Advertisement
০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Science News

ইতালীয় মহিলাকে নিয়ে ভিন গ্রহে প্রাণ খুঁজবেন পুরুলিয়ার সুজন

ভিন গ্রহের ভিন মুলুকে প্রাণ খুঁজতে সুজনের ‘স্বজন’ হচ্ছেন এক ইতালীয় মহিলা। জোয়ানা তিনেত্তি। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ বা এসা)-র আসন্ন মহাকাশ অভিযানে।

ইনসেটে জ্যোতির্বিজ্ঞানী সুজন সেনগুপ্ত।

ইনসেটে জ্যোতির্বিজ্ঞানী সুজন সেনগুপ্ত।

সুজয় চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৮:৫৫
Share: Save:

বাংলার গ্রামের ছেলে শঙ্কর রায়চৌধুরী পারেননি। তাঁর গাইড দিয়েগো আলভারেজও পারেননি ‘চাঁদের পাহাড়’ পেরিয়ে ১০০ আলোকবর্ষ দূরের কোনও ভিন গ্রহের অচেনা, অজানা মুলুকে পৌঁছতে।

দুর্গম আফ্রিকার সেই চাঁদের পাহাড় ঘুরে আসা শঙ্করকে এ বার হার মানতেই হচ্ছে এক বঙ্গসন্তানের কাছে। যিনি যাচ্ছেন ভিন গ্রহের ভিন মুলুকে। আদত বাড়ি যাঁর পুরুলিয়ার আদ্রায়। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের (আইআইএ) অধ্যাপক সুজন সেনগুপ্ত। শঙ্করের গাইড ছিলেন এক পর্তুগিজ। ভিন গ্রহের ভিন মুলুকে প্রাণ খুঁজতে সুজনের ‘স্বজন’ হচ্ছেন এক ইতালীয় মহিলা। জোয়ানা তিনেত্তি। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ বা এসা)-র আসন্ন মহাকাশ অভিযানে। দু’জনেরই নজর এখন এসা-র ‘আরিয়েল’ মহাকাশযানের উপর।

সুজনের এই ব্রহ্মাণ্ড-সফর শুধুমাত্র একটি ডেস্টিনেশনেই আটকে থাকবে না। থমকে থাকবে না কোনও একটি ভিন গ্রহে। ইতালীয় মহিলা জোয়ানা তিনেত্তিকে নিয়ে সুজন ঘুরবেন কোনও এক ভিন গ্রহ থেকে আর একটি ভিন গ্রহে। সেখান থেকে আরও একটি। তার পর আরও একটি...! কোনও গ্রহেই তাঁরা অবশ্য ‘পা’ ছোঁয়াবেন না। ভেসে বেড়াবেন কম করে হাজারখানেক ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডলে।

চাঁদের পাহাড়ের শঙ্কর কেরানির চাকরি ছেড়ে অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় পর্তুগিজ অ্যালভারেজকে নিয়ে ঢুঁড়ে ফেলেছিলেন আফ্রিকার অত্যন্ত দুর্গম এলাকা। দুর্লভ হিরের খনির সন্ধানে।

টার্গেটে প্রাণের ‘বীজ’ ২৮টি অণু!

সুজন বা জোয়ানা কেউই কিন্তু স্বপ্নবিলাসী নন। তাঁরা দু’জনেই ভিন গ্রহের ভিন মুলুকে অচেনা, অজানা বায়ুমণ্ডলে প্রাণের ‘বীজ’, প্রাণের অণুর হদিশ পাওয়ার ব্যাপারে যথেষ্টই আত্মবিশ্বাসী।

গবেষক ছাত্র অরিত্র চক্রবর্তীকে নিয়ে কম্পিউটারে সিম্যুলেশন করে সুজন দেখিয়েছেন, ১০০ আলোকবর্ষ দূরে থাকা ভিন গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডলে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম ছাড়াও কোন কোন মৌল বা যৌগের অণু থাকতে পারে। থাকার সম্ভাবনা কোন কোন মৌলের পরমাণুর। সুজনের লিস্টে এমন অণু রয়েছে ২৮টি।

তবে শুধু শুধুই তাঁরা ওই সবের খোঁজ-তল্লাশে নামছেন না। প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে প্রাণ-সৃষ্টির জন্যেও যে বড় ভূমিকা ছিল ওই সব মৌল বা যৌগের অণু, পরমাণুগুলির। সেই ভরসাতেই সুজনের এ বার ব্রহ্মাণ্ড-সফর।

ভিন গ্রহের বাতাসে প্রাণের ‘গন্ধ’ পাওয়া যাবে কী ভাবে?

কোনও দুর্লভের হদিশ, কোনও দুষ্প্রাপ্যের সন্ধান তো আজ বললে কালই মেলে না। অপেক্ষা করতে হয়। ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডলে ভেসে বেড়াচ্ছে কি না প্রাণের ‘বীজ’, তা জানার জন্যও প্রয়োজন প্রতীক্ষার।

সেই প্রতীক্ষাটা হল, কখন সেই ভিন গ্রহটি তার নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করতে করতে এক প্রান্ত থেকে যাবে অন্য প্রান্তে। এটাকেই বলে গ্রহের ‘ট্রানজিট পিরিয়ড’ বা ‘অতিক্রমণ পর্ব’। এই যেমন সে দিন আমাদের সৌরমণ্ডলে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে করতে শুক্র গ্রহের অতিক্রমণ হল। সূর্যের সামনে দিয়ে চলে গেল শুক্র গ্রহ। তার ছায়া পড়ল সূর্যের উপর।

প্রাণের ‘বীজ’ খুঁজতে ভিন গ্রহের ভিন মুলুকে: দেখুন ভিডিয়ো

এই অতিক্রমণ পর্ব চাক্ষুষ করার জন্য ওঁৎ পেতে থাকেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কারণ, গ্রহের তো নিজস্ব কোনও আলো নেই। আমাদের সূর্যের মতো নক্ষত্রদের আলোতেই ভিন গ্রহদের দেখা যায়। অতিক্রমণ পর্বে কোনও ভিন গ্রহ যখন তার নক্ষত্র আর আমাদের (টেলিস্কোপের) মাঝে এসে পড়ে, তখন সেই নক্ষত্রের কিছুটা অংশ ঢাকা পড়ে যায়। গোটা নক্ষত্রটা তাতে ঢাকা পড়ে না। সে জন্যই কিছু দিন আগে শুক্র গ্রহের ছায়া পড়েছিল সূর্যের উপর। তার ফলে, সেই নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য আমাদের চোখে (বা টেলিস্কোপে) কিছুটা কমে যায়। গ্রহের নিজস্ব আলো নেই বলে অতিক্রমণের সময় তাই গ্রহটিকে দেখা যায় না। কিন্তু যে নক্ষত্রটিকে অতিক্রম করছে গ্রহটি, তার ঔজ্জ্বল্য কমে যাওয়ার ফলে আমরা গ্রহটির অস্তিত্বের কথা জানতে পারি। বুঝতে পারি।

গ্রহের অতিক্রমণ পর্বে কী ঘটে?

অতিক্রমণ পর্বে নক্ষত্রের আলোর কিছুটা এসে পড়ে ভিন গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে। সেই আলোর বর্ণালির নানা রং দেখেই বোঝা যায় সেই ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডলটা কেমন। তা পুরু না পাতলা। কোন কোন মৌল বা যৌগের অণু রয়েছে সেই বায়ুমণ্ডলে। তাদের মধ্যে প্রাণের ‘বীজ’ বা প্রাণের অণু রয়েছে কি না।

তার ফলে, সেই ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডলের ‘মনের গভীরে’ কোন কোন ‘গোপন কথা’ লুকিয়ে রয়েছে, তা জানার কাজটা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। তাই গ্রহদের ট্রানজিট দেখার জন্য খুব উৎসাহী হয়ে ওঠেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

গবেষকরা কী করতে চাইছেন?

সুজন, জোযানারা চাইছেন, অতিক্রমণ পর্বে ওই ভিন গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডলে তাদের নক্ষত্রদের যে আলো এসে পড়ছে, তার বর্ণালি দেখতে। প্রাণের ‘বীজ’ হিসেবে সুজনরা যে ২৮টি মৌল ও যৌগের অণু ও পরমাণুর হদিশ পাওয়ার আশায় রয়েছেন ভিন গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডলে, তারা থাকলে আলোর বর্ণালিটা কেমন দেখতে লাগবে, তার একটি তাত্ত্বিক মডেল বানিয়েছেন গবেষকরা। সেই মডেলে এটাও বলে দেওয়া যাবে, ওই সব মৌল ও যৌগের অণু, পরমাণুগুলি ভিন গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডলে ঠিক কতটা পরিমাণে রয়েছে। তাদের মিশ্রণটা ঠিক কেমন। যেমন আমরা জানি, পৃথিবীর শুকনো বাতাসে নাইট্রোজেন থাকে ৭৮ শতাংশের কিছু বেশি, অক্সিজেনের পরিমাণটা হয় প্রায় ২১ শতাংশ, ঠিক সেই ভাবেই ভিন গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডলে থাকা মৌল ও যৌগের অণু, পরমাণুগুলির পরিমাণ জানা যাবে। এই পদ্ধতিটিকে বলা হয়, ‘স্পেকট্রোস্কোপিক অ্যানালিসিস’।

সুজনের কথায়, ‘‘ভিন গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডল রয়েছে কি না, থাকলে তা পুরু না পাতলা, তা বোঝার জন্য এখনও পর্যন্ত ‘কেপলার’-সহ নাসা, এসার বিভিন্ন মিশনে যে পদ্ধতির ব্যবহার হয়েছে ও হয়ে চলেছে, তার নাম ‘ফোটোমেট্রিক অ্যানালিসিস’। এসার ‘আরিয়েল’ মিশনেই প্রথম স্পেকট্রোস্কোপিক অ্যানালিসিস করা হবে। পর্যবেক্ষণ থেকে পাওয়া সেই সব তথ্যের সঙ্গে আমরা কম্পিউটার সিম্যুলেশনের মাধ্যমে বানানো আমাদের মডেলকে মিলিয়ে দেখব।’’

কোন ‘হিরে’র খোঁজে বেশি আগ্রহ গবেষকদের?

ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (এসা) আসন্ন ‘আরিয়েল’ মিশনের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর, ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডনের জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী জোয়ানা তিনেত্তি ই-মেলে ‘আনন্দবাজার ডিজিটাল’কে জানিয়েছেন, সব ভিন গ্রহেই তাঁরা ওই ২৮ রকমের অণুর হদিশ পাওয়ার আশা করছেন না। সেগুলি কোথাও কোথাও যেমন থাকতে পারে, তেমনই সেগুলি নাও থাকতে পারে বহু ভিন গ্রহে।

এসার এই অভিযানে শামিল হয়েছে ইউরোপের বহু দেশ। জোয়ানা এই অভিযানের যাবতীয় সায়েন্স অপারেশনের প্রধান। মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার ব্রিটেনের রাদারফোর্ড-অ্যাপ্‌লটন ল্যাবরেটরির পল একলেস্টন।

‘আরিয়েল’ মিশনের প্রধান জোয়ানা তিনেত্তির (ডান দিক থেকে দ্বিতীয়) সঙ্গে অধ্যাপক সুজন সেনগুপ্ত (বাঁ দিক থেকে তৃতীয়)

তবে চাঁদের পাহাড়ের শঙ্কর যেমন আফ্রিকার দুর্গম এলাকায় গিয়ে দুর্লভ হিরের খনির খোঁজ-তল্লাশে ডুবে গিয়েছিলেন, তেমনই সুজন, জোয়ানাদের প্রধান লক্ষ্য হবে, ভিন গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডলে মুক্ত অক্সিজেন অণু খুঁজে বের করা। আর খুঁজে দেখা মিথেন এবং ওজোন অণু। এই অণুগুলিই তাঁদের কাছে হিরে-পান্না-চুনি!

যে ‘মন্ত্র’ রয়েছে অক্সিজেন, মিথেন, ওজোনের হাতে!

সুজন বলছেন, ‘‘জল, কার্বনেট বা নাইট্রাস অক্সাইড-সহ বিভিন্ন ধরনের অক্সাইড যৌগে অক্সিজেন থাকতে পারে। কিন্তু তা মুক্ত নয়। সেগুলি রয়েছে যৌগের মধ্যে। সেগুলি আলাদা ভাবে ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডলে থাকতে পারছে না। ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডলে যদি মুক্ত অক্সিজেন অণুর হদিশ মেলে, তা হলে কিছুটা নিশ্চিত হওয়া যাবে, তা প্রাণেরই ইঙ্গিত বহন করছে। কারণ, সেই মুক্ত অক্সিজেন অণু বায়ুমণ্ডলে আসতে পারে সালোকসংশ্লেষ বা ফোটোসিন্থেসিসের মতো জৈবনিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।’’

প্রাণ রয়েছে কি না, তা বোঝার আরও দু’টি শক্তিশালী হাতিয়ার মিথেন এবং ওজোন অণুর অস্তিত্ব। কেন? সুজন জানাচ্ছেন, মিথেন অণু বেরিয়ে আসে প্রাণী বা উদ্ভিদের দেহাবশেষ থেকে। তাই মিথেন অণুর হদিশ মিললে বোঝা যাবে হয়তো কোনও কালে প্রাণ ছিল ওই সব ভিন গ্রহে।

ওজোন অণুর খোঁজ মিললে কী হবে? সুজনের বক্তব্য, সত্যি-সত্যিই যদি থাকে, তা হলে পৃথিবীর মতোই ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডলের একেবারে উপরের স্তরে থাকবে ওজোন অণু। যে ওজোন অণু তৈরি হয় একটি অক্সিজেন অণু আর একটি অক্সিজেন আয়নের বিক্রিয়ায়। তার ফলে, বোঝা যাবে, মুক্ত অবস্থায় অক্সিজেন অণু রয়েছে ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডলে। তবে সেই মুক্ত অক্সিজেন অণু থাকবে বায়ুমণ্ডলের অনেক নীচের স্তরে। আরও গভীরে। তার মানে, ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডলের একেবারে উপরের স্তরে ওজোন অণুর দেখা মিললেই বুঝতে হবে, সেই মুলুকে বায়ুমণ্ডলের কোনও না কোনও স্তরে রয়েছে প্রাণের ইঙ্গিত মুক্ত অক্সিজেন অণু।

কেন প্রাণের খোঁজ দৈত্যাকার ভিন গ্রহে?

আমাদের সৌরমণ্ডলের সঙ্গে ব্রহ্মাণ্ডের অন্যান্য নক্ষত্রমণ্ডলের একটা বড় ফারাক রয়েছে। সেটা হল, আমাদের সৌরমণ্ডলে বৃহস্পতি বা নেপচুনের মতো দৈত্যাকার ও ভারী গ্রহগুলি সূর্যের থেকে রয়েছে অনেক বেশি দূরে। পাথুরে নয়, সেগুলি কম-বেশি গ্যাসে ভরা গ্রহ। পৃথিবী, মঙ্গল, শুক্রের মতো পাথুরে গ্রহগুলি তুলনায় অনেক ছোটখাটো। আর তারা রয়েছেও সূর্যের অনেক কাছাকাছি। তাই বৃহস্পতি, নেপচুনের চেয়ে সূর্যের আলো অনেক বেশি পড়ে পৃথিবী, মঙ্গল, শুক্রে।

অন্যান্য নক্ষত্রমণ্ডলে গ্রহদের ‘ঘরবাড়ি’গুলি একেবারেই অন্য রকম ভাবে সাজানো। সেখানে বৃহস্পতি বা নেপচুনের আকারের বড় ও ভারী ভিন গ্রহগুলি রয়েছে সূর্যের কাছাকাছি। আর ছোট ছোট পাথুরে গ্রহগুলি রয়েছে তাদের নক্ষত্রদের চেয়ে অনেক দূরে। তাই ভিন গ্রহে প্রাণের খোঁজে অন্যান্য নক্ষত্রমণ্ডলে বৃহস্পতি বা নেপচুনের মতো চেহারার গ্রহগুলির উপর নজর রাখেন বিজ্ঞানীরা।

আরও পড়ুন- সুনামি আসছে! সূর্যের মনের কথা জানিয়ে চমক রানাঘাটের কন্যার​

আরও পড়ুন- সুপার হিউম্যানের খোঁজ মিলতে পারে এ বার! ইঙ্গিত নাসার​

তবে সেই ভিন গ্রহগুলি যদি তাদের নক্ষত্রদের খুব কাছাকাছি থাকে, তা হলে মুশকিল। নক্ষত্রদের অসম্ভব তাপে ওই ভিন গ্রহগুলির গা ঝল্‌সে যায়। তাদের বায়ুমণ্ডল কোনও কালে থাকলেও, সূর্যের তীব্র বিকিরণে তা জ্বলেপুড়ে যায়। ফলে, প্রাণের ‘বীজ’-এর খোঁজে নক্ষত্রদের খুব কাছে থাকা বৃহস্পতি বা নেপচুনের চেহারার ভিন গ্রহগুলিকে তাঁদের হিসেবের মধ্যে রাখেন না বিজ্ঞানীরা।

জোয়ানার কথায়, ‘‘নক্ষত্রদের থেকে ন্যূনতম যে দূরত্বে থাকলে কোনও ভিন গ্রহে জল তরল অবস্থায় থাকতে পারে, থাকতে পারে বায়ুমণ্ডল (জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে বলে, গোল্ডিলক্‌স জোন), সেই রকম দূরত্বে থাকা ভিন গ্রহেই প্রাণের অণুর হদিশ পাওয়ার আশায় রয়েছেন গবেষকরা।’’

ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডলের কতটা গভীরতায় চলবে তল্লাশি?

সুজন বলছেন, ‘‘বৃহস্পতির মতো চেহারার ভিন গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডলের ৩৫ থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত আলোর বর্ণালি বিশ্লেষণ করা হবে। আর পৃথিবী বা পৃথিবীর চেয়ে কিছুটা বড় (দেড়/দু’গুণ) ভিন গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডলে সেই খোঁজ-তল্লাশ চলবে ২০ কিলোমিটার গভীরতা পর্যন্ত।’’ খুব দেরি হলে, ২০২৮ সালের মধ্যেই ভিন গ্রহের ভিন মুলুকে ‘পাড়ি জমাবেন’ সুজন, জোয়ানারা।

সন্দেহ নেই, চাঁদের পাহাড়ের শঙ্কর, অ্যালভারেজের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন সুজন, জোয়ানারা। কারণ, অঙ্কের জটিল সমীকরণের পথ ধরে হেঁটে তাঁদের হাতে এসেছে তাত্ত্বিক মডেল। যার মানে, এখনও পর্যন্ত হাতে আসা তথ্যগুলি যদি ঠিক হয়, তা হলে ওই ভিন গ্রহগুলির বায়ুমণ্ডলে এমন ধরনের প্রাণের ‘বীজ’ খঁজে পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

ভিন গ্রহের বায়ুমণ্ডলের ‘মন’ যদি মিলে যায় শেষ পর্যন্ত সুজনের মডেলে, তা হলেই কেল্লাফতে!

ছবি ও ভিডিয়ো সৌজন্যে: অধ্যাপক সুজন সেনগুপ্ত

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

অন্য বিষয়গুলি:

Prof Giovanna Tinetti Sujan Sengupta ESA ARIEL Exoplanet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy