লক্ষ্য: আবু ধাবির এই আল নাহইয়ান স্টেডিয়ামেই এশিয়ান কাপের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে ভারতীয় দল।
এশিয়ান কাপের আগে ভারতীয় দলের কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের নজর যখন প্রস্তুতি ম্যাচে, তাঁর সহকারীরা তখন ব্যস্ত রূপরেখা তৈরি করতে।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে এশিয়ান কাপের আসর বসছে। ভারতের প্রথম ম্যাচ ৬ জানুয়ারি তাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে। কিন্তু প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার ছয় মাস আগে থেকেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আসরে নেমে পড়েছেন টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্যেরা। গ্রুপ লিগে সুনীল ছেত্রীরা তাইল্যান্ড ও আয়োজক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে খেলবেন আবু ধাবিতে। শেষ ম্যাচে বাহরিনের বিরুদ্ধে খেলা শারজায়। নক-আউট পর্বে উঠলে খেলা পড়তে পারে দুবাইয়ে। তিন শহরের ফুটবল পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে ২৬ সেপ্টেম্বর রাতেই দুবাই পৌঁছে গিয়েছিলেন ভারতের প্রতিনিধিরা।
২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর এএফসি দুবাইয়ে একটি কর্মশালার (এশিয়ান কাপ টিম ওয়ার্কশপ) আয়োজন করেছিল। মূল পর্বে যোগ্যতা অর্জনকারী ২৪টি দেশের প্রতিনিধিরাই ছিলেন। সেখানে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, টিম হোটেলে ফুটবলারেরা তাঁদের পরিচিত কাউকে নিজেদের ঘরে নিয়ে যেতে পারবেন না। এমনকি, সেই হোটেলে থাকা অন্য দলের ফুটবলারদেরও আমন্ত্রণ জানানো যাবে না। এ ছাড়াও সব দেশের প্রতিনিধিদের কাছেই জানতে চাওয়া হয়, কার কী চাহিদা রয়েছে।
স্টিভনের সরকারীরা অবশ্য আসল কাজ শুরু করেন কর্মশালা শেষ হওয়ার পরেই। তাঁরা দু’দিন বাড়তি থেকে গিয়েছিলেন মরুশহরে। আবু ধাবিতে যেখানে ভারতীয় দল অনুশীলন করবে, প্রথমেই তাঁরা সেখানে যান। প্র্যাক্টিসের মাঠ, মূল স্টেডিয়াম দেখার পরে ভারতীয় দলের প্রতিনিধিরা যান টিম হোটেল পরিদর্শন করতে। হোটেল থেকে প্র্যাক্টিস মাঠ বা স্টেডিয়ামে পৌঁছতে কতক্ষণ লাগবে। প্রতিযোগিতা চলাকালীন আবু ধাবির আবহাওয়া কেমন হবে। কোনও ফুটবলার আহত হলে দ্রুত তাঁকে কোন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে, সব কিছু খুটিয়ে দেখা হয়। আবু ধাবির পরে শারজা ও দুবাইয়েও একই কাজ করেন তাঁরা। শুধু তা-ই নয়। প্রতিযোগিতা চলাকালীন ভারতীয় দলের ফুটবলারেরা কী ধরনের খাবার খাবেন তা-ও প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। বিশ্বকাপে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ডের উদাহরণ দিয়ে স্টিভনের সহকারীরা এএফসি কর্তাদের কাছে জানতে চান, এশিয়ান কাপে ভারতীয় দল সঙ্গে নিজস্ব শেফ রাখতে পারবে কি না। টিম হোটেলের রান্নাঘরও ব্যবহার করা যাবে কি না। এএফসির তরফে অবশ্য এখনই এ ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়নি। ভারতের প্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে, সরকারি ভাবে আবেদন করতে হবে। তার পরে তারা সিদ্ধান্ত জানাবে। ফেডারেশনসূত্রে খবর, কয়েক দিনের মধ্যেই ই-মেলের মাধ্যমে সরকারি ভাবে আবেদন করা হবে এএফসির কাছে।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সফরের অভিজ্ঞতা কেমন হল? ভারতীয় প্রতিনিধি দলের এক সদস্য বলছিলেন, ‘‘প্র্যাক্টিসের মাঠ বা স্টেডিয়াম নিয়ে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। দুর্দান্ত পরিকাঠামো। তবে এএফসি দলগুলোর জন্য যে পরিমাণ বরফ বরাদ্দ করেছে, তা নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে।’’ কেন? তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘ডিসেম্বর মাসে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে তাপমাত্রা ২৪-২৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকলেও দিনের বেলা বেশ গরম। টানা ম্যাচ থাকায় ফুটবলারদের ক্লান্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই নিয়মিত আইসবাথ প্রয়োজন। এই কারণেই আমরা বরাদ্দ বরফের পরিমাণ বাড়াতে বলেছি।’’
এর আগে ভারতীয় দল বিদেশে টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে পৌঁছত। পদে পদে সমস্যায় পড়েছে। গত কয়েক বছরে ভারতীয় ফুটবলের ছবিটাই শুধু বদলায়নি। বদলে গিয়েছে ভাবনাচিন্তাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy