গত বছর এই সময়েও গয়না সোনার দাম ছিল হাজার তিরিশের উপরে। এ বছর এখনও পর্যন্ত দাম মোটামুটি নাগালের মধ্যে। দাম ঘোরাফেরা করছে ২৫ হাজারের আশপাশে। তাই ভাবছেন এ বার একটু সোনা কেনার দিকে হাত বাড়ানো যেতেই পারে। পরমুহূর্তেই আবার ভাবছেন কী হবে সোনা কিনে। সোনা মানেই তো ভারী। যতই হালকা সোনার বিজ্ঞাপনে আকর্ষণ করুক না কেন স্বর্ণব্যবসায়ীরা! কিনে রাখা সোনা তো ঠাঁই পাবে সেই ব্যঙ্কের লকারেই। কিন্তু ভাবুন তো সোনা যদি হয় হাওয়ার থেকেও হালকা! ভাবছেন ঠাট্টা করছি। এক দম নয়।
এ বার থেকে হাওয়ার মতোই হালকা ওজনের সোনা মিলবে। জুরিখের এক দল গবেষক তৈরি করেছেন হাওয়ার মতোই হালকা ওজনের সোনা। গবেষণাপত্রটি অ্যাডভান্সড মেটেরিয়ালস নামে জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষক দলের প্রধান রাফায়েল মেজেনজা জানান, ২০ ক্যারাট ওজনের সোনার পিণ্ডটি প্রথাগত মেটালের থেকে হাজার গুণে হালকা। এমন কী দুধের ফোমের মতো হাওয়ায় ভাসতেও পারে পিণ্ডটি। এমন কী জলের থেকেও হালকা এটি।
থ্রি-ডি আকারের পিণ্ডটিতে ছিদ্রতে ভর্তি। কিন্তু খালি চোখে সোনা থেকে এই পিণ্ডটিকে আলাদা করা মুশকিল। কারণ, পিণ্ডটির গায়ে একই রকমের রং এবং চকচকে ভাবও আছে।
তফাত্ শুধু একটা জায়গাতেই। ওজনে। এটি এতই হালকা এবং নরম যে হাতে করেই চটকানো যায়।
কিন্তু কেন এত হালকা এটি?
সুইস গবেষদের দাবি, পিণ্ডটির সিংহভাগ হাওয়ায় ভর্তি। শুধুমাত্র ২ শতাংশ সলিড অংশ। এই সলিড অংশের চতুর্থাংশে সোনা আছে বাকি এক-পঞ্চমাংশ সরু সরু দুগ্ধজাত প্রোটিন ফাইবারে পরিপূর্ণ।
এতই হালকা যে দুধের উপর ভাসছে সোনা। ছবি: টুইটার।
কী ভাবে তৈরি হল এই নতুন আকারের সোনা?
নতুন আকারের হালকা সোনা তৈরির পদ্ধতিটি যথেষ্ট অভিনব। কোন পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে ছিদ্রভরা পিণ্ডটি?
প্রথমে মিল্ক প্রোটিনকে গরম করে অ্যামিলয়েড ফাইব্রিলস নামে ন্যানো মিটার প্রোটিন ফাইবার। ফাইব্রিলসগুলি এ বার গোল্ড সল্ট সলিউশনে ডুবিয়ে রাখেন তাঁরা। সলিউশনটা ঠান্ডা হতেই ফাইবারগুলো একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। সোনাও ছোট ছোট পদার্থে জমাট বেধে যায়। তুলতুলে জেলের আকারের গোল্ড ফাইবার নেটওয়ার্ক বা জাল তৈরি হয়।
গবেষকরা জানাচ্ছেন পুরো পরীক্ষা চলাকালীন সবচেয়ে চিন্তা ছিল সোনার জালটিকে কী ভাবে শুকনো করা হবে। শুকনো করতে গিয়ে যদি ভেঙে যায় জালটি তবে তো পুরো পরিশ্রমটাই মাটি। কার্বন-ডাই-অক্সাইড দিয়ে ধীরে সুস্থে শুকনো করা হয়।
কিন্ত সোনা তো মিলল, এ বার প্রশ্ন কতটা বিশুদ্ধ সোনাটি?
কার্বন-ডাই-অক্সাইডের যৌগ দিয়ে শুকনো করার কারণে মেলে হোমোজেনিয়াস বা সমগোত্রীয় সোনা। গবেষকরা জানিয়েছেন, পদ্ধতির সামান্য হের ফের করে সোনার পিণ্ডটির রঙেরও হের ফের ঘটানো যাবে।
তাই এখন অপেক্ষা কবে হাতে মিলবে হাওয়ার মতোই হালকা সোনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy