Advertisement
E-Paper

হাতি-মৃত্যু রুখতে গাছ কাটার প্রস্তাব রেলের

ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রুখতে এবার আলিপুরদুয়ার-এনজেপি লাইনের দুধারে থাকা ২০০টি গাছ কাটার প্রস্তাব দিল রেল মন্ত্রক। সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের তরফে বন দফতরের কাছে ওই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। রেল সূত্রের খবর, ভুট্টা, কাঁঠাল ও ধান পাকার মরসুমে ওই জঙ্গল ছেড়ে হাতির পালের খাবারের খোঁজে লোকালয়ে হানা দেওয়ার প্রবণতা বাড়ে। জঙ্গল থেকে লোকালয়ে যাতায়াত করতে রেল লাইন পারাপার করতে হয়। ফলে, ভুট্টা, কাঁঠাল, ধানের লোভে হাতিদের রেল লাইন পারাপার বেড়ে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:২৫

ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু রুখতে এবার আলিপুরদুয়ার-এনজেপি লাইনের দুধারে থাকা ২০০টি গাছ কাটার প্রস্তাব দিল রেল মন্ত্রক। সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের তরফে বন দফতরের কাছে ওই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

রেল সূত্রের খবর, ভুট্টা, কাঁঠাল ও ধান পাকার মরসুমে ওই জঙ্গল ছেড়ে হাতির পালের খাবারের খোঁজে লোকালয়ে হানা দেওয়ার প্রবণতা বাড়ে। জঙ্গল থেকে লোকালয়ে যাতায়াত করতে রেল লাইন পারাপার করতে হয়। ফলে, ভুট্টা, কাঁঠাল, ধানের লোভে হাতিদের রেল লাইন পারাপার বেড়ে যায়। কিন্তু, দু’ধারের ঝাঁকড়া গাছের ডালপালা ঝুঁকে থাকায় দূর থেকে রেল লাইনে হাতি আছে কি না তা বুঝতে চালকদের অসুবিধে হয়। সেই কারণে অতীতে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষে হাতি মৃত্যুর একাধিক ঘটনা ঘটেছে।

গত সপ্তাহে আয়োজিত বৈঠকে ওই গাছগুলি কেটে ফেলার ব্যাপারে প্রস্তাব দেন রেলকর্তারা। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ারের ডিভিশনাল ম্যানেজার ধীরেন্দ্র কুমার বলেন, “ওই রুটের কিছু অংশে ২০০টি গাছ বিপজ্জনক ভাবে রয়েছে। এতে স্বল্প দূরত্ব থেকেও চালকের পক্ষে স্পষ্ট লাইন দেখার সমস্যা হচ্ছে। তা ছাড়া ঝড়বৃষ্টিতে সে সব গাছ লাইনের উপরে ভেঙেও পড়ে। সে সব ভেবেই দুর্ঘটনা এড়াতে গাছগুলি কাটতে বন দফতরকে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।” রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তার পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কা এড়াতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ঝুঁকি নেওয়ার পক্ষে নই। আগেও ওই রুটের লাইনের ধারে ৫০ টি গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এবারেও পুরো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।”

রেল ও বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার-এনজেপি পর্যন্ত প্রায় ১৫০ কিমি রেললাইনের বেশির ভাগ ডুয়ার্সের বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে রয়েছে। এনজেপি পার হওয়ার ৯ কিলোমিটার পরে থেকে ঘন জঙ্গল চিরে যাওয়া রেললাইনের দুই ধারের জঙ্গল থেকে হাতির পাল আকছার বাইরে বেরিয়ে লাইন পারাপার হয়। গত বছর চালসার কাছে জলঢাকা রেলসেতুতে ট্রেনে কাটা পড়ে ছ’টি হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রেল ও বন দফতরের কর্তারা কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশিকা মেনে যৌথ সমীক্ষা করেন। তাতে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ, ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করে নজরদারির সঙ্গে চালকের জন্য লাইনের দৃশ্যমানতার প্রতিবন্ধকতা এড়ানোর ওপরে জোর দেওয়া হয়। ওই সময় দুই দফতরের কর্তাদের যৌথ সমীক্ষাতেই আলিপুরদুয়ার থেকে মাদারিহাট পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার রেল পথের ২০০টি গাছ ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত করা হয়।

উত্তরবঙ্গের পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরা অবশ্য নির্বিচারে গাছ কাটার পক্ষপাতী নন। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার পাউন্ডেশনের (ন্যাফ) মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “লাইনের দু’ধার পরিস্কার না রাখলে ট্রেন চালকদের সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক। এতে সামান্য দূরত্ব থেকেও চালক সহজে বন্যপ্রাণী থাকলে দেখতে পারবেন না। বন্যপ্রাণ রক্ষায় সত্যি বিপজ্জনক হয়ে থাকা গাছ কাটা যেতে পারে। তবে যেটা কাটার প্রয়োজন নেই তা যেন কেটে ফেলা না হয়।” আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত জানিয়েছেন, ‘বিপজ্জনক’ হয়ে থাকা গাছ কাটা হলে আপত্তির ব্যাপার নেই। তিনি বলেন, “যথেচ্ছ গাছ কাটা যেন না হয়। তবে রেলকে ইঞ্জিনের আলোর তীব্রতা বাড়াতে হবে।”

koachbihar elephant eath
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy