E-Paper

‘পৃথিবীর গণ্ডি ছাড়িয়ে বহু দূর যাবে মানুষ’

ঠিক এক মাস আগে চাঁদের মাটিতে নেমেছিল চন্দ্রযান-৩। এর পরে পৃথিবীর হিসেবে দু’সপ্তাহ (চাঁদের একটি দিন) চন্দ্রপৃষ্ঠে গবেষণা চালিয়েছে বিক্রম ও প্রজ্ঞান।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৫
An image of S Somnath

ইসরোর চেয়ারপার্সন এস সোমনাথ। —ফাইল চিত্র।

চব্বিশ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে, দিনের আলো ফুটেছে চাঁদে। এখনও সাড়া নেই বিক্রম ও প্রজ্ঞানের। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে চলেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞানের সঙ্গে যদি আর সংযোগ স্থাপন না-ও করা যায়, তা হলেও এই অভিযান সফল। কারণ এটা খুব অপ্রত্যাশিত ছিল না। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই অভিযানের সময়সীমা দু’সপ্তাহই ছিল। এই নির্দিষ্ট সময়ে পূর্ব নির্ধারিত সমস্ত পরীক্ষানিরীক্ষা সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছে বিক্রম ও প্রজ্ঞান। একটি সাক্ষাৎকারে ইসরোর চেয়ারপার্সন এস সোমনাথ আজ জানিয়েছেন, চন্দ্রযান-৩-এর সংগৃহীত তথ্যে তাঁরা সন্তুষ্ট। এ বারে এই সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা হবে। তবে এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, কাজ সম্পূর্ণ করতে বেশ কয়েক বছর লেগে যাবে। সোমনাথ জানান, এখনও যেমন চন্দ্রযান-১-এর গবেষণাপত্র বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হচ্ছে।

ঠিক এক মাস আগে আজকের দিনেই চাঁদের মাটিতে নেমেছিল চন্দ্রযান-৩। এর পরে পৃথিবীর হিসেবে দু’সপ্তাহ (চাঁদের একটি দিন) চন্দ্রপৃষ্ঠে গবেষণা চালিয়েছে বিক্রম ও প্রজ্ঞান। রাতে চাঁদের তাপমাত্রা মাইনাস ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে ফেলে। এই সময়টা চন্দ্রযানের ল্যান্ডার ও রোভার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এই প্রতিকূল আবহাওয়ায় যন্ত্রেরও বেঁচে থাকা কঠিন। তবে দিনের আলোর ওই দু’সপ্তাহে নানাবিধ গবেষণা করেছে বিক্রম ও প্রজ্ঞান। এবং চাঁদ-রহস্যের দারুণ কিছু সূত্র মিলেছে।

সোমনাথ বলেন, ‘‘আমরা চাঁদে যেতে চাই কারণ মানব সমাজের অগ্রগতির জন্য। তার জন্য আমাদের চাঁদে যাওয়া প্রয়োজন এবং সেখান থেকে পৃথিবীতে ফেরাও দরকার। শুধু অবতরণ তো নয়, আমাদের ঘরে ফিরতে হবে। এ বারে (চন্দ্রযান-৩) যে সাফল্য মিলেছে, তার কী ভাবে সদ্ব্যবহার করা যায়, সেটাই খতিয়ে দেখা হবে।’’ চাঁদের মাটিতে ঘুমিয়ে পড়ার আগে ল্যান্ডার বিক্রম একটা ছোট্ট লাফ দিয়েছিল। একে বলা হয় ‘হপ টেস্ট’। চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ মাপার জন্য বিক্রমের লাফ দেওয়া খুব জরুরি ছিল। ভবিষ্যতে মানব অভিযানে এই তথ্য সাহায্য করবে। সোমনাথ জানিয়েছেন, চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের পরে এখন বিজ্ঞানীদের হাতে অসংখ্য তথ্য এসেছে। এগুলি বিশ্লেষণ করে দেখা হবে। পরবর্তী কালে যে সব অভিযান হবে, তাতে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা যাবে। নতুন যন্ত্র, সফ্‌টওয়্যার তৈরি করা যাবে। সোমনাথ বলেন, ‘‘আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছে।’’

ইসরো-প্রধান আশাবাদী, মানুষ পৃথিবীর গণ্ডি ছাড়িয়ে আরও বহু দূর যাবে, চাঁদ, মঙ্গল, কিংবা সৌরজগতের বাইরে কোনও গ্রহে বসতি গড়ব। ভারতীয়রাও সেই জায়গায় পৌঁছে যাবে। সোমনাথের কথায়, ‘‘আমরা নিজেদের ছোট করে দেখি। আমরা ভাবি যে আমরা প্রযুক্তিগত দিক থেকে অত উন্নত নই, অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী নই এবং সব সময়ই এটা বিশ্বাস করি, আমরা গরিব। তাই এ সব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারি না। কিন্তু যে দেশে জ্ঞানের উৎস রয়েছে, সেখানে এই ভাবনা বদলানো দরকার।’’ তাঁর কথায়,
‘‘ভবিষ্যতে এক দিন ভারত প্রযুক্তির শীর্ষে পৌঁছবে। যখন প্রযুক্তির চাবিকাঠি কারও হাতে চলে আসে, তখন সম্ভাবনার সব দরজা
খুলে যায়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Chandrayaan-3 ISRO Mission Moon

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy