Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
space

বৃহস্পতিবার ফের মহাকাশে যাবে জল ভালুকেরা

জলে ফোটাও বা ডিপ ফ্রিজে রাখো, চেপে গুটলি পাকিয়ে দাও বা শুকিয়ে নাও, মহাকাশে শূন্যপ্রায় অভিকর্ষে নিয়ে ফেল কিছুতেই মৃত্যু হয় না।

টার্ডিগ্রেড তথা জল ভালুক

টার্ডিগ্রেড তথা জল ভালুক

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২১ ০৫:১২
Share: Save:

মহাকাশে ফের পাড়ি দিচ্ছে টার্ডিগ্রেড তথা জল ভালুকেরা। স্পেসএক্স-এর মহাকাশযান ‘ড্রাগন’ তাদের নিয়ে যাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এ।

নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময়ের হিসেবে রাত ১০টা ৫৯ মিনিটে ‘ফ্যালকন ৯’ রকেটে চেপে রওনা দেবে ‘ড্রাগন’। নিয়ে যাবে ৩৩২৮ কেজি গবেষণা উপাদান। যার কিছু যন্ত্রপাতি। কিছু জীব। যার মধ্যে থাকবে অন্ধকারে উজ্জ্বল ১২৮টি ববটেল স্কুইড ও ৫০০০ টার্ডিগ্রেড।

এই টার্ডিগ্রেড জীব জগতে এক বিস্ময়। জলে ফোটাও বা ডিপ ফ্রিজে রাখো, চেপে গুটলি পাকিয়ে দাও বা শুকিয়ে নাও, মহাকাশে শূন্যপ্রায় অভিকর্ষে নিয়ে ফেল কিছুতেই মৃত্যু হয় না। কারণ, ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে চরম শূন্যের কাছাকাছি তাপমাত্রাতেও এরা বেঁচে থাকতে পারে দিব্যি। ২০০৭-এ মহাকাশে ঘুরিয়ে আনার পরেও দেখা গিয়েছে, এদের অনেকে দিব্যি ডিম পেড়েছে। ছানাও হয়েছে সুস্থ-চাঙ্গা। হিমালয়ে ১৮ হাজার ফুটেরও বেশি উচ্চতায়, ‘সপ্ত নরক’ হিসেবে পরিচিত জাপানের ফুটন্ত কুণ্ডে, সমুদ্রের অতলে ও দক্ষিণ মেরুর হিমদেশে সর্বত্রই হাজির এরা।

এদের জিয়নকাঠির রহস্যটা কী? সেটাই জানার চেষ্টা হবে মহাকাশের আন্তর্জাতিক গবেষণাগারে। মহাকাশে মানুষের যে নানা রকম চাপ নিতে হয়, সেগুলি কমানোর কোনও উপায় জানা যেতে পারে এই খুদে বহুকোষী প্রাণীগুলির কাছ থেকে। খোঁজা হবে খুব কম জলেও কী ভাবে হতে পারে তুলোর চাষ। আকারে ১ মিলিমিটার, বড় জোর ১.৫ মিলিমিটার। অনুবীক্ষণ যন্ত্রে এদের যে চেহারা ধরা পড়ে, তার ভিত্তিতে এদের জল ভালুক বা মস পিগলেট বলা হয়। থাবাওয়ালা আটটি পা। গোল অদ্ভুতদর্শন মুখ। মহাকাশে খোলা ছেড়ে দিলে আমরা ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে জ্ঞান হারাই। পরের কয়েক মুহূর্তে গোটা শরীর, এমনকি কোষের ডিএনএগুলিও ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। কিন্ত টার্ডিগ্রেড বেঁচে থাকে দিব্য। কোষের জল শুকিয়ে গেলে আমরা মারা যাই। কিন্তু শুকিয়ে ফেললে এদের বিপাকের হার ১০ হাজার ভাগের এক ভাগ (০.০১%)-এ নেমে আসে। অনেক দশক পরে জল পেলেই ফের তরতাজা হয়ে ওঠে দিব্য। ২০১৯-এ ইজ়রায়েলের একটি যান এই জল ভালুকদের পাঠিয়েছিল চাঁদে। যানটি চাঁদের বুকে আছড়ে পড়ে ভেঙে যায়। জল ভালুকেরা এখনও চাঁদে বেঁচেবর্তে আছে বলেই অনুমান বিজ্ঞানীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

space tardigrade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE