উল্লাস: চার রানে দুই উইকেট রাসেলের। শুক্রবার। গেিট ইমেজেস
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে তাঁরা শেষ বার খেলেছে সেই ১৯৮৩ সালে। দীর্ঘ ছত্রিশ বছর পরে সেই ইংল্যান্ডের মাটিতেই বিশ্বকাপ এ বার। আর সেখানে তাদের প্রথম ম্যাচে পুরনো মেজাজেই খেলল জেসন হোল্ডারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ম্যাচেই পাকিস্তানকে তারা হারিয়ে দিল সাত উইকেটে। সেই আশির দশকের মতোই ম্যাচে ঝলমল করে উঠল ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস আক্রমণ। দু’ইনিংস মিলিয়ে ২১২ বলের মধ্যেই ম্যাচ শেষ করে দেন ক্রিস গেলরা।
টস জিতে শুরুতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক হোল্ডার। কিন্তু শুরু থেকেই ক্যারিবিয়ান পেসারদের শরীর লক্ষ্য করে খাটো লেংথের বল সামলানোর উত্তর ছিল না পাক ব্যাটসম্যানদের কাছে। ২১.৪ ওভারের মধ্যেই পাকিস্তান অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। বিশ্বকাপে এটাই পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান। দশম উইকেটে মহম্মদ আমির (ন.আ ৩) ও ওয়াহাব রিয়াজ় (১৮) জুটি ২২ রান না তুললে আরও কমে শেষ হয়ে যেতে পারত পাক ইনিংস।
জবাবে ১৩.৪ ওভারের মধ্যেই তিন উইকেট হারিয়ে জয়ের রান তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তারা তোলে ১০৮-৩। ৫.৪ ওভার বল করে ২৭ রানে চার উইকেট নেন ম্যাচের সেরা ওশেন থমাস। দুরন্ত বল করে ম্যাচ শেষে তিনি বলেও গেলেন, ‘‘ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয় এনে দিতে পারলে কার না ভাল লাগবে। স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস ম্যাচ সেরার পুরস্কার দিলেন। এটা উপরি প্রাপ্তি। রাসেলই বুঝিয়ে দিয়েছিল কোথায় বল রাখতে হবে।’’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দুরন্ত জয় দেখে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার ব্রায়ান চার্লস লারা। তাঁর টুইট, ‘‘দারুণ বোলিং হয়েছে। এই পরিকল্পনাই দরকার।’’
ওশেন থমাস ম্যাচ সেরা হলেও ছয় ওভারে প্রথম পরিবর্ত বোলার হিসেবে এসে শর্ট বলে পাকিস্তানের দুর্বলতা আরও প্রকট করে দেন আন্দ্রে রাসেল। এ দিন, ব্যাট নয়, বল হাতেই ঝলসে উঠলেন তিনি। রাসেলই নেতৃত্ব দেন ক্যারিবিয়ান বোলিংকে। তিন ওভার বল করে একটি মেডেন-সহ চার রানে দুই উইকেট নেন তিনি। ১৮টি বলের মধ্যে ১৫টি বলই তিনি শর্ট লেংথে করেন। যা সামলাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফেরেন ফখর জ়মান (২২) ও হ্যারিস সোহেল (৮)। তার আগেই শেল্ডন কটরেল (১-১৮) ইমাম উল হককে (২) ফিরিয়ে পাকিস্তানকে প্রথম ধাক্কা দেন। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান বাবর আজ়মের (২২)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসারদের শর্ট বলের সামনে ৬৮ বল খেলে সাত উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান তোলে পাকিস্তান।
জবাবে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন ক্রিস গেল (৩৪ বলে ৫০) ও শেই হোপ (১১)। কিন্তু মহম্মদ আমিরের বলে হোপ ও ড্যারেন ব্র্যাভো (০) দ্রুত ফিরে যান। এই পরিস্থিতিতে ১৯ বলে অপরাজিত ৩৪ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় তুলে আনেন নিকোলাস পুরান ও শিমরন হেটমায়ার (ন.আ ৭)।
প্রথম ম্যাচ জিতে খুশি ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। তিনি বলছেন, ‘‘শুরুটা ভালই হল। রাসেল হল আমাদের কার্যকর ক্রিকেটার। ওর দেখানো পথেই আজ বল করে গেল শেল্ডন ও ওশেন। ১০০ শতাংশ ফিট না হলেও রাসেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে নামলেই একশো শতাংশ দেয়।’’
স্কোরকার্ড
পাকিস্তান ১০৫ (২১.৪)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০৮-৩ (১৩.৪)
পাকিস্তান
ইমাম ক হোপ বো কটরেল ২•১১
ফখর বো রাসেল ২২•১৬
বাবর ক হোপ বো থমাস ২২•৩৩
সোহেল ক হোপ বো রাসেল ৮•১১
সরফরাজ় ক হোপ বো হোল্ডার ৮•১২
হাফিজ় ক কটরেল বো থমাস ১৬•২৪
ইমাদ ক গেল বো হোল্ডার ১•৩
শাদাব এলবিডব্লিউ বো থমাস ০•১
হাসান ক কটরেল বো হোল্ডার ১•৪
ওয়াহাব বো থমাস ১৮•১১
আমির ন. আ. ৩•৬
অতিরিক্ত ৪
মোট ১০৫ (২১.৪)
পতন: ১-১৭ (ইমাম, ২.৬), ২-৩৫ (ফখর, ৫.৫), ৩-৪৫ (সোহেল, ৯.৪), ৪-৬২ (বাবর, ১৩.১), ৫-৭৫ (সরফরাজ়, ১৬.১), ৬-৭৭ (ইমাদ, ১৬.৬), ৭-৭৮ (শাদাব, ১৭.৩), ৮-৮১ (হাসান, ১৮.৩), ৯-৮৩ (হাফিজ়, ১৯.৩), ১০-১০৫ (ওয়াহাব, ২১.৪)।
বোলিং: শেলডন কটরেল ৪-০-১৮-১, জেসন হোল্ডার ৫-০-৪২-৩, আন্দ্রে রাসেল ৩-১-৪-২, কার্লোস ব্রাথওয়েট ৪-০-১৪-০, ওসেন থমাস ৫.৪-০-২৭-৪।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
গেল ক শাদাব বো আমির ৫০•৩৪
হোপ ক হাফিজ় বো আমির ১১•১৭
ব্র্যাভো ক বাবর বো আমির ০•৪
পুরান ন. আ. ৩৪•১৯
হেটমায়ার ন. আ. ৭•৮
অতিরিক্ত ৬ মোট ১০৮-৩ (১৩.৪)
পতন: ১-৩৬ (হোপ, ৪.৩), ২-৪৬ (ব্র্যাভো, ৬.২), ৩-৭৭ (গেল, ১০.৫)।
বোলিং: মহম্মদ আমির ৬-০-২৬-৩, হাসান আলি ৪-০-৩৯-০, ওয়াহাব রিয়াজ় ৩.৪-১-৪০-০।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy