প্রস্তুত: কটকে খোশমেজাজেই আছেন মোহনবাগানের অস্ত্র সনি। নিয়ে নিলেন ফেড কাপের শপথ। নিজস্ব চিত্র
প্রশ্ন: ফেডারেশন কাপে সোমবার থেকে অভিযান শুরু করছে মোহনবাগান। কিন্তু আই লিগ হাতছাড়া হওয়ার যন্ত্রণা কি ভুলতে পেরেছেন?
সনি নর্দে: মাত্র এক পয়েন্টের জন্য আই লিগ জিততে না পারার যন্ত্রণা ফুটবলার হিসেবে ভুলে যাওয়া এত সহজ নয়। ২২ এপ্রিল আইজল এফসি-র কাছে হারের পরে আমরা প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছিলাম। সারারাত কেউ ভাল করে ঘুমোতে পারিনি। কিন্তু অতীত নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। সামনের দিকে তাকাতে হবে। কারণ, এই মরসুমে ফেডারেশন কাপ-ই আমাদের শেষ আশা ট্রফি জয়ের। কোনও মতেই এই টুর্নামেন্ট থেকে খালি হাতে ফিরতে চাই না।
প্র: দল এবং আপনি কতটা তৈরি ফেডারেশন কাপের জন্য?
সনি: আমরা একশো শতাংশ তৈরি। সিনিয়র-জুনিয়র প্রত্যেকেই খেলার মধ্যে আছে। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ছন্দটা ধরে রাখা। যদি আমরা সেটা করতে পারি, আশা করি কোনও সমস্যা হবে না।
প্র: তা হলে কি ধরে নেওয়া যায়, মোহনবাগান ফেডারেশন কাপ নিয়েই কটক থেকে কলকাতায় ফিরছে?
সনি: ফুটবলে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। আমরা ভাল খেলার প্রতিশ্রুতি দিতে পারি। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হব, সেটা বলা সম্ভব নয়।
প্র: ক্লান্তি ও ফিটনেস নিয়ে সমস্যার কারণে মরসুমের শেষে ফেডারেশন কাপ খেলাটা ফুটবলারদের কাছে নাকি কঠিন চ্যালেঞ্জ। আপনি কী মনে করেন?
সনি: ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, পুরো ব্যাপারটাই মানসিক। যে মানসিক ভাবে চাঙ্গা থাকবে, তার খেলতে কোনও সমস্যা হবে না। ক্লান্তিও অনুভব করবে না। মাথার মধ্যে একটা জিনিস খুব ভাল করে ঢুকিয়ে নিতে হবে— এটাই আমাদের শেষ টুর্নামেন্ট। চ্যাম্পিয়ন না হয়ে ফেরা চলবে না। তা হলেই কাজটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ম্যাঞ্চেস্টার সিটি তিনে
প্র: আই লিগ চ্যাম্পিয়ন আইজল এফসি ও ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে এক গ্রুপে না থাকাটা নিশ্চয়ই স্বস্তির?
সনি: কীসের স্বস্তি? আইজল, ইস্টবেঙ্গল না থাকলেও বেঙ্গালুরু এফসি, ডিএসকে শিবাজিয়ান্স ও লাজং এফসি-র মতো শক্তিশালী দলগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের খেলতে হবে। মনে রাখবেন, ফেডারেশন কাপে কোনও ম্যাচই সহজ নয়। প্রত্যেকেই মরসুমের শেষ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপাবে।
প্র: আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে হারটাই কি মোহনবাগানের আই লিগ হাতছাড়া হওয়ার প্রধান কারণ?
সনি: না, নিজেদের ভুলেই আমরা আই লিগ হাতছাড়া করেছি। এ বছর ঘরের মাঠে আমরা বেশি ম্যাচ জিতেছি। কিন্তু অ্যাওয়ে ম্যাচে প্রচুর পয়েন্ট নষ্ট করেছি। সেটা না করলে হয়তো আমরাই চ্যাম্পিয়ন হতাম। ফেডারেশন কাপে প্রধান লক্ষ্যই হবে সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি না করা।
প্র: আর এএফসি কাপে মেজিয়া-র বিরুদ্ধে পাঁচ গোলে হারের ধাক্কা?
সনি: আমার মনে হয় না মেজিয়া ম্যাচে হারের প্রভাব দলের উপর পড়বে। সকলেই পেশাদার। সকলেই জানে এই টুর্নামেন্টের গুরুত্ব।
প্র: ফেডারেশন কাপ তো মাত্র পাঁচ ম্যাচের টুর্নামেন্ট। কী স্ট্র্যাটেজি হওয়া উচিত মোহনবাগানের?
সনি: স্ট্র্যাটেজি তো কোচ ঠিক করবেন। এ সব তাঁরই কাজ। আর আমাদের কাজ হচ্ছে মাঠে নেমে সেরাটা দেওয়া। প্রত্যেকটা ম্যাচ ফাইনাল ধরে নিয়েই আমাদের খেলতে নামা উচিত। একটা ড্র বা হার কিন্তু বিপদ ডেকে আনতে পারে।
প্র: মোহনবাগান ছাড়া ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবিদার আর কারা বলে মনে হয়?
সনি: আটটা দলই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবিদার। কাউকে উপেক্ষা করা যাবে না।
প্র: শিলিগুড়ির ডার্বিতে গোল করে অদৃশ্য স্টেনগান হাতে নিয়ে গুলি চালানোর ভঙ্গিতে উৎসব করেছিলেন। কটকে কী চমক থাকছে?
সনি: (হাসি) আমি ওরকম কিছু ভেবে মাঠে নামি না। আমার প্রথম লক্ষ্য থাকে দলকে জেতানো। তার পরে সমর্থকদের আনন্দ দেওয়া।
প্র: এই মুহূর্তে ফেডারেশন কাপ ছাড়াও আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে সনি নর্দে কি আগামী মরসুমে মোহনবাগানেই খেলবেন?
সনি: আমি তো মোহনবাগানেই খেলতে চাই। আমার কাছে অর্থের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সমর্থকদের ভালবাসা ও আবেগ। তবে আগামী মরসুমেও আমি সবুজ-মেরুন জার্সি পরে খেলব কি না, সেটা পুরোটাই নির্ভর করছে ক্লাব কর্তাদের উপর।
প্র: মানে?
সনি: মোহনবাগানের অন্দরমহলের রসায়নটা খুব জটিল। কেউ জানে না আগামী মরসুমে তার কী হবে। কে থাকবে, কাকে ছেঁটে ফেলা হবে সেটা বোঝা কঠিন। এখন আমি বললাম, মোহনবাগানেই থাকব। অথচ মরসুম শেষ হওয়ার পরে কর্তারা কেউ আমাকে নেওয়ার আগ্রহ দেখালেন না, তখন কী হবে? আপাতত আমি শুধু এই মরসুমটা নিয়েই ভাবতে চাই। তার পরে দেখা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy