আনাক-সু-নামুনের জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ১৩৪৮। বাবা ফারাও আখেনাতেন, মা নেফারতিতি। বাবাই রাজকন্যার প্রথম স্বামী! মাত্র বারো বছর বয়সেই, মা হয় মেয়ে। ক’দিন পরই আখেনাতেনের মৃত্যু, পরের ফারাও স্মেনখারে হয় তাঁর নতুন স্বামী। তিনিও ক্ষণজীবী। খ্রিস্টপূর্ব ১৩৩২ সালে, রাজমুকুট পেলেন আনাক-সু-নামুনের সৎ-ভাই, ন’বছরের তুতানখামেন। মিশরের রাজারা নিজেদের ঈশ্বরের অংশ বলতেন। সিংহাসনে দেবতার অধিকার কায়েম রাখতে, খুব কাছের আত্মীয়কে বিয়ে করতেন। পরম্পরা মেনে বালক ফারাওয়ের রানি হলেন বছর ষোলোর আনাক-সু-নামুন।
প্রত্ন-ইতিহাস থেকে বোঝা যায়, বছর দশ শান্তি, সম্মান পেয়েছিলেন রানি। তুতানখামেনকে পদ্মফুল দিচ্ছেন, ছবি মিলেছে। কিন্তু মাত্র উনিশেই প্রাণ হারালেন তুতানখামেন। রাজাকে সমাধিস্থ করা হল সন্দেহজনক রকমের দ্রুততার সঙ্গে। তখনই, হেতাইত-এর রাজাকে, আকুতি ভরা চিঠি লিখেছিলেন রানি। ‘‘আমি বিধবা, পুত্রহীনা। আপনার ছেলেদের কাউকে আমার সঙ্গে বিয়ে দেবেন? কোনও প্রজাকে স্বামিত্বে গ্রহণ করতে চাই না।’’ রানি কী পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন যে এমন চিঠি লিখলেন? হেতাইতের রাজা ছেলেকে পাঠিয়েছিলেন দেখতে, পথেই তাঁকে খুন করান তুতানখামেন ও আনাক-সু-নামুনের দাদু আই। নাতির হত্যার নেপথ্যেও নাকি তিনি!
রাজত্বের দাবি জোরালো করতে, আই জবরদস্তি বিয়ে করলেন আনাক-সু-নামুনকে। এর পরই ইতিহাস থেকে হারিয়ে গিয়েছেন রানি বা, মুছে দেওয়া হয়েছে তাঁর অস্তিত্ব।
রক্তের সম্পর্কের মধ্যে দাম্পত্যে, বিষ ঢোকে সন্তানের শরীরে। দু’বার মরা মেয়ে হয়েছিল রানির। শিশুদের মমি মিলেছে তুতানখামেনের বিখ্যাত লাশের পাশে। নিশ্চিহ্ন শুধু রানিই। ভ্যালি অব কিংস-এর মমিগুলির কোনটি তাঁর, ডিএনএ পরীক্ষা বলতে পারেনি। মিশরে বিশ্বাস, তিনি ফিরলে পৃথিবীতে নেমে আসবে একশো প্লেগ। নাকি ‘প্লেগ’ আসলে ভয়াবহ কোনও সত্য, যাকে লুকিয়ে ফেলা হয়েছিল রানির কফিনেই?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy