Advertisement
০২ মে ২০২৪

‘লর্ডসে কিন্তু বল ঘোরে, তাই খেলুক কুলদীপও’

বিরাট কোহালির মানসিক কাঠিন্য, কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করা, শট বাছাই— সবই বোঝাচ্ছে, ও অসাধারণ একজন ক্রিকেটার।

চর্চা: ভারতের নেটে কুলদীপ। পেতে পারেন সুযোগ। ছবি: এপি।

চর্চা: ভারতের নেটে কুলদীপ। পেতে পারেন সুযোগ। ছবি: এপি।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০৫:২২
Share: Save:

ভারত বনাম ইংল্যান্ড সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচ আমাদের একটা জিনিস খুব ভাল করে বুঝিয়ে দিয়েছে। কেন একজন ক্রিকেটারের কাছে টেস্ট ক্রিকেটের চেয়ে বড় পরীক্ষা আর কিছু হতে পারে না, সেটা আমরা এজবাস্টনে বুঝে গিয়েছি। এ রকম নাটকীয়তা, ঘাত প্রতিঘাতে ভরা টেস্ট খুব কমই হয়েছে। যেখানে ম্যাচের ভাগ্য পেন্ডুলামের মতো এক বার এ দিক, এক বার ও দিক গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত যে দলটা নার্ভ ঠিক রেখেছে আর ঠিক সময় সেরা খেলাটা খেলতে পেরেছে, তারাই জিতেছে।

বিরাট কোহালির মানসিক কাঠিন্য, কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করা, শট বাছাই— সবই বোঝাচ্ছে, ও অসাধারণ একজন ক্রিকেটার। বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান যে এখন বিরাটই, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এজবাস্টন টেস্টে ও হয়তো সেরা ছন্দে ছিল না, কিন্তু প্রতিকূল অবস্থাতেও লড়াই না ছাড়ার মানসিকতা ওকে আলাদা করে দিয়েছে। বিরাটের ওই ইনিংসটা ‘কী ভাবে ব্যাট করতে হয়’, তার একটা আদর্শ উদাহরণ হতে পারে— দিনটা তোমার না হলেও রান করা সম্ভব।

বিরাটের ইনিংসটা বাকিদের কাছে একটাই বার্তা নিয়ে আসছে, এ বার তোমাদেরও কিছু করতে হবে। আমার ব্যক্তিগত ধারণা হল, ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের দক্ষতা আছে এই পরিবেশে রান করার। তবে নেতা বিরাটের সামনেও একটা কাজ আছে। এই দলটাকে চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে। ব্যাপারটা অনেকটাই মানসিক। আর দলের ক্রিকেটারদের মানসিকতা ঠিক করাটাই এই সফরে বিরাটের চ্যালেঞ্জ।

ভারতের ইতিবাচক দিকটা হল বোলিং। প্রত্যেক বোলার খুব ভাল বল করেছে। বিশেষ করে আর. অশ্বিন। নিজের বোলিংয়ে অনেক বৈচিত্র যোগ করেছে ও। বিপক্ষের কাছে ও বড় ত্রাস হয়ে উঠবে। মনে আছে, সিরিজ শুরুর আগে একটা লেখায় অশ্বিন নিয়ে মন্তব্য করেছিলাম। অশ্বিন যে ভাবে টেস্ট সিরিজে নিজেকে মেলে ধরেছে, তা দেখে ভাল লাগছে। ও জানে, বিদেশে পারফর্ম করাটা কত জরুরি। এখনকার অশ্বিনকে দেখে বোঝা যাচ্ছে ও কতটা উন্নতি করেছে। অশ্বিনের এই নতুন করে নিজেকে তৈরি করা শুরু হয়, যখন ও দেখে তরুণ ক্রিকেটারেরা ওকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে। এই সিরিজে কিন্তু ইংল্যান্ডকে ক্রমাগত সমস্যায় ফেলে যাবে অশ্বিন।

লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ড দেখছি ডান হাতি ব্যাটসম্যানের সংখ্যা বাড়িয়ে খেলছে। অশ্বিনকে সামলানোর এটা একটা চাল। এই টেস্টে অভিষেক ঘটতে চলেছে ওদের তরুণ ব্যাটসম্যান অলি পোপের। ভারত কিন্তু এই টেস্টে দ্বিতীয় স্পিনার খেলানোর কথা ভাবতেই পারে। লন্ডনে আবহাওয়া অন্য রকম। আর ইতিহাস বলছে, লর্ডসে কিন্তু বল ঘোরে। সে কথা মাথায় রেখে বলব, কুলদীপ যাদবকে খেলানো উচিত। তবে আর যাই হোক, ভারত যেন কোনও ভাবেই পাঁচ বোলারের কমে মাঠে না নামে। লর্ডসে বেন স্টোকসকে পাচ্ছে না ইংল্যান্ড। কিন্তু ক্রিস ওক্‌স খেলায় ওদের দলের ভারসাম্য নষ্ট হবে না।

চলতি সিরিজের কথা মাথায় রেখে বলছি, লর্ডস টেস্টটা কিন্তু দু’দলের কাছেই খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। ০-১ পিছিয়ে থাকা অবস্থায় নামছে ভারত। যে কোনও পরিস্থিতিতে বিরাটদের সিরিজে ফিরে আসতে হবে। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা যদি ছন্দে থাকে, তা হলে কিন্তু ইংল্যান্ড চাপের মুখে পড়ে যাবে। সেটা যদি হয়, তা হলে ওখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানো শুরু হবে ভারতের।

সিরিজটা কিন্তু এখনও শেষ হয়ে যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket Kuldeep Yadav
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE