ধমাকা: রবিবার বিধ্বংসী মেজাজে ঋষভ পন্থ। তাঁর ব্যাটেক তাণ্ডবে ম্যাচে ফিরে এল দিল্লিও। পিটিআই
প্রথমজন বিশ্বকাপের আগে আশ্বস্ত করলেন ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে। দ্বিতীয়জন আচমকা বাঁ কাঁধে চোট পেয়ে বাড়ালেন উগ্বেগ। রবিবার ওয়াংখেড়ে জনতার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রইলেন ঋষভ পন্থ এবং যশপ্রীত বুমরা।
২৭ বলে অপরাজিত ৭৮। ইনিংসে রয়েছে সাতটি চার এবং সাতটি বিশাল ছয়। স্ট্রাইক রেট ২৮৮.৮৮। ঋষভের ব্যাটের তাণ্ডবে হারিয়ে গেল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের যাবতীয় প্রতিরোধ। ঘরের মাঠে ৩৭ রানে হারল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ম্যাচের সেরা দিল্লি ক্যাপিটালস তারকা বলে গেলেন, ‘‘দলের স্বার্থে যে কোনও জায়গায় ব্যাটিং করতে রাজি। আমার থেকে দল এমনই ইনিংস আশা করে।’’ যোগ করলেন, ‘‘টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে রান রেট বাড়ানো খুবই প্রয়োজনীয়। আমি সে ভাবেই নিজেকে চালনা করেছি।’’ পরাজিত মুম্বই অধিনায়ক রোহিত শর্মাও স্বীকার করে নেন, ঋষভের আগ্রাসী ব্যাটিং তাঁদের কাজ কঠিন করে দিয়েছিল। তিনি বলেছেন, ‘‘যে কোনও প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচ খুব কঠিন হয়ে থাকে। তা ছাড়া ঋষভের বিধ্বংসী ব্যাটিং আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ নষ্ট করে দেয়।’’
আর নিজের ওভারেই ঋষভের শট আটকাতে গিয়ে হঠাৎ করেই বাঁ কাঁধে চোট পাওয়া যশপ্রীত বুমরা কি পরের ম্যাচে খেলতে পারবেন? সতর্ক মুম্বই ইন্ডিয়ান্স টিম ম্যানেজমেন্ট। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘বুমরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছে। তবে ওর চোট কতটা, সেটা আগামীকালও পর্যবেক্ষণ করা হবে।’’ কিন্তু তার পরেও বুমরার ব্যাট না করতে নামা নিয়ে সকলের মধ্যে চাপা উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে।
ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন ঋষভ। বল হাতে অভিজ্ঞ ইশান্ত শর্মা ভেঙে দিয়ে গেলেন মুম্বই দলের ব্যাটিং মেরুদণ্ড। তুলে নিলেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং কুইন্টন ডি কক’কে। ম্যাচটা সে সময়েই খুইয়ে ফেলে মুম্বই। একা লড়াই করলেন যুবরাজ সিংহ। পরিচিত আগ্রাসী মেজাজে ৩৫ বলে ৫৩ রান করলেন তিনি। ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার এবং তিনটি ছয়। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স থামল ১৭৬ রানে। দিল্লি জিতল ৩৭ রানে।
স্কোরকার্ড
দিল্লি ক্যাপিটালস ২১৩-৬ (২০)
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ১৭৬ (১৯.২)
দিল্লি ক্যাপিটালস
পৃথ্বী ক ডি কক বো ম্যাকলেনাঘান ৭•৬
ধওয়ন ক যাদব বো হার্দিক ৪৩•৩৬
শ্রেয়স ক পোলার্ড বো ম্যাকলেনাঘান ১৬•১০
ইনগ্রাম ক হার্দিক বো কাটিং ৪৭•৩২
ঋষভ ন. আ. ৭৮•২৭
পল ক ডি কক বো ম্যাকলেনাঘান ৩•৫
অক্ষর ক রসিখ বো বুমরা ৪•২
তেওটিয়া ন. আ. ৯•৪
অতিরিক্ত ৬
মোট ২১৩-৬ (২০)
পতন: ১-১০ (পৃথ্বী, ১.৩), ২-২৯ (শ্রেয়স, ৩.৪), ৩-১১২ (ইনগ্রাম, ১২.৬), ৪-১৩১ (ধওয়ন, ১৫.১), ৫-১৫৭ (পল, ১৬.৫), ৬-১৬৫ (অক্ষর, ১৭.২)।
বোলিং: রসিখ সালাম ৪-০-৪২-০, মিচেল ম্যাকলেনাঘান ৪-০-৪০-৩, যশপ্রীত বুমরা ৪-০-৪০-১, হার্দিক পাণ্ড্য ৪-০-৪১-১, ক্রুণাল পাণ্ড্য ২-০-২১-০, বেন কাটিং ২-০-২৭-১ ।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
রোহিত ক তেয়াটিয়া বো ইশান্ত ১৪•১৩
ডি কক ক বোল্ট বো ইশান্ত ২৭•১৬
সূর্যকুমার রান আউট ২•৬
যুবরাজ ক তেয়াটিয়া বো রাবাডা ৫৩•৩৫
পোলার্ড ক টেতেয়াটিয়া বো পল ২১•১৩
হার্দিক ক ও বো অক্ষর ০•২
ক্রুণাল ক তেয়াটিয়া বো বোল্ট ৩২•১৫
কাটিং ক পন্থ বো রাবাডা ৩•৪
ম্যাকলেনাঘান স্টাঃ পন্থ বো তেয়াটিয়া ১০•৮
বুমরা আহত ও অবসৃত
অতিরিক্ত ৯
মোট ১৭৬ (১৯.২)
পতন: ১-৩৩ (রোহিত, ৩.৩), ২-৩৭ (সূর্য, ৫.১), ৩-৪৫ (ডি কক, ৫.৫), ৪-৯৫ (পোলার্ড, ১০.৫), ৫-৯৫ (হার্দিক, ১১.২), ৬-১৩৪ (ক্রুণাল, ১৪.৬), ৭-১৫৩ (কাটিং, ১৬.২), ৮-১৭০ (যুবরাজ, ১৮.১), ৯-১৭৬ (ম্যাকলেনাঘান, ১৯.২)।
বোলিং: ট্রেন্ট বোল্ট ৪-০-৪২-১, ইশান্ত শর্মা ৪-০-৩৪-২, কাগিসো রাবাডা ৪-০-২৩-২, রাহুল তেয়াটিয়া ১.২-০-১২-১, কিমো পল ৩-০-২১-১, অক্ষর পটেল ৩-০-৪২-১।
টসে জিতে আগে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এবং শুরুটাও ভালই হয়েছিল। নিউজ়িল্যান্ডের বাঁ হাতি পেসার মিচেল ম্যাকলেনাঘান দ্রুত তুলে নেন চোট সারিয়ে আইপিএলে ফেরা পৃথ্বী শ’কে। অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার ১৯ বলে ১৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ফেরেন
ম্যাকলেনাঘানের বলেই।
ঋষভ যখন খেলতে নামলেন, তখন খুব একটা ভাল জায়গায় ছিল না দিল্লি। শুরুর দিকে কিছুটা অস্থিরতা থাকলেও দ্রুত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। একার হাতেই শেষ করে দেন হার্দিক, বুমরা, ক্রুণালদের যাবতীয় আক্রমণ। শেষ পাঁচ ওভারে দিল্লি তোলে ৮২ রান। তবে ঋষভের তাণ্ডব বাদ দিলে দিল্লি দলকে ভাল জায়গায় নিয়ে যেতে বড় ভূমিকা নেন ওপেনার শিখর ধওয়ন ( ৩৬ বলে ৪৩) এবং কলিন ইনগ্রাম ( ৩২ বলে ৪৭)। দিল্লি ইনিংসকে মজবুত করার লক্ষ্যেই এ দিন ধওয়ন ছিলেন অনেকটাই সংযত। তাঁর ইনিংসে ছিল মাত্র চারটি বাউন্ডারি এবং একটি ছয়। তুলনায় আক্রমণাত্মক ছিলেন ইনগ্রাম। সাতটি চার এবং একটি ছয় মেরেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy