Advertisement
১০ মে ২০২৪
বাঁদরের বেয়াদপি থামাতে গ্রিন পার্কে ভাড়াটে হনুমান

যুদ্ধের আগে অশ্বিন নিয়ে তাচ্ছিল্য দেখিয়ে গেলেন এবি

বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যানের তাণ্ডব বনাম ক্যাপ্টেন কুলের ক্রিকেট-মস্তিষ্ক। ডেল স্টেইন বনাম শিখর ধবন। ইমরান তাহির বনাম বিরাট কোহলি। জিভে জল আনা সব সংঘাত দেখতে রবিবারের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়াম যে উপচে পড়বে, সন্দেহ নেই। কিন্তু মাঠের পঁয়তাল্লিশ হাজার দর্শকসংখ্যা পেরিয়েও কিছু বহিরাগতদের ঢুকে পড়ার আশঙ্কায় রীতিমতো তটস্থ উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার কর্তারা। তা-ও আবার দু’চারজন নয়। শয়ে শয়ে!

নেট প্র্যাকটিসে বিরাট কোহলি। শনিবার। ছবি: পিটিআই

নেট প্র্যাকটিসে বিরাট কোহলি। শনিবার। ছবি: পিটিআই

প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত
কানপুর শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৫ ০৪:২৯
Share: Save:

বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যানের তাণ্ডব বনাম ক্যাপ্টেন কুলের ক্রিকেট-মস্তিষ্ক। ডেল স্টেইন বনাম শিখর ধবন। ইমরান তাহির বনাম বিরাট কোহলি। জিভে জল আনা সব সংঘাত দেখতে রবিবারের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়াম যে উপচে পড়বে, সন্দেহ নেই। কিন্তু মাঠের পঁয়তাল্লিশ হাজার দর্শকসংখ্যা পেরিয়েও কিছু বহিরাগতদের ঢুকে পড়ার আশঙ্কায় রীতিমতো তটস্থ উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার কর্তারা। তা-ও আবার দু’চারজন নয়। শয়ে শয়ে!
এরা মানুষ নয়। মানুষের আদিম পূর্বপুরুষ। সোজা বাংলায়, বাঁদর।
কানপুরের অলিগলি, এমনকী রাজপথেও যাদের অবাধ বিচরণ। এবং যাদের দৌরাত্ম্য থেকে বাঁচতে ভরসা তাদেরই ‘জাতভাই’। কানপুর ওয়ান ডে যাতে বাঁদরামি-বিহীন ভাবে হতে পারে, সে জন্য কড়কড়ে দশ হাজার টাকা খরচ করে একজোড়া হনুমান ভাড়া করা হয়েছে। সাধারণ হনুমান নয়, এরা বিশেষ ট্রেনিংপ্রাপ্ত। কাছের মন্দির থেকে স্টেডিয়ামের যে সব গলিঘুঁজি দিয়ে বাঁদরের টিম গ্যালারিতে ঢুকে পড়ে, সেখানে কড়া পাহারাদারিতে থাকবে তারা!
এবি ডে’ভিলিয়ার্স বোধহয় ব্যাপারটা জানেন না। বেড়াল-কুকুর নয়, জঙ্গি একদল বাঁদর মাঠে ঢুকে পড়তে পারে শুনলে হয়তো তাঁকে এতটা টেনশনমুক্ত দেখাত না। না, এবি নিশ্চয়ই রবিবারের যুদ্ধের ক্রিকেটীয় বিশ্লেষণ নিয়ে ডুবে। যে বিশ্লেষণের সারমর্মে তাঁর তৃপ্ত হওয়ার কথা। টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পরে এই প্রথম ভারতের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা নতুন সিরিজে নামছে ফেভারিট হয়ে। কমেন্ট্রি করতে আসা শন পোলক ঢুকে পড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা নেটে পেসারদের আরও ধারালো করে দিতে। সেই টিমের অধিনায়কের অহং তো তাঁর কথায় একটু-আধটু চলকে পড়বেই।
পড়লও। কানপুরের স্পিন-ঘেঁষা পিচে ভারতীয় স্পিনারদের মোকাবিলা করার প্রসঙ্গটা বেশ তাচ্ছিল্যের সঙ্গে উড়িয়ে দিলেন এবি। বলে দিলেন, ‘‘আরে এতে নতুন কী আছে? আমরা তো জেনেই এসেছি এখানে স্পিনারদের খেলতে হবে। আর শুনে রাখুন, আমরা একদম তৈরি।’’ মনে করিয়ে দিলেন, তাঁর টিমে ডেল স্টেইন এবং মর্নি মর্কেল নামক দুই পেস-ত্রাস আছেন। শুনিয়ে রাখলেন, তা সত্ত্বেও তাঁর টিম শুধু পেস বা স্পিন নির্ভর নয়। ‘‘ব্যালান্স, ওটাই আসল কথা। আর সেটা আমাদের টিমে যথেষ্ট পরিমাণে আছে। সুইং, সিম, স্পিন। অফস্পিনার, লেগস্পিনার, কে নেই? আর হ্যাঁ, আমরা এই সিরিজটাও জিততে এসেছি।’’

তবে আসল বোমাটা অপেক্ষা করে ছিল শেষের জন্য। রবিবার মর্কেলের শততম ওয়ান ডে, টি-টোয়েন্টিতে ওপেন করলেও ওয়ান ডে-তে ক্যাপ্টেন ওপেন করবেন না, কুইন্টন ডে কককে কিপিং গ্লাভস হাতে দেখা যেতে পারে— এ সব রুটিন আদানপ্রদানের পর যেটা ফাটালেন এবি। ফাটালেন, অশ্বিন প্রসঙ্গ উঠতে। দুটো টি-টোয়েন্টিতে দু’বারই তিনি ভারতের এক নম্বর স্পিনারের শিকার। ওয়ান ডে-তে কী ভাবছেন অশ্বিন ফ্যাক্টর নিয়ে? শুনতে না শুনতে তীব্র পাল্টা, ‘‘ধুর, ও আমাকে আউট করেছে নাকি? ওই দুটো ম্যাচে দু’বার আমি নিজেই নিজেকে আউট করেছি। কোনও বোলার যদি আপনার টেকনিক্যাল খুঁত বের করে আনতে পারে, তা হলে সেটা চিন্তার বিষয়। এখানে সে সব কিছুই হয়নি। ভুলটা আমার। আমিই বেশি আক্রমণ করতে চাইছিলাম। আর আগের ম্যাচটাই একটু আলসেমি চলে এসেছিল। স্পিনের জন্য শট নিচ্ছিলাম, কিন্তু বলটা সে ভাবে স্পিন করল কোথায়!’’

এর পর ‘‘অশ্বিন বিশ্বমানের বোলার’’ ইত্যাদি বলে ব্যাপারটা হালকা করতে চাইলেও তাঁর এবং তাঁর টিমের মনোভাব জলবৎ তরলং— এই ইন্ডিয়া টিমে এমন কেউ নেই, যাঁকে ভয় করা যেতে পারে।

তবে হ্যাঁ, হনুমান-বাহিনী কাল ব্যর্থ হলে এবিদের কী হাল হবে, সেটা অন্য ব্যাপার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE