মগ্ন: শুক্রবার সকালে পাসিং অনুশীলনে ব্যস্ত রইলেন জবি জাস্টিনরা।
এক জনের বাড়ি উত্তরপাড়ায়। আর এক জন থাকেন ডানকুনিতে। প্রথম জন সদ্য চাকরি পেয়েছেন। দ্বিতীয় জনের লেখাপড়া এখনও শেষ হয়নি। ইস্টবেঙ্গলের টানে শুক্রবার সাত সকালেই তাঁরা হাজির সল্ট লেকের সাই কমপ্লেক্সে ডার্বির প্রস্তুতি দেখতে। তত ক্ষণে আরও কয়েক জন লাল-হলুদ সমর্থক চলে এসেছেন। কিন্তু কাউকেই ভিতরে ঢুকতে দিলেন না নিরাপত্তা কর্মীরা।
ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়ার কড়া নির্দেশে অনুশীলন দেখা বন্ধ। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘ডার্বির আগে প্রচুর সমর্থক হাজির হন অনুশীলনে। তাতে ফুটবলারদের মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তা ছাড়া আমি বিশেষ কিছু অনুশীলন করিয়েছি। এই কারণেই চাইনি কেউ আমাদের অনুশীলন দেখুক।’’ একই কারণে শুক্রবারই নিউ টাউনের হোটেলে পুরো দলকে তুলেছেন।
কোচ যতই আপত্তি করুন, মোহনবাগানের বিরুদ্ধে আই লিগের ফিরতি ডার্বির আগে জবি জাস্টিন, এনরিকে এসকুয়েদা-দের শুভেচ্ছা না জানিয়ে ফেরা যায়? সাই কমপ্লেক্সের গেটের বাইরে তাই অপেক্ষা করে ছিলেন তাঁরা। সব চেয়ে বেশি আগ্রহ জবিকে নিয়েই। লাল-হলুদ স্ট্রাইকার গেটের বাইরে বেরোতেই ঘিরে ধরলেন সমর্থকেরা। ডার্বির জন্য শুভেচ্ছা জানানোর পরে শুরু হল নিজস্বী তোলার আব্দার। অনুশীলন করে ক্লান্ত জবি তখন ভক্তদের চক্রব্যূহ ভেঙে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজছেন মরিয়া হয়ে। শেষ পর্যন্ত লাল-হলুদ সমর্থকদের একাংশই উদ্ধার করলেন তাঁকে।
মোহনবাগান কোচ খালিদ জামিলও রবিবার যুবভারতীতে জবি, এনরিকে, খাইমে সান্তোস কোলাদো-দের আটকাতে চক্রব্যূহ রচনা করবেন। তা থেকে বেরোনোর মহড়াই গত দু’দিন ধরে চলল লাল-হলুদ শিবিরে।
শুক্রবার সকালে এক ঘণ্টা দশ মিনিটের অনুশীলনকে তিনটি ভাগে ভাগ করেন ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ। এক) পেনিট্রেশন ট্রেনিং: এই ধরনের অনুশীলনে স্ট্রাইকারদের প্রধান কাজ হচ্ছে বিপক্ষের ডিফেন্ডারদের উপরে চাপ বাড়িয়ে যাওয়া। এর জন্য প্রথমে তিনি দু’জন স্ট্রাইকার ও দু’জন আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডারকে একটা দলে রাখেন। তাঁদের বিরুদ্ধে রেখেছিলেন তিন জন ডিফেন্ডারকে। অর্থাৎ চারের বিরুদ্ধে তিন ফর্মুলা। এর পরে একটা দলে দুই স্ট্রাইকারের সঙ্গে রাখেন এক জন আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডারকে। তাঁদের আটকানোর দায়িত্ব দেন দু’জন ডিফেন্ডারকে। এ বার তিন বনাম দুই ফর্মুলা। শুক্রবারের অনুশীলনে আলেসান্দ্রো বেশি জোর দিয়েছেন মাঝখান থেকে আক্রমণে উঠে গোল করার। অর্থাৎ, সরাসরি বিপক্ষের ডিফেন্ডারদের আক্রমণ করা। কখনও জবি, এনরিকে। কখনও আবার জবির সঙ্গে কোলাদোকে রাখলেন তিনি। তাঁদের আটাকানোর দায়িত্ব দিলেন বোরখা গোমেস পেরেস, জনি আকোস্তোদের। এই বিশেষ অনুশীলনের মাধ্যমে একই সঙ্গে আক্রমণ ও রক্ষণের শক্তি পরীক্ষা করেন কোচেরা।
দুই) ফাংশনাল ট্রেনিং: পেনাল্টি বক্সের সামনে দু’টো মার্কার রাখা ছিল। সেখানে দাঁড়িয়েছিলেন জবি ও এনরিকে। মাঝমাঠ থেকে লালরিন্দিকা রালতে, কাশিম আইদারাদের ভাসিয়ে দেওয়া বল কখনও হেড করে, কখনও আবার জোরালো শটে জালে জড়িয়ে দিচ্ছিলেন স্ট্রাইকারেরা।
তিন) শুটিং প্র্যাক্টিস: ইস্টবেঙ্গল কোচের রণনীতি, সুযোগ পেলেই বিপক্ষের গোল লক্ষ্য করে শট নেওয়া। তিনি চান না পাস খেলতে খেলতে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে ঢুকে গোল করার চেষ্টা করুক এনরিকেরা। তাঁর মতে, এতে গোল করার সম্ভাবনা কমে। প্রতিপক্ষ রক্ষণ গুছিয়ে নেওয়ার সময় পেয়ে যায়। ডার্বিতে সেই সুযোগ এজে কিংসলেদের একেবারেই দিতে চান না আলেসান্দ্রো। এ দিন অনুশীলন শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ডিকাকে দেখা গেল গোল লক্ষ্য করে একের পর এক শট মেরে চলেছেন।
রবিবার আই লিগে: মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল (যুবভারতী, বিকেল ৫টা। স্টার স্পোর্টস থ্রি চ্যানেলে)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy