Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাস্ট উইন ম্যাচ চাপে ভারত, চনমনে ফিঞ্চরা

সেই কারণে অনেকেই একটি ম্যাচের হারের ভিত্তিতে তাঁদের সম্ভাবনা খারিজ করে দিতে নারাজ। 

পরীক্ষা: প্রথম ম্যাচে হারার পরে দ্রুত ভুল শুধরে নিতে হবে কোহালিদের। —ফাইল চিত্র ।

পরীক্ষা: প্রথম ম্যাচে হারার পরে দ্রুত ভুল শুধরে নিতে হবে কোহালিদের। —ফাইল চিত্র ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:১২
Share: Save:

কাছাকাছি এসেও ব্রিসবেনে জয়ের মুখ দেখা হয়নি। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে গেলে আজ, শুক্রবার মেলবোর্নে জিততেই হবে বিরাট কোহালিদের। টানা সাতটি দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে ভারত। সেই কারণে অনেকেই একটি ম্যাচের হারের ভিত্তিতে তাঁদের সম্ভাবনা খারিজ করে দিতে নারাজ।

ব্রিসবেনের ফলাফল দু’টি দলের অবস্থানকেও যেন রাতারাতি পাল্টে দিয়ে গিয়েছে। বল-বিকৃতি কেলেঙ্কারির জেরে নির্বাসিত স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারের অনুপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়া প্রবল চাপে ছিল এই ম্যাচের আগে পর্যন্ত। আর কোহালির ভারতকে মনে করা হচ্ছিল, হট ফেভারিট। কিন্তু ব্রিসবেনে জেতার পরে অস্ট্রেলিয়া অনেকটাই তাদের পুরনো সম্মান উদ্ধার করতে পেরেছে। তেমনই কোহালিরা প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়ায় নানা প্রশ্নের মুখে পড়েছেন।

এমনকি, শেন ওয়ার্ন পর্যন্ত তোপ দাগা বন্ধ করে অস্ট্রেলিয়ার এই জয়ের প্রশংসা করেছেন। ওয়ার্ন দু’দিন আগেও বলেছেন, ম্যাচ পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনও জ্ঞানই নেই অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের। কাণ্ডজ্ঞানহীন ক্রিকেট খেলে তাঁরা প্রায় রোজই হারছেন। কিংবদন্তি লেগস্পিনার এ দিন পুরোপুরি সুর পাল্টে বলে দিয়েছেন, ‘‘দারুণ জয় ছিনিয়ে নিয়েছ, অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ পরিস্থিতি সম্পর্কেও তোমাদের অনেক বেশি ওয়াকিবহাল দেখিয়েছে।’’ এখানেই না থেমে যোগ করেছেন, ‘‘অনেক দিন পরে অস্ট্রেলিয়াকে দেখে মনে হচ্ছিল, তারা যেন খেলাটা উপভোগও করেছে। সেটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।’’

বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ১৭ ওভারে ১৫৮ তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। শেষ ছয়টি ম্যাচে এটাই তাদের সেরা স্কোর। রান তাড়া করতে নেমে ১১ রান বেশি করেও ভারত হেরে যায় ডাকওয়ার্থ-লুইস প্রক্রিয়ায়। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বেশি রান করেও ভারতের হেরে যাওয়ার ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠে পড়েছে এই নিয়ম নিয়ে। কথা উঠেছে, সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীরা কী করে বুঝতে পারবেন এই নিয়ম? কী ভাবে এই রহস্যের কিনারা তাঁদের সামনে করা হবে যে, বেশি রান করেও কেন হেরে গেল একটা দল!

ঘটনা হচ্ছে, ম্যাচ শেষে ব্রিসবেনে উপস্থিত সাধারণ দর্শকদের জন্য কেউ অঙ্কটা পরিষ্কারও করে দেওয়ার চেষ্টা করেননি যে, বেশি রান করেও কেন ভারত হারল। ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়ম অনুযায়ী, বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার সময় অস্ট্রেলিয়ার হাতে উইকেট বেশি থাকায় ভারতের সামনে টার্গেট স্কোর বেড়ে গিয়েছিল। সেটা ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত অনেকে জানতে পারেন কিন্তু সাধারণ দর্শকদের কাছে রহস্য থেকে যেতে পারে রহস্যই। শুধু দর্শকরা কেন, ক্রিকেটার এবং কোচেরাও অনেকে অতীতে বহু বার স্বীকার করেছেন, এই প্রক্রিয়া তাঁরা কখনও কিছুই উদ্ধার করে উঠতে পারেননি।

ডাকওয়ার্থ-লুইস প্রক্রিয়ার মেঘের আড়ালেই অবশ্য লুকিয়ে রয়েছে কোহালিদের নানা ধাঁধা। সেগুলোর উত্তর না খুঁজে পেলে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ভয় থাকছে। প্রথম একাদশে নানা রকম অদলবদলের প্রশ্নও উঠে পড়েছে। স্কোয়াড নির্বাচন নিয়েও একাধিক ধোঁয়াশা থেকে যাচ্ছে। রবীন্দ্র জাডেজার মতো অলরাউন্ডারকে বসিয়ে এত তাড়াতাড়ি ক্রুনাল পাণ্ড্যকে সুযোগ দেওয়া হল কেন, তা নিয়ে চর্চা চলছে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আইপিএলে সফল হলেও অস্ট্রেলিয়ার মতো জায়গায় এসে পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন হার্দিকের দাদা। কী বোলিং করার সময়, কী ব্যাট হাতে, তাঁকে ভীষণই চাপে জেরবার দেখিয়েছে। দেশের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলের বিরুদ্ধে ক্রুনাল সফল হয়েছেন। কিন্তু অনেক দুর্বল দল ছিল সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের সঙ্গে ভাল করা আর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টক্কর দেওয়া এক নয়।

সব মিলিয়ে হঠাৎই গম্ভীর পরিবেশ। এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারলে তার প্রভাব টেস্টের লড়াইয়েও পড়বে। স্মিথ এবং ওয়ার্নারের অভাবে দুর্বল হয়ে পড়া অস্ট্রেলিয়া তেড়েফুড়ে উঠবে। আর ‘ফেভারিট’ ভারতকে তখন প্রবল চাপ মাথায় নিয়ে নামতে হবে। মেলবোর্নে শুধু টি-টোয়েন্টি সিরিজই নয়, আরও অনেক হিসেবনিকেশ রক্ষা করার লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে বিরাট কোহালিদের!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE