Advertisement
E-Paper

রুচি ফিরবে রুটিতে

জোয়ার, বাজরা, রাগি, ভুট্টা না গম... কোন রুটিতে পুষ্টি বেশি পাওয়া যায়? স্বাদই বা ভাল কোন রুটির? জেনে নিন। ডায়াটিশিয়ানদের মতে, ময়দা বাদ দিয়ে যে কোনও আটার রুটিই উপকারী।

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০০:৪৩

শরীর সুস্থ রাখতে রোজকার খাদ্যতালিকায় রুটি রাখার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। ভারতীয় এবং বাঙালি খাদ্যাভ্যাসেও রুটি প্রচলিত। কিন্তু কী দিয়ে তৈরি রুটি সবচেয়ে বেশি উপকারী? অঞ্চলভেদে বাজরা, জোয়ার, গমের রুটি খেয়ে থাকেন বেশির ভাগ মানুষ। কিন্তু কোন রুটিতে পুষ্টি কেমন, সেটা এ বার জেনে নেওয়া যাক।

•গম: গমের আটার রুটি অনেকেই খেয়ে থাকেন। এতে ভিটামিন বি, ই, ফসফরাস থাকে প্রচুর পরিমাণে। কিন্তু এতে কিছুটা গ্লুটেন থাকে।

•জোয়ার: এই রুটিতে ফাইবার বেশি পাওয়া যায়। এ ছাড়া গ্লাইসেমিক লোড কম হয় বলে, রক্তে গ্লুকোজ়ের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদ সুবর্ণা রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘জোয়ারে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম প্রচুর পরিমাণে থাকে। তাই জোয়ারের রুটি খেলে ক্যালসিয়ামের অ্যাবজ়র্পশনেও তা বেশ সহায়ক। আমাদের দেশের মহিলারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের অভাবে ভোগেন। তাই একটু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যতালিকায় জোয়ারের রুটি রাখতে পারেন।’’ হার্ট ভাল রাখার গুণও আছে জোয়ারের।

•বাজরা: ওজন কমানোর সঙ্গে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক বাজরার রুটি। বাজরা ভাল ডিটক্সও করে। ফলে ত্বক ভাল থাকে। সুবর্ণার কথায়, ‘‘বাজরায় গ্লাইসেমিক লোড সবচেয়ে কম। তাই বাজরার রুটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য খুব ভাল। তা ছাড়া বাজরা গ্লুটেনফ্রি এবং এতে ফাইবারের পরিমাণও বেশি। তাই বাজরার রুটি খেলে কোষ্ঠ পরিষ্কার থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে এই রুটি খেতে পারেন। ওজন কমানোর জন্যও এই রুটি খুব কার্যকর।’’

•রাগি: এই রুটি একটু লালচে দেখতে হয়, কারণ এতে আয়রন বেশি মাত্রায় থাকে। ডায়াটিশিয়ান কোয়েল পালচৌধুরী বললেন, ‘‘আয়রনের পরিমাণ রাগিতে অনেক বেশি থাকে। তাই অ্যানিমিয়া রোগীরা রাগি থেকে তৈরি রুটি খেতে পারেন। রুটি না করে রাগির পরিজ, দোসাও তৈরি করে খেতে পারেন। ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল হিসেবে রাগি খুব ভাল।’’ তবে রাগিতে ক্যালরির পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে অন্যান্য আটার চেয়ে কম। বরং রাগিতে প্রোটিন পাওয়া যায়। যদিও রাগির প্রোটিন ফার্স্ট ক্লাস প্রোটিন নয়। কিন্তু নিরামিষাশীদের জন্য রাগির রুটি কিছুটা প্রোটিনের জোগান দেয়।

•ভুট্টা: এই আটায় ফাইবার থাকে প্রচুর পরিমাণে আর এটিও গ্লুটেনফ্রি। ‘‘ভুট্টার আটায় ক্যালরির কনটেন্ট প্রায় অন্য আটার মতোই। তবে এতে ফসফরাস, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস ভিটামিন বি সিক্স বেশি পরিমাণে থাকে। তাই মাঝেমাঝে স্বাদবদলে ভুট্টার রুটি রাখতে পারেন,’’ বললেন কোয়েল। তবে ভুট্টার রুটি খুব মোটা হয়। হজম করতেও সময় লাগে।

কোন রুটি বেশি উপকারী?

ডায়াটিশিয়ানদের মতে, ময়দা বাদ দিয়ে যে কোনও আটার রুটিই উপকারী। বাজরা, জোয়ার, রাগি, গম, ভুট্টার আটার রুটি ঘুরিয়েফিরিয়ে খাওয়া যায়। তবে গমের আটার রুটি খেয়ে অনেকে অভ্যস্ত। তাই হজমও হয় সহজে। তুলনামূলক ভাবে বাজরা, রাগি ও ভুট্টার রুটি অনেক মোটা হয়। তাই তা হজম করাও একটু কঠিন। তাই প্রথম দিকে অল্প পরিমাণে খেয়ে দেখুন। হজম করতে পারলে পরিমাণ বাড়াবেন। অন্য দিকে শিশুদের জন্য ডালিয়া বা গমের আটার রুটিই সহজপাচ্য। সুবর্ণা বললেন, ‘‘ডালিয়ার রুটিতে ফাইবার যেমন থাকে, তেমনই ওজন কমাতেও সহায়ক। তাই শিশু থেকে বয়স্কদের ডালিয়ার রুটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি।’’ শুকনো ডালিয়া মিক্সিতে গুঁড়িয়ে, তাতে জল মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করে রুটি বানানো যায়। অন্যান্য আটার গুণ মাথায় রেখে সেই রুটিও অল্প করে খাওয়ানো শুরু করতে পারেন। সন্তান হজম করতে পারলে পরিমাণ বাড়াবেন। ওটস ও কিনোয়ার রুটিও খেতে পারেন। ওজন কমাতে সহায়ক।

মনে রাখবেন

রুটির গুণ ও স্বাদ বাড়াতে অন্যান্য উপাদানও মেশাতে পারেন। কোয়েলের কথায়, ‘‘আটার সঙ্গে ছাতু মিশিয়ে রুটি তৈরি করলে তার স্বাদ বাড়ে, পুষ্টিগুণও বৃদ্ধি পায়।’’ একই ভাবে পালং শাকও মেশাতে পারেন আটার মণ্ডে। আটা কেনার সময়েও লেবেল দেখে কিনবেন। কারণ, আটা তৈরির প্রক্রিয়ায় কিছুটা পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। পলিশড আটার চেয়ে চাকিতে পেষানো আটায় খাদ্যগুণ বেশি।

তবে প্রত্যেক ধরনের রুটি তৈরির পদ্ধতি আলাদা এবং স্বাদও ভিন্ন। তাই রুচি ও প্রয়োজন অনুযায়ী ঠিক করুন কীসের রুটি খাবেন। সব রকম রুটি ঘুরিয়েফিরিয়ে খেলেই উপকার বেশি।

Indian breads
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy