Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বয়স শুধুই একটা সংখ্যা, জিতে বললেন ধোনি

তখনও কিন্তু ধোনির মধ্যে উচ্ছ্বাসের লেশমাত্র নেই। সবার পিছনে মুখে সাফল্যের তৃপ্তিমাখা হাসি নিয়ে চেনা ছন্দেই হাঁটা শুরু করলেন মাঠের দিকে।

অতিথি: রবিবার বাবার আইপিএল জয়ের সাক্ষী থাকল জিভাও। ফাইল চিত্র

অতিথি: রবিবার বাবার আইপিএল জয়ের সাক্ষী থাকল জিভাও। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০৪:৪৮
Share: Save:

শেষ ওভারে যখন জয় প্রায় হাতের মুঠোয়, তখন থেকেই ডাগআউটের সামনে বাউন্ডারি লাইনে কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন চেন্নাই সুপার কিংসের ক্রিকেটাররা। অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি কিন্তু তখনও ডাগআউটের পিছনের সারিতে বসে।

নির্লিপ্ত, হিমশীতল অধিনায়ককে দেখে বোঝার উপায়ই নেই তাঁর দল বিশ্বের সেরা ক্রিকেট লিগে তৃতীয় বার চ্যাম্পিয়ন হতে চলেছে। শুধু কি তাই? গড়াপেটায় জড়িয়ে দু’বছর নির্বাসনে থাকার পরে ফিরে এসেই চ্যাম্পিয়ন। এর চেয়ে বড় জবাব আর কী হতে পারে? ধোনির গা থেকে ‘ক্যাপ্টেন কুল’ তকমাটা মুছে দিতে পারল না এই পরিস্থিতিও।

অম্বাতি রায়ডুর বাউন্ডারিতে যখন ট্রফি জয়ের মুহূর্ত এল সিএসকে-র, মাঠের পাশে দাঁড়ানো ধোনির সতীর্থরা প্রত্যেকেই দৌড়লেন পিচের দিকে। গোটা ওয়াংখেড়ে তখন সমর্থকদের চিৎকারে কাঁপছে। মাঠের মাঝখানে হলুদবাহিনীর বিজয়োৎসব শুরু হয়ে যায় নায়ক শেন ওয়াটসন ও রায়ডুকে কোলে তুলে নিয়ে।

তখনও কিন্তু ধোনির মধ্যে উচ্ছ্বাসের লেশমাত্র নেই। সবার পিছনে মুখে সাফল্যের তৃপ্তিমাখা হাসি নিয়ে চেনা ছন্দেই হাঁটা শুরু করলেন মাঠের দিকে। সেই হাসি মুখে নিয়েই নিজের দলের ছেলেদের ও বিপক্ষের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাতে দেখা যায় তাঁকে। এর মধ্যে মাঠে ঢুকে পড়ে তাঁর কন্যা জিভাও। ধোনির হাসি চওড়া হতে দেখে মনে হল যেন জয়ের সেরা উপহারটাই পেয়ে গেলেন। জিভাকে কোলে তুলে নিলেন তিনি। সেও খুশি বাবাকে এই প্রথম ট্রফি জিততে দেখে। তার পরে শুরু দু’জনের খুনসুটি। মেয়েকে কাছে পেয়েই শুধু উচ্ছ্বসিত দেখাল সিএসকে অধিনায়ককে।

পুরস্কার নিতে এসে যখন ধোনিকে প্রশ্ন করা হয় এই সাফল্য উদযাপন করবেন কী ভাবে, তখনও তাঁর মুখে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো কোনও উত্তর ছিল না। বলেন, ‘‘কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। কাল চেন্নাই ফিরে যাব। তার পরে সবাই মিলে উৎসব পালন করা যাবে।’’

টি-টোয়েন্টিতে তারুণ্যই সব? ধোনিরা তো প্রবাদটা উল্টেই দিলেন। আইপিএলে সবচেয়ে বেশি বয়সের ক্রিকেটারদের নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে ধোনি বলছেন, ‘‘আমার কাছে বয়সটা একটা সংখ্যা মাত্র। বয়সের চেয়ে ফিটনেসই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেমন রায়ডু। ও ৩৩, কিন্তু যথেষ্ট ফিট। সারা মাঠ জুড়ে শট মারতে পারে। যারা মাঠে বেশি দৌড়তে পারে, তাদেরই ক্যাপ্টেনরা বেশি চায়। বয়স ১৯-২০ হলে তাকে ছটফটে হতে হবে। ওয়াটসন ৩৬-এও কী করল, নিজের চোখেই তো দেখলেন।’’

আগের আইপিএল জয়গুলির চেয়ে এটা বাড়তি আনন্দের কি না, জানতে চাইলে ধোনি বলেন, ‘‘ঠিক বলতে পারব না। অনেকে পরিসংখ্যানের কথা বলেন। যেমন আজ ২৭ তারিখ, আমার জার্সির নম্বর সাত আর এটা আমাদের সপ্তম ফাইনাল। জেতার পক্ষে এগুলো যথেষ্ট। কিন্তু কোনওটাই প্রভাব ফেলেনা।’’

ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার ডোয়েন ব্র্যাভোর মুখেও অভিজ্ঞতার কথা। বলেন, ‘‘চাপের মুখে যে অভিজ্ঞতাই কাজে লাগবে আমাদের, তা আগেই বলেছিলাম। ওয়াটসন সেটাই বুঝিয়ে দিল। গত দু’বছর আমরা একসঙ্গে ছিলাম না। এ বার একটা ম্যাচের পরে চেন্নাই থেকেও চলে যেতে হয় আমাদের। তবু আমাদের লক্ষ্যস্থির ছিল সারা প্রতিযোগিতায়। রবীন্দ্র জাডেজা বলেন, ‘‘দু’বছর পরে ফিরে এসে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা বেশি আনন্দের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE