Advertisement
০৭ মে ২০২৪

বুলেটেই মৃত্যু সেই গন্ডারের, বলছে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট

জলদাপাড়ায় গন্ডার-মৃত্যুর পিছনে যে চোরাশিকারিদের হাত রয়েছে ময়নাতদন্তের পরে তা আরও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। রবিবার ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়ার পরে জানা গিয়েছে, জলদাপাড়ার ফিফটি-ফিট বিট-এ উদ্ধার হওয়া গন্ডারটির কপালের নীচে একটি গভীর ক্ষত চিহ্ন রয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৪ ০৩:১০
Share: Save:

জলদাপাড়ায় গন্ডার-মৃত্যুর পিছনে যে চোরাশিকারিদের হাত রয়েছে ময়নাতদন্তের পরে তা আরও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

রবিবার ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়ার পরে জানা গিয়েছে, জলদাপাড়ার ফিফটি-ফিট বিট-এ উদ্ধার হওয়া গন্ডারটির কপালের নীচে একটি গভীর ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। তবে তার শরীরের ভিতরে কোনও বুলেটের সন্ধান মেলেনি। খড়্গহীন মৃত গন্ডারটিকে পর্যবেক্ষণ করে বিশেষজ্ঞদেরও অনুমান, চোরাশিকারিরাই সেটিকে মেরে তার খড়গ কেটে নিয়ে গিয়েছে। শনিবার কলকাতা থেকে জলদাপাড়া এসে গন্ডার নিধনের ব্যাপারে তদন্তও শুরু করেছেন ‘হেড অফ ফরেস্ট’ নবীনচন্দ্র বহুগনা এবং অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল প্রদীপ ব্যাস। সোমবার এ বিষয়ে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক করার কথা।

চার মাসেরও কম সময়ে তিন তিনটি পূর্ণবয়স্ক গন্ডারের খড়্গহীন দেহ খুঁজে পাওয়ার পর, বন দফতরের নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি। বনকর্তারাও ব্যাপারটা আড়াল করছেন না। এক শীর্ষ বনকর্তা বলেন, “গত আড়াই বছর ধরে প্রায় প্রহরাহীন পড়ে রয়েছে জঙ্গল।” কেন?

কোনও রাখাঢাক না রেখেই তিনি জানান, বন দফতরে কর্মী নিয়োগ বহু দিন ধরে বন্ধ। মাঝে এক বার বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি। উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ জঙ্গল পাহারা দিতেন দৈনিক রোজের ভিত্তিতে নিয়োজিত বিভিন্ন বনবস্তির মানুষজন। এই অস্থায়ী কর্মীদের ভরসাতেই ‘টিকে ছিল জঙ্গল’, বলে তাঁর মন্তব্য।

উত্তরবঙ্গের এক বনকর্তার ব্যাখ্যা, “ট্রেজারি বিধি চালু হওয়ায় এবং এলওসি (লেটার অফ ক্রেডিট) কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত দু-বছর ধরে বনকর্মীরা সময়মতো টাকা পাচ্ছেন না। অথচ এর আগে দফতেরর জন্য বরাদ্দ ওই টাকা স্থানীয় বনাধিকারিক এমনকী রেঞ্জ অফিসাররাও খরচ করতে পারতেন।” তিনি জানান,খরচের ভার ট্রেজারির হাতে চলে যাওয়ায় অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ থেকে গাড়ির তেলের খরচ জোগানো এমনকী বন-লাগোয়া গ্রামীণ মানুষের শস্যহানি থেকে প্রাণহানির ক্ষতিপূরণের টাকাও এখন নিয়মিত পাচ্ছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। সময়মতো টাকা দেওয়া যাচ্ছে না বলে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করে বন প্রহরাও প্রায় বন্ধের মুখে। ফলে জঙ্গগলে নজরদারি ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। এই সুযোগটাই নিচ্ছে চোরাশিরারিরা।

জঙ্গলের এই বেহাল দশাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গে এনসেফ্যালাইটিসে মৃত্যু-মিছিল নিয়ে সরকারের হেলদোল নেই। আর একানকার প্রধান ভরসা জঙ্গল নিয়েও নির্বিকার রাজ্য সরকার। একের পর এক গন্ডার নিধন চলছে, সরকার নীরব। বিষয়টি আমি কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রককে জানাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rhinosauras jaldapara poacher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE