এক চিনচিনে অপরাধবোধ জন্মাচ্ছে তার। কেন চিরশ্রীকেই তার ভাল লাগল? কেন সে উপেক্ষা করতে পারছে না?

ভাবতে ভাবতে মন বিদ্রোহী হয়ে উঠল তার। চৌত্রিশ বছর হয়ে গেলেও সে কোনও নারীর সংস্পর্শে সে ভাবে আসেনি, কেউ রূপ না দেখে শুধু তার শৈল্পিক সত্তাকে ভালবাসেনি। স্বাবলম্বী না হলে তার বিয়েও হবে না। কেন সে এক নারীর স্পর্শসুখ থেকে বঞ্চিত হবে? কোন দোষে সে ভালবাসতে পারবে না? সে তো এক জন পুরুষ, তার চাওয়া-পাওয়া থাকতে পারে না? বেকার হওয়ার অপরাধে বয়সের সমস্ত কামনাবাসনার গলা টিপে মেরে ফেলতে হবে? নাহ, অকারণ অপরাধবোধে ভুগে সে চিরশ্রীর কাছ থেকে সরে আসবে না। পরিণতি নিয়ে ভাবতে আদৌ সে রাজি নয়, এ ব্যাপারে সে বর্তমানেই বেঁচে থাকতে চায়। সে কারও হৃদয়ের সম্রাট হতে পেরেছে, এই পাওয়ার কোনও তুলনাই হয় না।

চুলোয় যাক সমাজের ভ্রুকুটি, সে তার নিজের মতো করে বাঁচবে।

রবীন্দ্রনিলয়ের অনুষ্ঠানে মল্লারের জন্য চমক অপেক্ষা করছিল। শ্রোতাদের মধ্যে চিরশ্রী এসেছে। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় নিঃশব্দে হাসি বিনিময় হল। অনুষ্ঠানে একটার পর একটা আবৃত্তি আর গান হয়েই চলেছে। নাচের সময় সে একটু খানি ছাড় পেতেই মঞ্চ থেকে নেমে চিরশ্রীকে ফোন করল।

“এসেছেন তা হলে?”

“হ্যাঁ।”

“প্রোগ্রামের শেষ পর্যন্ত থাকবেন তো?”

“হ্যাঁ, আপনি নিশ্চিন্তে বাজান।”

নাচের শেষে আবার গান শুরু হল। অনুষ্ঠানের সমাপ্তিসঙ্গীতটি বাজিয়ে তড়িঘড়ি নেমে এল মল্লার।

চিরশ্রী হাসিমুখে বলল, “প্রোগ্রামে দেখছি আপনার হাতের জাদু আরও বেশি চলে। পিঠে অত বড় যন্ত্রটা কী ভাবে বয়ে আনলেন?”

“অভ্যেস আছে।”

“এ বার তা হলে আসি?”

“যাবেন কিসে?”

চিরশ্রী বলল, “টোটো ধরে নেব।”

“আমার বাইকে উঠে পড়ুন। পৌঁছে দেব।”

“পিঠে ওই বোঝা নিয়ে ব্যালেন্স রাখা মুশকিল। থাক। অন্য এক দিন আপনার বাইকে চেপে ঘুরব। সেই সুযোগ নিশ্চয়ই আসবে।”

“দেখা যাক।”

চিরশ্রী জিজ্ঞেস করল, “পরশু সন্ধেয় আপনি আসছেন তো?”

“হ্যাঁ। কামাই আমি করি না।”

“আমারটায় কামাই করা চলবেই না,” অপরূপ ভ্রু-ভঙ্গিতে হাসল চিরশ্রী, “তা হলে শাস্তি পেতে হবে। আপনি বাইক নিয়ে এগোন। আর পরশু আধ ঘণ্টা আগে আসবেন প্লিজ়।”

“কেন?” মল্লার জিজ্ঞেস করল।

“কোনও কারণ নেই। এমনিই। ইচ্ছে না হলে আগে আসবেন না,” চিরশ্রীর ঠোঁটে হাসি।

“চেষ্টা করব।”

“চেষ্টা নয়। আসতেই হবে আগে,” চিরশ্রী তার চোখের দিকে তাকাল।

“আচ্ছা, এগোচ্ছি তা হলে,” মল্লারের আরও কিছু ক্ষণ থাকতে ইচ্ছে করছিল, মন সান্নিধ্য চাইছিল। সে কথা মনেই গোপন রেখে বাইক স্টার্ট করল সে।

চিরশ্রীকে যে কী অপরূপ লাগছিল! যেন আলোর ফুলদানি হয়ে চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছিল তার। শরীর থেকে ভেসে আসছিল স্নিগ্ধ সুগন্ধ। এই দীন হতশ্রী জীবনে এটুকুই হয়তো প্রাপ্তি। এখন তার মনে সহজে গ্লানি আসে না, হতাশা আসে না। সে উদ্দীপ্ত হয়ে বেঁচে উঠেছে। দিনগুলি নতুন নতুন স্বপ্নের হাতছানিতে রঙিন হতে চাইছে।

নির্দিষ্ট দিনে আধ ঘণ্টা আগেই সে পৌঁছে গেল।

চিরশ্রী দরজা খুলে দিল। পরনে হাউসকোট, চুল খোলা, মুখে স্মিত হাসি।

“কথা রাখলেন তা হলে?”

“রাখতেই হল।”

“আপনাকে কেন সময়ের আগে আসতে বললাম জানেন?”

“তা কী ভাবে জানব?” মল্লার উত্তর দিল।

“না জেনেই ঠিক চলে এলেন। অবশ্য না জেনেই আমরা অনেক কিছুই করে ফেলি। কেন যে আপনাকে এত ভাল লাগে তা নিজেও জানি না,’’ চিরশ্রী আলতো করে হাসল, “একটু বসুন। আমি এখনই আসছি।”

ড্রয়িংরুমের চেয়ারে বসল মল্লার। চিরশ্রী দাঁড়িয়েই থাকল। একদৃষ্টে সে মল্লারের দিকে তাকিয়েই আছে।

ক্রমশ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bengali Story
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE