দ্বৈরথ: বড় ম্যাচের আগের দিন অনুশীলনে মগ্ন মোহনবাগানের দিপান্দা ডিকা (নিজস্ব চিত্র) ও ইস্টবেঙ্গলের জনি আকোস্তা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
এক দিকে সদ্য সমাপ্ত রাশিয়া বিশ্বকাপে কোস্টা রিকার হয়ে খেলে আসা ইস্টবেঙ্গলের জনি আকোস্তা। অন্য দিকে, দুরন্ত ছন্দে থাকা মোহনবাগানের ‘গোলমেশিন’ দিপান্দা ডিকা। রবিবার যুবভারতীতে কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের ডার্বিতে আকর্ষণের কেন্দ্রে এই দুই তারকার দ্বৈরথ। যা নিয়ে বাহাত্তর ঘণ্টা আগেই বেজে গিয়েছে দামামা।
ইস্টবেঙ্গল শিবিরে যখন টানা নয় বার কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ জয়ের হাতছানি, মোহনবাগানে তখন শেষ ছ’টি বড় ম্যাচে অপরাজিত থাকার আত্মবিশ্বাস। কিন্তু বঙ্গসমাজের সেই দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার ম্যাচের আগে দুই প্রশিক্ষক ভিন্ন মেজাজে।
সবুজ-মেরুন শিবিরের কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী আশ্চর্য রকম শান্ত। শনিবার সকালে মোহনবাগান মাঠে ডার্বির প্রস্তুতি সেরে আলো নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন ক্লাব তাঁবুতে নিজের ঘরে। যুবভারতীতে লাল-হলুদের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক অনুশীলনের পরে সাংবাদিক বৈঠক সেরেই রওনা দিলেন বাড়ির দিকে। গাড়িতে ওঠার আগে সুভাষের হুঙ্কার, ‘‘ডার্বিতে আমরা শেষ ছ’টি জিততে পারিনি। সেই চাকাটা এ বার উল্টোতে হবে। যে কোনও গাড়ি কাদায় আটকে গেলে তাকে তোলা ভীষণই কষ্টকর। তবে সেটা অসম্ভবও নয়।’’ কয়েক দিন আগে ফুটবলারদের মানসিকতা নিয়ে উদ্বেগ জানানো সুভাষের আশ্বাস, ‘‘ডার্বিতেই বোঝা যাবে খুনে মানসিকতা ফিরল কি না।’’
মোহনবাগান কোচের গলায় অবশ্য সেই ঝাঁঝ নেই। বদলে বিপক্ষ দল ও তার টিডিকে নিয়ে সমীহ। বলে দেন, ‘‘সুভাষদা (ভৌমিক) ভারতীয় ফুটবলের সেরা কোচ। তিনি যতগুলো ডার্বিতে কোচিং করিয়েছেন, তার সংখ্যা আমার বয়সের চেয়েও বেশি। রবিবারের ম্যাচে এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল।’’
গত দু’দিনে টিকিটের হাহাকার মনে করাচ্ছে সত্তর-আশির উন্মাদনা। যার রেশ দেখা গিয়েছে দুই দলের অনুশীলনে সমর্থকদের জমায়েতেও।
হাজির ছিলেন প্রাক্তনরাও। মোহনবাগানে শিশির ঘোষকে দেখা গেল, শঙ্কর রায়-অবিনাশ রুইদাসদের ধরে ধরে বলছেন, ‘‘রবিবার মাঠে নামার সুযোগ পেলে দেখিয়ে দে, তোরাও পারিস। বাঙালি ছেলেরাও পারে। মনে রাখবি, এই ম্যাচে নজর কাড়তে পারলে কিন্তু সমর্থকদের হৃদয়ে থেকে যাবি।’’ যা শুনে চোয়াল শক্ত হয়ে যায় এই দুই ফুটবলারের।
ইস্টবেঙ্গলে আবার হাজির সুভাষের আসিয়ান জয়ী দলের অন্যতম সদস্য ষষ্ঠী দুলে। তিনিও উজ্জীবিত করে গেলেন জনি আকোস্তা, জবি জাস্টিনদের।
দু’দলের দুই প্রশিক্ষকই ম্যাচটা জিততে মরিয়া। মিল এখানেই। সুভাষ বলছেন, ‘‘এটা এমন একটা ম্যাচ যেখানে নিজেদের সব কিছু দিয়ে চেষ্টা করতে হয়।’’ শঙ্করলাল তখন বলছেন, ‘‘এই ম্যাচে সবাই নিজেকে ছাপিয়ে যেতে চায়। এই ম্যাচটা সম্মানের লড়াই। লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে এ বার জিততেই হবে আমাদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy