‘অহল্যা’ শর্ট ফিল্মের নায়িকা রাধিকা আপ্তে। মানুষ-পুতুলদের সঙ্গে।
সুযোগ পেলেই আমি রামায়ণ আর মহাভারত নিয়ে বসে পড়ি। এ রকম দুটো বই পৃথিবীতে আর লেখা হয়েছে কি! মূল টানটান গল্পটা তো আছেই, সঙ্গে চলছে কতশত টুকরো গল্প। সব ক’টা রোমাঞ্চ, অ্যাডভেঞ্চার আর অদ্ভুতুড়ে শিহরনে ঠাসা। যাকে লোকে ‘সুপারন্যাচারাল’ বলে আর কী! কোথাও রাজা যযাতির জরা নিজের শরীরে নিয়ে ছোট ছেলে পুরু কষ্ট পাচ্ছে, কখনও সগর রাজার ষাট হাজার খোকা ঘোড়া খুঁজতে পাতালে নেমে যেই না হুজ্জুত করতে গিয়েছে অমনি জ্বলেপুড়ে ছাই। অভিমন্যু মায়ের পেটেই চক্রব্যূহে ঢোকার কায়দাটা রপ্ত করে ফেলেছে, অথচ বড় হয়ে সেই ফাঁদ থেকে কী করে বেরোবে সেই কথাটা কাউকে জিজ্ঞেস করছে না। এ সব পড়লেই মগজে নিত্যনতুন ভাবনা কিলবিল করতে শুরু করে। মনে হয় আরে, রোসো রোসো, এই চিরকালীন গল্পগুলোকেই এখনকার পৃথিবীতে এনে যদি শুধু কয়েকটা জায়গা একটু অন্য রকম করে ভাবি...
মহাকাব্যগুলো ঠিক রবীন্দ্রসংগীতের মতো। দাদু শুনে গিয়েছিলেন, আমাকে তো বশ করেই ফেলেছে, আবার আমার নাতিও বুঁদ হয়ে শুনবে। প্রতিটা যুগে তার আলাদা আলাদা ব্যাখ্যা করা যায়, আলাদা আলাদা শিক্ষাও নেওয়া যায়। এর মধ্যে রামায়ণের ‘অহল্যা’ আর মহাভারতের ‘বৃহন্নলা’র কাহিনিগুলোর প্রতি আমার ভারী অনুরাগ। ওতে আবেগের হাজারও স্তর। অনেক রকম ব্যাখ্যার স্কোপ! এমন বিষয়বস্তু নিয়ে কাজ করেও আরাম।
ও দিকে, প্রায় পাঁচ বছর ধরেই একটা শর্ট ফিল্ম বানানোর ফরমায়েশ ছিল। আড়াই ঘণ্টার বদলে, মাত্তর চোদ্দো মিনিট পেলে সিনেমা তোলার কাজটা প্রচণ্ড শক্ত হয়ে যায়। তার ওপর বাজেটও সীমিত। তবে, সবার আগে চাই একটা ঠাসবুনট আর শক্তিশালী গল্প। সে দিক দিয়েই জিতে গেল অহল্যা। তার আদি আর অন্ত দুই-ই মোক্ষম। চমক আর চাবুক। আরও একটা কারণ আছে অহল্যা তৈরির। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
আমার আশৈশব স্বপ্ন, সৌমিত্রদাকে নিয়ে একটা সিনেমা বানাই। কী করব, বাঙালির ছেলে তো! জ্ঞানচক্ষু মেলা ইস্তক ওই দুজনকেই তো দেখছি। উত্তম আর সৌমিত্র। ভিক্টর, রঞ্জিত মল্লিকরা এলেন আর একটু পরে। তার আগে অবশ্য আমি স্কুলে ভর্তি হয়ে গেছি। সেই স্কুলের নাম সত্যজিৎ রে স্কুল অব সিনেমা। এও দ্রোণাচার্য-একলব্য সম্পর্কেরই বিংশ শতাব্দী সংস্করণ আর কী! সে স্কুলে ছিলেন বাঘা বাঘা সব মাস্টারমশাই। হীরক রাজার বেশে ক্লাস নিতে আসতেন উৎপল দত্ত, ঢোল বাজাতে বাজাতে পড়াতেন রবি ঘোষ, কমেডির পিরিয়ড ছিল সন্তোষ দত্তের। সে স্কুলের মনোযোগী ছাত্র তো সৌমিত্র বলতে অজ্ঞান হবেই।
এমন অটল ভক্তি দেখেই বোধহয় বিধাতা সারপ্রাইজটা দিলেন। সৌমিত্রদাও শুনি অহল্যার গল্পটা নিয়েই একটা নাটক করার কথা ভাবছিলেন। আমি যে ভাবে অহল্যার গল্পটা লিখেছি, সেটা ওঁকে শোনালাম। উনি সানন্দে রাজি।
এ বার দেবরাজ ইন্দ্রকে খোঁজার পালা। টোটা-কে ঋতুদার সিনেমায় তো দেখেইছি, তা ছাড়া কয়েক দিন আগে ‘আবর্ত’য় ওর অভিনয়ও আমার ভাল লেগেছিল। এ বার যখন চোখ বুজে ভাবার চেষ্টা করছি, এই ২০১৫-য় ‘দুষ্টু’ দেবতাটি ঠিক কেমন হয়েছেন, হঠাৎ মনে হল, টোটাকেই মানাবে।
লাস্যময়ী নায়িকারও অভাব ছিল না। কিন্তু তাঁদের কাউকে নিলে, অহল্যা হত না। এমন কাউকে চাইছিলাম, যাকে এই মোহিনী রূপে আগে কেউ কখনও দেখেনি। কোনও দিন দেখবে বলে ভাবেওনি। মনে হল, রাধিকাকে তৈরি করে নেওয়া যায়। ওর একটা মিষ্টি পাশের বাড়ির মেয়ের ইমেজ আছে। নরম, অপাপবিদ্ধ, তাজা ফুলের মতো। মনে হয় টেলিফোন বাজলে এক্ষুনি ছুটতে ছুটতে এসে ধরবে। এই মেয়েটা যদি উর্বশী-অপ্সরার সাজে সামনে এসে দাঁড়ায়, অভিঘাত হবে সাংঘাতিক।
একটু বুঝিয়ে বলি। যে এমনিই খুব বদমেজাজি, সে রাগারাগি-চিৎকার করলে তেমন একটা গায়ে লাগে না। তার কাছে ওটাই তো প্রত্যাশিত। কিন্তু যে লোকটা এমনিতে হাসিখুশি-রসিক, মাইডিয়ার টাইপের, সে কখনও হঠাৎ অসম্ভব রেগে জিনিসপত্তর ভাঙচুর করতে শুরু করলে, চারদিকে সবাই স্তম্ভিত হয়ে থাকে। অনেক ক্ষণ ধরে। কারণ ব্যাপারটা অস্বাভাবিক, অস্বস্তিকর। আমি ঠিক এই আবছা আতঙ্ক মেশানো চৌম্বক আবেদনটাই চাইছিলাম।
রাধিকাকে বললাম সে কথা— দেখো, তোমাকে কিন্তু অহল্যার মতো দেখতে হতে হবে। একটা শর্তও দিলাম, আমরা তোমার চোখটাও অন্য রকম করে দেব। ভীষণ উৎসাহের সঙ্গে সব মেনে নিল। ও অত স্পোর্টিং না হলে অহল্যা আবার জন্মাতই না। কেঁচে যেত গোটা প্রজেক্টটা।
মেক-আপ শিল্পী অনিরুদ্ধ চাকলাদার আর কস্টিউম ডিজাইনার শুচিস্মিতা মিলে, প্রথমে রাধিকাকে সাদাটে রাত্রিবাস পরালেন, শেষ দৃশ্যে পরালেন কালো স্প্যাগেটি, হট প্যান্টস। তাতে সাদা-কালোর দ্বন্দ্বটাও রইল, আবার থ্রিল আর আকর্ষণও বাড়ল। কিন্তু আসল ম্যাজিকটা ঘটল চোখটা নতুন করে দিতে। ও রকম ধোঁয়া ধোঁয়া মায়াবী চোখ!
তার পর কী ভাবে যে চরিত্রগুলোয় মিশে গেল সব্বাই! আমি হতবাক হয়ে ভাবি মাঝে মাঝে, এই যে সৌমিত্রদা কেন সৌমিত্রদা, অমিতজি কেন অমিতজি, বিদ্যা কেন বিদ্যা— তার কারণ একটাই। একটা বিশেষ ডিএনএ রয়েছে ওঁদের মধ্যে। এক জন সত্তরোর্ধ্ব বুড়ো লোক, তাঁর নাতনির বয়সি অপরূপা স্ত্রী, সেই স্ত্রীতে আসক্ত আর এক পুরুষ— এ সব কথা শুনলে অর্ধেক লোকের কান লাল হয়ে যায়। এঁরা কিন্তু সেই সাধারণের সীমাটা অনেক দিন আগে পেরিয়ে এসেছেন।
তবু, সামনে হাজার হোক সৌমিত্রদা। আমার নিজেরই একটু কুণ্ঠা লাগছিল। কারণ ওঁকে এক জায়গায় বলতে হবে, ‘এমনও তো নয় যে আয়্যাম ভেরি গুড ইন বেড।’ সৌমিত্রদা তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ফেলুদা-হাসিটা হেসে বললেন, ‘আমি তো আর বলছি না। বলছে চরিত্রটা, গৌতম সাধু।’ এই হল সত্যিকারের মাইন্ড উইদাউট ফিয়ার!
আমাদের শুটিং লোকেশনটা কিন্তু সব্বার চেনা। ওটা দেশপ্রিয় পার্কের তালগুড় বাড়ি। রোজ অন্তত দুটো করে সিনেমা-সিরিয়ালের শুটিং চলে ওখানে। ওই চওড়া বসার ঘর, সরু প্যাসেজ, ধবধবে বেডরুম কম করেও পরদায় একশো বার দেখেছেন আপনারা। কিন্তু ওর ওপর ম্যাজিক-কাঠিটা বুলিয়ে দিয়েছে সেতু। সত্যজিৎ পান্ডে। কহানি-তে ওর ক্যামেরার গুণেই মহানগরকে মহানায়ক হয়ে উঠতে দেখেছিলেন আপনারা, অহল্যাতেও, একটা গা-ছমছমে অলৌকিক চেহারা দিল বাড়িটার। খাস কলকাতার রাস্তায় দাঁড়িয়ে, এক বাড়ির কলিং বেল টিপলেই ঢুকে পড়া যায় অলীক পৃথিবীতে। শহরের প্রাণকেন্দ্রেই রয়েছি, কংক্রিটের জঙ্গল আর হট্টগোলের মাঝমধ্যিখানে। অথচ অহল্যার সঙ্গে যেতে যেতে মনে হবে অনেক দূরে চলে যাচ্ছি যেন।
ওই নিঝুম, কী হয়-কী হয় আবহকে আরও গহিন করে তোলে মানুষ-পুতুলগুলো। কোনওটার মুখে শান্তির হাসি, কোনওটা চঞ্চল— একটু ঘাড় ঘুরিয়ে কী দেখছে। ওগুলো থ্রি-ডি মডেল। এখন আমারই বাড়িতে রাখা আছে তো, নিজেই কখনও কখনও জ্যান্ত ভেবে চমকে উঠি। শুটিংয়ের সময় ক্যামেরা ওগুলোকে এমন এমন অ্যাঙ্গলে জুম আর ফোকাস করে যে মনে হয় জীবনকে হঠাৎ ‘স্টপ’ বলে কেউ থামিয়ে দিয়েছে যেন।
ছবির যাঁরা শব্দের কারিগর, নবারুণ বসু (তিনি অনুপম রায়ের শাগরেদ), দীপঙ্কর চাকী এবং অনির্বাণ সেনগুপ্ত— এঁরা আর আমি মিলে একটা ব্যাপার ঠিক করে নিলাম গোড়াতেই। সিনেমাটা তো রিলিজ হবে ইউ টিউবে, কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ ফিল্মটা কোথায় দেখবে? তার ফোনে। এই কথাটা মাথায় রেখেই শব্দ আর নেপথ্য-সংগীত সাজাতে হবে। তাই সারা সিনেমায় সাউন্ড রাখা হল একেবারে অল্প— যতটা না হলেই নয়। সেটাকেই ‘সিচুয়েশন’ ওঁরা কখনও হঠাৎ বাড়িয়ে তার পরই খাদে নামিয়ে দিলেন। সুর একটু এগোল, আবার পিছোল। কখনও আওয়াজ শুনে মনটা ছ্যাঁৎ করে উঠছে, বুকের ভেতরেই বাজল না কি?
রামায়ণের গল্পটা তো সবাই জানেন। আমার এই ছবিটায়, গৌতম সাধু এক বিখ্যাত শিল্পী। এক জন হারিয়ে যাওয়া পুরুষ-মডেলের খোঁজে তাঁর কাছে আসেন ইন্সপেক্টর ইন্দ্র সেন। তাঁকে গৌতম বলেন, ছেলেটি একটি পাথর ছুঁয়ে অন্য মানুষের রূপ ধরে ঘুরছে। এ সব বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মাঝেই ইন্সপেক্টর শিল্পীর স্ত্রীর লোভে পা দিয়ে পুতুল হয়ে যান। মানে, রামায়ণে ইন্দ্রের লোভ আর ম্যানিপুলেশনে অহল্যা পাথর হয়ে যান, আর ছবিটায় ঘটে ঠিক তার উলটো। এখানে অহল্যা সিডিউস করেন, যদিও ইন্দ্রের একটা চয়েস ছিল। ছবিটায় নারীশক্তি বিষয়ে একটা ছোট্ট বক্তব্য লুকিয়ে আছে ঠিকই। কিন্তু সেটা একেবারেই প্রকট নয়। দর্শক সেটা বুঝলেন কি না, সে বিষয়ে আমি এতটুকুও ভাবিত নই। শুধু চেয়েছি ওই চোদ্দো মিনিটের প্রতিটা সেকেন্ড মানুষ যেন তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেন।
ছবিটা তাঁর ভালও লাগতে পারে, মন্দও লাগতে পারে। কিন্তু তিনি যেন চোখ বড় বড় করে দেখেন। আর দেখে, তাই নিয়ে যেন কথা বলেন। ছোট সিনেমা তো, সে বেচারা আর কী উপায়েই বা নিজের বিপণন করবে! তাকে লোকের মুখে মুখেই বেঁচে থাকতে হবে। মানুষ দেখবে, ধাক্কা খাবে, এ কী দেখলাম বলে অবাক হয়ে আবার দেখবে, তার কথা বলবে, অন্যের কাছে শুনবে, নিজে চুপ করে ভাববে, একমত হবে কিংবা দ্বিমত হবে আর অন্যের সঙ্গে তর্ক জুড়বে— তবে না আমার অহল্যা বাঁচবে! সে জন্যই তো আমাদের এত শরীর-মন-মগজ নিংড়ে খাটাখাটনি। মাত্র দু’দিনে আস্ত সিনেমা শুট করে ফেলার পাহাড়-চাপ ঘাড়ে নেওয়া!
আজ দু’সপ্তাহ হতে চলল সিনেমাটা নেট-এ রিলিজ করেছে। আর আমি হ্যান্ডশেক করেই যাচ্ছি, ইন্টারভিউয়ের পর ইন্টারভিউ, ফোন এনগেজ্ড তো এনগেজ্ডই, মুম্বইয়ের রাস্তায় মানুষ এগিয়ে এসে আমাকে বলছে, আপনার সিনেমাটা দারুণ লাগল। আমি লক্ষ করেছি, সবাই বলছে ‘সিনেমা’। কেউ বলছে না, আপনার বাংলা সিনেমা বা শর্ট ফিল্ম। খোদ অমিতাভ বচ্চন টুইট করে পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন। অনেকে অবশ্য বলছে, সিনেমাটা অমুক লেখা থেকে নেওয়া। আমার তাতে কোনও খারাপ-লাগা নেই। বরং আনন্দ হচ্ছে। এই পাথর হয়ে যাওয়ার রূপকটা তো সব দেশের রূপকথাতেই কোনও না কোনও ভাবে মেলে। গ্রিক পুরাণেই তো আছে। এই মিল খুঁজে পাওয়াটাই তো শিল্পীর স্বপ্ন। সত্যিকারের ‘আর্ট’ই তো এ ভাবে মানুষকে ঠেলা দিয়ে বলতে পারে— এমনটা আগেও দেখেছ, ভবিষ্যতেও দেখবে! একটা মানুষকে অন্য মানুষের মতো দেখতে হয় না কি? তবে আমি কিন্তু এই গল্পের ক্রেডিটটা বাল্মীকিবাবু ছাড়া আর কাউক্কে দেব না। তিনিই তো প্রথম এই ধারণাটা এনেছিলেন! তার পর যা কিছু এই গোছের লেখালিখি হয়েছে, সবই কি আদিকবির কাছে ঋণী নয়?
তবে যা বুঝছি, যে ক’টা নিম্নচাপ সমুদ্রে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল, তারা সব জোট বেঁধে সুপার সাইক্লোন হয়ে আমার ওপরই আছড়ে পড়েছে। ঘণ্টায় দুশো মাইল বেগে ঝড় বইছে অহল্যার কলাকুশলীদের উপর। আর আমি প্রচণ্ড স্রোতে ভাসতে ভাসতে এগিয়ে চলেছি...
রামায়ণের অহল্যা
বিশ্বামিত্র বললেন, পূর্বে এখানে গৌতমের আশ্রম ছিল, তিনি এখানে অহল্যার সহিত বহু বর্ষ বাস করেছিলেন। একদা তিনি অন্যত্র গেলে শচীপতি ইন্দ্র গৌতমের বেশ ধারণ করে অহল্যার কাছে এসে সংগম প্রার্থনা করলেন। গৌতমবেশধারী ইন্দ্রকে চিনতে পেরেও অহল্যা দুর্মতিবশে সম্মত হলেন।
তার পর তিনি ইন্দ্রকে বললেন,... সুরশ্রেষ্ঠ, আমি কৃতার্থ হয়েছি, শীঘ্র এখান থেকে চ’লে যান, নিজেকে এবং আমাকে গৌতমের ক্রোধ থেকে সর্বপ্রকারে রক্ষা করবেন।
ইন্দ্র একটু হেসে বললেন, আমি পরিতুষ্ট হয়েছি, এখন স্বস্থানে ফিরে যাচ্ছি। এই ব’লে তিনি গৌতমের ভয়ে শীঘ্র কুটীর থেকে বেরিয়ে গেলেন। এমন সময় অনলতুল্য তেজস্বী গৌতম স্নান করে সমিধ আর কুশ নিয়ে ফিরে এলেন। তাঁকে দেখে ইন্দ্রের মুখ বিষাদগ্রস্ত হল। গৌতম বললেন, ওরে দুর্মতি, আমার রূপ ধারণ করে যে অকর্তব্য কর্ম করেছ তার জন্য তুমি নপুংসক হবে। গৌতম সরোষে এই কথা বলবামাত্র ইন্দ্রের অণ্ড খসে পড়ল। তার পর গৌতম অহল্যাকে অভিশাপ দিলেন, দুষ্টচারিণী, তুমি এই আশ্রমে অন্যের অদৃশ্য হয়ে বায়ুমাত্র ভক্ষণ করে অনাহারে ভস্মশয্যায় বহু সহস্র বৎসর অনুতাপ করবে।
বাল্মীকি রামায়ণ, সারানুবাদ: রাজশেখর বসু
ছবি: রাজা রবি বর্মা-র ‘অহল্যা’ অবলম্বনে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy