Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
দুঃস্বপ্নের বার্লিনে স্বপ্নের ট্রফি জেতার লড়াই মেসির

বার্সা আমায় অনেক দিয়েছে এ বার কিছু ফিরিয়ে দিতে চাই

ন’বছর আগে এই মাঠের রিজার্ভ বেঞ্চে বসেছিলেন তিনি। বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে চোখের সামনে তাঁর আর্জেন্তিনা তখন জার্মানির বিরুদ্ধে ১-১ ড্র করছে। ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে যায়। তবুও ওয়ার্ম আপ করার ডাক পড়েনি তাঁর। টাইব্রেকারে একের পর এক ব্যর্থতা দেখতে হয়েছিল তাঁকে। হারের যন্ত্রণা রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই অনুভব করতে হয়েছিল।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেলতে যাওয়ার আগে ঘরের মাঠে শেষ প্র্যাকটিস। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেলতে যাওয়ার আগে ঘরের মাঠে শেষ প্র্যাকটিস। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৫ ০৪:১১
Share: Save:

ন’বছর আগে এই মাঠের রিজার্ভ বেঞ্চে বসেছিলেন তিনি। বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে চোখের সামনে তাঁর আর্জেন্তিনা তখন জার্মানির বিরুদ্ধে ১-১ ড্র করছে। ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে যায়। তবুও ওয়ার্ম আপ করার ডাক পড়েনি তাঁর। টাইব্রেকারে একের পর এক ব্যর্থতা দেখতে হয়েছিল তাঁকে। হারের যন্ত্রণা রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই অনুভব করতে হয়েছিল।

আজ আর তাঁকে রিজার্ভ বেঞ্চে বসিয়ে রাখার সাহস কোনও কোচের নেই। আজ তিনি তরুণ কোনও উঠতি তারকা নন। আজ বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার। বা হয়তো সেরাই। তিনি— লিওনেল মেসি। যিনি ফিরতে চলেছেন তাঁর সেই ‘অপয়া’ বার্লিনে। যে মাঠে দুঃস্বপ্নের দিন দেখতে হয়েছিল তাঁকে, সেই মাঠেই স্বপ্নের ট্রফি জেতার লড়াই এ বার তাঁর সামনে।

“মেসি অন্য গ্রহের ফুটবলার। যে আমাদের মতো মানুষদের সঙ্গে খেলে। তবে আশা করছি,
৬ জুন ও আবার পৃথিবীতে ফিরে সাধারণ মানুষের মতোই খেলবে।” —জিয়ানলুইগি বুফোঁ।

শনিবার (ভারতীয় সময় রাত সওয়া বারোটা) বার্লিনের মহারণে নামার আগে অবশ্য সেই দিনের কথা মনে করতে চাইছেন না মেসি। উয়েফার ওয়েবসাইটে বলছেন, ‘‘যা হয়েছে, তা হয়েছে। এটা একটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল। অনেক পরিশ্রমের পরে ফাইনালে পৌঁছেছি। বাকি ট্রফির মতো এটাও জিততে চাই।’’ এই মরসুমে দলের পর দলকে উড়িয়ে দিচ্ছে তাঁর বার্সেলোনা। তাঁর দুই সতীর্থ লুই সুয়ারেজ ও নেইমারের সঙ্গে মিলে বিপক্ষ কোচেদের রাতের ঘুম ওড়াচ্ছেন। তাতেও আত্মতুষ্ট হয়ে পড়ছেন না এলএম টেন। বরং জুভেন্তাস অঘটন ঘটানোর ক্ষমতা রাখে সেই কথাই জানাচ্ছেন মেসি। ‘‘জুভেন্তাস খুব ভাল দল। ওদের হাল্কা ভাবে নিলে বিপদ আছে। তাই অন্য সব ফাইনালের মতোই প্রস্তুতি নিতে হবে’’, বলেন মেসি।

তিনি, সুয়ারেজ ও নেইমার মিলে এখনও পর্যন্ত ১২০ গোল করেছেন। সাফল্যের রহস্য কী? মেসির মতে, ‘‘মাঠের বাইরেও আমরা খুব ভাল বন্ধু। যে কারণে মাঠে একসঙ্গে খেলতে অসুবিধা হয় না।’’ শনিবার গোল করতে পারলে মেসি প্রথম ফুটবলার হবেন যিনি তিনটে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে গোল করবেন। সে সব নিয়ে অবশ্য ভাবছেন না মেসি। যাঁর কাছে, ব্যক্তিগত রেকর্ডের আগেও বেশি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি। ‘‘গত দুটো ফাইনালে গোল করেছি। দুটোই স্মরণীয় ছিল। তবে ট্রফিটা না জিততে পারলে কোনও কিছুরই মূল্য নেই।’’ সমর্থকদের জন্য ফের ত্রিমুকুট জিততে চান এলএম টেন। ২০০৯-এর পর ফের সেই নজিরের সামনে বার্সেলোনা। ‘‘বার্সেলোনা আমায় অনেক কিছু দিয়েছে। এ বার আমার ফিরিয়ে দেওয়ার পালা। সমর্থকদের থেকে পাওয়া ভালবাসা ভুলতে পারব না কোনও দিন,’’ বলছেন বার্সা মহাতারকা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেলতে শুক্রবার সকালেই বার্লিন যাবে বার্সেলোনা।

সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।

মেসি যখন তাঁর ‘অপয়া’ মাঠে ফিরছেন, জুভেন্তাসের ফুটবলাররা আবার তাঁদের স্বপ্নের মঞ্চে প্রত্যাবর্তন করতে চলেছেন। আন্দ্রে পির্লো, জিয়ানলুইগি বুফোঁ-র মতো তারকারা এই বার্লিনের মাঠেই তাঁদের কেরিয়ারের সর্বশ্রেষ্ঠ মুহূর্তটা উপভোগ করেছিলেন। ২০০৬ সালে ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল ইতালি। শনিবার সেই স্মরণীয় মাঠে নামার আগে কাপ জয়ের স্মৃতি থেকে উদ্দীপ্ত হতে চাইছে ইতালির ক্লাব। জুভেন্তাসের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার আন্দ্রে পির্লো বলছেন, ‘‘অনেক বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা আজও ভুলতে পারি না। সেই এক আনন্দটাই আবার ফিরে পেতে চাই শনিবার রাতে।’’ পির্লোর মতে ফাইনালে ‘ফেভারিট’ সেই বার্সেলোনাই। ‘‘কোনও সন্দেহ নেই বার্সেলোনা বেশি শক্তিশালী। কিন্তু আমরা জানি কী করতে হবে। এটা আমার চতুর্থ ফাইনাল। আশা করছি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেই জুভেন্তাস ছাড়ব।’’

ফাইনালের আগে আবার বড় ধাক্কা জুভেন্তাসের। দলের ডিফেন্সের স্তম্ভ জিওর্জিও কিয়েলিনি চোটের জন্য খেলতে পারবেন না। যার জায়গায় হয়তো পরিবর্তে আসবেন অ্যাঞ্জেলো ওগবোনা।

এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে উঠেও ব্যর্থতার স্বাদ পেতে হয়েছিল জিয়ানলুইগি বুফোঁকে। প্রায় প্রতিটা বড় ট্রফি জিতে নেওয়া ইতালীয় গোলকিপার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেই অবসর নিতে চান। ‘‘আমরা বার্লিনে শুধু ঘুরতে যাওয়ার জন্য যাচ্ছি না। যাচ্ছি ট্রফি জিততেই।’’

বুফোঁর হুঙ্কারেই পরিষ্কার, জুভেন্তাসও অঘটন ঘটাতে তৈরি। তাদের সামনেও যে ত্রিমুকুট জেতার চ্যালেঞ্জ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE