Advertisement
E-Paper

রবিবাসরীয় ম্যাগাজিন

...

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৪ ০৪:০০

সত্যি হল ‘স্যাটেলাইট বাবা’র (ভক্তদের বিশ্বাস, বাবা টিকির সাহায্যে স্যাটেলাইট থেকে তথ্য নেন) স্বপ্নাদেশ। মধ্যপ্রদেশের চুন্নাও দুর্গ খুঁড়ে ২০ হাজার কিলো সোনা পেল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ। বিপুল স্বর্ণভাণ্ডার উদ্ধারের আনন্দে প্রধানমন্ত্রী আজ এক দিনের রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করেছেন। বহু মানুষ ছাইভস্ম মেখে, সাধুবাবার ‘কাট আউট’ নিয়ে রাস্তায় ‘ধুতি ডান্স’-এ মেতে উঠেছে। দর্শকের অভাব হবে আন্দাজ করে, ভারত বনাম পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি ফাইনাল বাতিল ঘোষিত হয়েছে। এ দিকে, সোনার দাম এক ধাক্কায় ভরি প্রতি ১০,০০০ টাকা কমে যাওয়ার খবর শুনে, বিমানবন্দরে গ্রেফতার হওয়া সোনা-পাচারকারীদের দুজন হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছে, এক জন আত্মহত্যা করেছে। অনেক মন্ত্রী, সাংসদ, শিল্পপতিও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সোনার কারবারিরা সাধুবাবার কুশপুতুল দাহ করেছে। স্বর্ণব্যবসায়ীদের হতাশা থেকে বাঁচাতে আগামী এক সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি থাকার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অন্য দিকে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ কম দামে সোনা কিনতে সোনার দোকানের সামনে ভিড় জমায়। কিন্তু ঝাঁপ বন্ধ দেখে, ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অনুকরণে, দোকানগুলির সামনে গণপ্রস্রাবে অংশ নেয়। তবে সব কিছু ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছে সাধুবাবাকে রাজনৈতিক দলে টানার লড়াই। শাসক দল ঘোষণা করেছে, ‘স্বর্ণাব্দ’ চালু করবে, ২০০ দিনের কাজে টাকার বদলে সোনা দেবে। প্রধান বিরোধী দলের দাবি, প্রতিটি ঘরে সোনার সাধুবাবা উপহার দিতে হবে। বাবাকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করতে চায় বলেও জানিয়েছে তারা। শাসক দল পাল্টা জানিয়েছে, বাবাকে তারা রাষ্ট্রপতি করবে। কিন্তু সোনা পাওয়ার পর থেকেই বাবাকে কোত্থাও দেখা যাচ্ছে না। ভক্তদের আশঙ্কা, তাঁকে সন্ত্রাসবাদীরা অপহরণ করেছে। তবে অনেকে বলছেন, বাবা নতুন করে সোনার স্বপ্নাদেশ পেতে অখ্যাত একটি দুর্গে মাসখানেক ঘুমোতে গেছেন।

প্রণব কুমার মাটিয়া, পাথরপ্রতিমা

লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের রিপোর্ট?

ঠিকানা: টাইম মেশিন, রবিবাসরীয়, আনন্দবাজার পত্রিকা,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০ ০০১। অথবা pdf করে পাঠান এই মেল-ঠিকানায়: robi@abp.in

প্রতিটি এপিসোডে দেখানো হত এক জন করে হাই স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে। সে যখন সাড়ে চার মাস থেকে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা, তখন থেকে, বাচ্চাটা জন্মে মাসকয়েকের হওয়া পর্যন্ত, তার জীবনে সরাসরি ক্যামেরা তাক করত এই মার্কিনি শো। তার পর সে সব কথা-কাহিনি-ছবি কেটেকুটে, এডিট করে, তথ্যচিত্র আকারে দেখানো হত। ব্যস, একে বয়ঃসন্ধির সমস্যা, তার ওপর কিশোরী মায়ের হাজারো লাখো শারীরিক মানসিক ও সামাজিক যন্ত্রণা সবটা খোলা হাটে উপুড় হয়ে পড়ত। শো হিট না হয়ে যায় কোথা?

যেমন, প্রথম পর্বে দেখানো হয়েছিল মেসি বুকআউটকে। বয়স মাত্র ষোলো। তার মধ্যেই বাগদত্ত রায়ানের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে গিয়েছে। অথচ রায়ানের সন্তান রয়ে গেছে তার গর্ভে। তাই নিয়ে হুলুস্থুলু। ডেলিভারির পর বাবা-মা দুজনের দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে মেসি হিমশিম। সে স্কুলে ভীষণ প্রতিভাধর বলে বিখ্যাত ছিল, আজ তার সব স্বপ্ন, কেরিয়ার থমকে থেমে গেছে। কিন্তু, মেসি ভীষণ একরোখা। ঠিক করেছে, একলাই পুঁচকে বেন্টলিকে বড় করবে, আবার কেরিয়ারটাকেও মেরামত করে নেবে।

পরের এপিসোডে এল ফারা আব্রাহাম। ১৭ বছরের মেয়ে, পাটর্টাইম চিয়ারলিডার। বয়ফ্রেন্ডকে গর্ভাবস্থার কথা জানায়ইনি, কারণ সেই পাজি তাকে দিনরাত হুমকি দিয়ে মেসেজ পাঠাত। সম্পর্ক তলানিতে। বাচ্চাটার জন্মের দু’মাস আগে খবর এল, সেই বয়ফ্রেন্ড হঠাৎ গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। এই মোক্ষম শোকের সময়েই তার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া গড়াল আইন-আদালত পর্যন্ত। মনের অবস্থা তার এমনই, থেরাপিস্টের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে। আর সব কিছুই হাঁ করে দেখছে গোটা আমেরিকা। শো শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অনেক দিন লাইমলাইটে ছিল ফারা। গত বছরই সে এক পর্ন-তারকার সঙ্গে নিজের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিয়ো টেপ বিক্রি করে হইচই ফেলে দিয়েছিল। বলেছিল, ওটা ছিল আমার শরীর-যাপন।

আরও চার জন টিন-এজ হবু মা’কে দেখানো হয়েছিল এই সিজনে। কারও সমস্যার কেন্দ্রে প্রেমিকের বাড়ির লোক, তারা বাচ্চাটাকে একেবারেই চাইছে না। কোনও জুটি বাচ্চাটাকে পৃথিবীতে আনতেই চায়, কিন্তু মা-বাবার ভূমিকা পালন করতে এখনও প্রস্তুত নয় তারা। তাই বাচ্চাটার জন্য দত্তক পরিবারও খুঁজছে, এই শোয়ের মাধ্যমেই। প্রেম, আর যৌনতা, আর কম বয়স, আর হঠাৎ-দায়িত্বের ভার, সব টানাপড়েনের মিলিজুলিতেই টিআরপি।

টান এমনই, শো চলল চার সিজন। নিকোল নামে ১৫ বছরের এক জন মেয়ে মা হতে চলেছে, এ দিকে তার বয়ফ্রেন্ড তাকে ক্রমাগত ঠকিয়ে চলেছে। সেই নিয়ে থানা-পুলিশও হয়ে গেল কত। কোথাও আবার জোরদার অশান্তি লেগেছে, মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে বাচ্চার হবু বাবার। কায়লা নামের একটি মেয়ে আবার প্রি ও পোস্ট প্রেগনেন্সির সময় ভীষণ রকম অ্যানোরেক্সিয়ায় ভুগতে লাগল। জর্ডন হাওয়ার্ড-এর সমস্যা আরও গুরুতর। তার চামড়া কালো, আর প্রেমিকের চামড়া সাদা। জীবনের এমন টালামাটাল সময়েই তাকে বর্ণবিদ্বেষের মুখে পড়তে হল।

দেখা গেল, বেশির ভাগ টিন-এজ জুটিই বাচ্চা হওয়ার সময় প্রবল অর্থসমস্যায় পড়ছে। বেশির ভাগই নিজের পায়ে দাঁড়ায়নি, এ সময়ে বাচ্চার খরচ-খরচা জোগাড় করবেই বা কী ভাবে? তবে সব এপিসোডেই এমন তেতো কাহিনি দেখানো হত না। হোপ হার্বার্ট-এর বয়ফ্রেন্ড প্রথম দিকে সম্পর্কটা নিয়ে দোনামোনায় ছিল, সময়ই দিত না ভাল করে। কিন্তু হোপের গর্ভে তার সন্তান আসছে শুনেই তার মধ্যে বিরাট পরিবর্তন দেখা দিল। হোপের যত্ন-আত্তি করতে শুরু করল মন দিয়ে, বাচ্চা হলে সারা ক্ষণ সঙ্গে লেপ্টে থাকে। ধীরে ধীরে রোমান্স বাড়তে লাগল দুজনের মধ্যে।

সিজনের মাঝামাঝি ডেকে আনা হত হবু মায়েদের পরিবারদের। টিভিতে তাঁদের বাড়ির মেয়েদের মা হওয়া দেখানো হচ্ছে, তাতে কী সুবিধা-অসুবিধা হচ্ছে, জীবনটাই বা কতটা বদলে গেছে, সব বিষয়ে আলোচনা করতেন তাঁরা। আর প্রতি সিজনের শেষে থাকত ফিনালে এপিসোড। হবু মায়েদের জীবনের যে অংশ এর আগে অন-ক্যামেরা থেকে বাদ পড়েছিল, সেগুলো দেখানো হত বেছেবুছে। এ বারে আনকাট! স্বভাবতই, মানুষ হামলে পড়ত সে সব দেখার জন্য। শোয়ের টিআরপি বাড়ত চড়চড় করে।

টিন মায়েরা নিজেরা তো দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিল। কেমন করে বাচ্চা মানুষ করছে তারা, জানাতে, চ্যানেল কয়েক জন কিশোরী মাকে বেছে শুরু করল নতুন রিয়েলিটি শো। টিন মম। তিন-তিনখানা সিজন হয়ে গেল তারও!

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy