এই সমস্যা হলে অন্য প্রেগন্যান্ট মহিলাদের সঙ্গে আলোচনা করুন।
প্রেগন্যান্সিতে পেটে ব্যথার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। এই সময় ছোটখাট ব্যথা, যে কোনও সমস্যাতেই উত্কণ্ঠায় ভুগতে থাকেন হবু মায়েরা। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, এই সময়ে বেশ কিছু কারণের জন্য পেটে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। মোটামুটি এই পাঁচটি কারণের জন্য আপনার পেটে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। প্রেগন্যান্সিতে পেটে ব্যথা হলে চিকিত্সকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে জেনে নিন যন্ত্রণার কারণ।
রাউন্ড লিগামেন্ট পেন
জরায়ু থেকে কুঁচকি পর্যন্ত দুটো বড় লিগামেন্ট থাকে। জরায়ু বড় হয়ে প্রসারিত হলে রাউন্ড লিগামেন্টের কাছাকাছি চলে আসার ফলে যন্ত্রণা হয়। ওঠা-বসা করতে গেলে, হাঁটলে, হাঁচি বা কাশি হলে ব্যথা অনুভূত হয়। সাধারণত দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে এই ব্যথা বাড়ে। প্রেগন্যান্সির সময় এই ব্যথা বেশ কষ্টদায়ক হলেও ক্ষতিকারক নয়।
কী করবেন
বিশ্রাম নিন ধীরে শোওয়া-বসা করুন হাঁচি বা কাশির সময় সামনের দিকে ঝুঁকে কাশুন চিকিত্সকরা এই সময় কিছু স্ট্রেচিং এক্সারসাইজের পরামর্শ দিয়ে থাকেন
প্রেগন্যান্সি গ্যাস পেন
প্রথমে তলপেটে ব্যথা দিয়ে শুরু হয়। তারপর তা ছড়িয়ে পরে পেটের উপরের দিক থেকে বুক, পিঠে। প্রোজেস্টেরন হরমোনই এর জন্য দায়ী। প্রেগন্যান্সিতে শরীরে প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে খাদ্যনালীর কার্যকারিতা ব্যাহত হয়। ফলে খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে। কোলনে খাবার বেশিক্ষণ থাকার জন্য গ্যাস উত্পন্ন হয়। জরায়ু বড় হয়ে যাওয়ার কারণে অন্যান্য অঙ্গের উপরও চাপ পড়ে। যার ফলে পরিপাক ক্রিয়া ধীরে হয়। হজম যত আস্তে হবে, ততই গ্যাসের পরিমাণ বাড়বে।
কী করবেন
সারা দিন ধরে অল্প অল্প করে খেতে থাকুন জল ও তরল বেশি করে খান সচল থাকুন এমন খাবার এড়িয়ে চলুন যা থেকে গ্যাস হতে পারে কার্বোনেটেড বেভারেজ একেবারেই চলবে না
কোষ্ঠকাঠিন্য
এই সমস্যা হলে অন্য প্রেগন্যান্ট মহিলাদের সঙ্গে আলোচনা করুন। অনেকেই প্রেগন্যান্সিতে এই সমস্যায় ভোগেন। হরমোনের মাত্রার তারতম্য, অতিরিক্ত বিশ্রাম, উত্কণ্ঠার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। যদি ডায়েটে পরিমাণ মতো ফাইবার ও জল না থাকে তা হলেও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
কী করবেন
ডায়েটে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখুন জল বেশি করে খান নিয়মিত হালকা শরীর চর্চা করুন চিকিত্সককে সমস্যার কথা জানান ও প্রয়োজনে ওষুধ খান
ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন
প্রেগন্যান্সির ৬ সপ্তাহ কেটে গেলেই ইউরিনারি ট্রাক্ট বা ব্লাডার ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ে। প্রস্রাবের সময় জ্বালা করে, তলপেটে চাপ, বার বার প্রস্রাব পাওয়ার সমস্যা হয়। গর্ভাবস্থায় এই ঝুঁকি বাড়ে। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, জরায়ু ব্লাডারের ঠিক উপরেই থাকে। জরায়ুর ওজন বাড়তে থাকলে তা ব্লাডারে চাপ দেওয়ার ফলে প্রস্রাব ঠিক মতো বেরোতে পারে না। ফলে ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ে। সাবধান না হলে কিডনির উপর প্রভাব পড়তে পারে। সময়ের আগেই গর্ভ যন্ত্রণা শুরু হতে পারে। অস্বাভাবিক কম ওজনের শিশু জন্মানোরও ঝুঁকি থাকে।
আরও পড়ুন: মর্নিং সিকনেস দুর্বলতা নয়, সুস্থ প্রেগন্যান্সির লক্ষণ
কী করবেন
চিনি ছাড়া ক্র্যানবেরি জুস খান জল খান বেশি করে যৌন মিলনের পর অবশ্যই প্রস্রাব করুন
ব্রাক্সটন-হিকস কনট্রাকশন
এটা প্রেগন্যান্সির সময় খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। জরায়ুর পেশীর সংকোচনের কারণে পেটে চাপ অনুভূত হয়। গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহ পর্যন্ত মাঝে মাঝেই এ রকম হতে পারে। যদি খুব বেশি সমস্যা হয় তা হলে অবশ্যই চিকিত্সককে জানান। ডেলিভারির সময় এগিয়ে এলে কিন্তু এই ব্যথা গর্ভ যন্ত্রণার লক্ষণ হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy