অধিনায়কের সঙ্গে। শুক্রবার বিশাখাপত্তনমে জয়ন্ত। -শঙ্কর নাগ দাস
জীবনের প্রথম টেস্টে মইন আলিকে না হয় আউট করলেন। কিন্তু তাঁর বোলিংয়ে শুধু মইনই নন, আজ পর্যন্ত আউট হয়েছেন কি না আরও পাঁচ ইংরেজ!
তাঁরা কারা? অ্যালিস্টার কুক। ম্যাট প্রায়র। সমিত পটেল। টিম ব্রেসনান। এবং কেভিন পিটারসেন।
বিশাখাপত্তনমে টেস্ট অভিষেক হওয়া জয়ন্ত যাদবের এই কীর্তির কথা অনেকেরই জানা নেই। চার বছর আগে যখন ইংল্যান্ড ভারতে এসেছিল, সেই সিরিজের এক প্রস্তুতি ম্যাচে জয়ন্ত উপরের ওই পাঁচকে আউট করেছিলেন। আর সেটা মোটেও একমাত্র চমক নয়। জয়ন্তের ক্রিকেট-জীবনে এ রকম আরও আছে।
যেমন?
যেমন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের নিজের কাছে জয়ন্তকে রেখে দেওয়া। নিজের কাছে রেখে প্র্যাকটিস করানো। এমনিতে বিরাটের পাড়া গুরুগ্রামে থাকেন জয়ন্ত। কিন্তু বছর দু’তিনেক আগে অশ্বিনের কাছে ছিলেন। ভারতীয় স্পিনের সেরা ভরসা এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন করতে এসে বলছিলেন যে, ‘‘দু’তিন বছর আগে জয়ন্ত একবার আমার কাছে সপ্তাহ দুয়েকের জন্য ছিল। তখনই বুঝে যাই ওর মধ্যে যথেষ্ট প্রতিভা রয়েছে। আমার সঙ্গে ওর বোঝাপড়াটাও তখন থেকে। জয়ন্তের সবচেয়ে বড় গুণ, ওর শেখার ক্ষমতা।’’
এরাপল্লি প্রসন্নের আবার মনে হচ্ছে, মানসিকতা। ভারতীয় স্পিন-কিংবদন্তি শুক্রবার ফোনে বলছিলেন, ‘‘আমার জয়ন্তের বোলিং দেখে মনে হয়নি জীবনের প্রথম টেস্ট খেলছে। এতটুকু নার্ভাস লাগেনি। এখন দেখার, পাটা বা স্পোর্টিং উইকেটে কী করে।’’ আর হরভজন সিংহ? তিনি কি আরও দূরে চলে গেলেন? জয়ন্ত তো ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং— সব বিভাগেই আত্মপ্রকাশ ঘটিয়ে ফেললেন পাশ মার্ক নিয়ে। প্রসন্নকে এ বার একটু যেন ডিফেন্সিভ মনে হয়। বললেন, ‘‘না না, এখনই ও সব নিয়ে বলা ঠিক হবে না। জয়ন্ত সবে শুরু করেছে। কিন্তু এটুকু বলব যে, ওর ব্যাটিং-বোলিং দেখে যথেষ্ট প্রতিশ্রুতিমান মনে হয়েছে।’’
ইংল্যান্ড টিমে বেশ কয়েক জন বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান আছেন বলে বিশাখাপত্তনমে অফস্পিনার-অলরাউন্ডার হিসেবে জয়ন্তকে খেলিয়ে দেন বিরাট। যে স্ট্র্যাটেজি খেটেও গিয়েছে এখনও পর্যন্ত। অশ্বিনের সঙ্গে ৬৪ রানের পার্টনারশিপ করলেন জয়ন্ত। নিজে করলেন ৩৫। মইন আলির উইকেট তুললেন। এবং হাসিব হামিদের রান আউটের পিছনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও থাকল।
পাঁচ বছর বয়সে মা-কে বিমান দুর্ঘটনায় হারিয়েছিলেন জয়ন্ত। সেই অবস্থা থেকে তাঁর বড় হওয়া, ক্রিকেট খেলা, শেষে টেস্ট ক্যাপ পরে ফেলা। জীবনের প্রথম টেস্ট— অভিজ্ঞতাটা কেমন হল? বোর্ডের ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয়ন্ত বলে দিয়েছেন, ‘‘ব্যাটিংয়ের সময় অশ্বিন আমাকে প্রচুর গাইড করেছে। উইকেট আর বোলারের সঙ্গে কী ভাবে মানিয়ে নিতে হবে, বলে দিয়েছে।’’ সঙ্গে জুড়ে দেন, ‘‘এটা আমার স্বপ্ন ছিল। স্বপ্নপূরণ হলে কেমন লাগে, বলে বোঝাতে পারব না।’’ অশ্বিনেরও ভাল লাগছে। ভাল লাগছে এমন অভিষেক দেখে। বললেন, ‘ওর সঙ্গে বোঝাপড়াটা আমার বরাবরই ভাল। ব্যাটিংয়ে, বোলিংয়ে। পজিটিভ ব্যাটিং করেছে। জীবনের প্রথম টেস্টে উইকেট পেয়েছে। ভাবলেই দারুণ লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy