মরিয়া: বুধবার ইডেনে প্রস্তুতি মুস্তাফিজুরের। নিজস্ব চিত্র
ইনদওরে সাংবাদিক বৈঠকে বিরাট কোহালি বলেছিলেন, নেট বোলারদের বিরুদ্ধে তিনি ব্যাট করতে পছন্দ করেন। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের আউট করার লক্ষ্য নিয়েই নেটে আসেন স্থানীয় বোলারেরা। কোনও ব্যাটসম্যানকে আউট করতে পারলে, ম্যাচের মতো উৎসবও করেন কেউ কেউ।
বুধবার ইডেনে বাংলাদেশের অনুশীলনে সেই ছবিই দেখা গেল। মাহমুদুল্লা রিয়াধকে এক বার বোল্ড ও এক বার এলবিডব্লিউ করে ম্যাচের মতোই জয়োৎসব করলেন বাঁ-হাতি স্পিনার প্রলয় বন্দ্যোপাধ্যায়। নেট থেকে বেরিয়ে ২১ বছর বয়সি স্পিনারকে একটি গোলাপি বল উপহার দিলেন মাহমুদুল্লা।
ট্যাংরার এই বাঁ-হাতি স্পিনার পাইকপাড়া স্পোর্টিং ক্লাবে খেলেন। গত বার মোহনবাগানে সই করে কোনও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। পাইকপাড়ায় সই করে সেই আশা পূরণ করতে চান। দিনের শেষে বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ ড্যানিয়েল ভেত্তোরির সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাও বলতে দেখা যায় প্রলয়কে। কী বললেন ভেত্তোরি? ‘‘স্যর বলছিলেন, বলকে আরও একটু হাওয়ায় (ফ্লাইট) রাখতে। তাতে বল ঘুরবেও বেশি। বাউন্সও বেশি পাওয়া যাবে।’’ মাহমুদুল্লার থেকে এই উপহার পেয়ে অভিভূত প্রলয় বললেন, ‘‘খুব ভাল লাগছে। আগে কখনও গোলাপি বল চোখেই দেখিনি।’’
এখানেই শেষ নয়। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক এক জন তরুণ পেসারকেও গ্লাভস উপহার দিলেন বুধবার। বরাহনগরের তরুণ পেসার সৈয়দ ইরফান আফতাবের ইনসুইং বুঝতে না পেরে ব্যাট ও পায়ের ফাঁক দিয়ে বোল্ড হন মাহমুদুল্লা। নেটের ভিতরেই তাঁকে ডেকে নাম জিজ্ঞাসা করেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। বোলারের গতি ও সুইংয়ে মুগ্ধ মাহমুদুল্লা খেলার সরঞ্জাম রাখার ব্যাগ থেকে গ্লাভস বের করে তরুণ পেসার ইরফানের হাতে দেন। তরুণ পেসারের কথায়, ‘‘আগেও নেট বোলার হিসেবে বল করতে এসে অনেক ব্যাটসম্যানকে আউট করেছি। কখনও এ রকম উপহার পাইনি।’’
বাংলাদেশ অনুশীলনে হঠাৎ করে আতঙ্কের পরিবেশও তৈরি হয়েছিল বুধবারের ইডেনে। নেট বোলার শুভম রায়ের বাউন্সার আছড়ে পড়ে বাংলাদেশের নইম হাসানের হেলমেটে। বাংলাদেশ শিবির সূত্রের খবর, সিটি স্ক্যান করে দেখা গিয়েছে নইমের কোনও সমস্যা নেই। বৃহস্পতিবার অনুশীলনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। শুভম যদিও এই ঘটনায় বেশ বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন। তাঁর মনোবল ফিরিয়েছে মুস্তাফিজুর রহমানের দুরন্ত কিছু ডেলিভারি।
ছন্দে না থাকার জন্য প্রথম টেস্টে মুস্তাফিজুরকে খেলায়নি বাংলাদেশ। কিন্তু ইডেনের গতিময় পিচ ও গোলাপি বল তাঁর প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ হতে পারে। গঙ্গার দিক থেকে আসা হাওয়া ও ঘাসে ভরা উইকেটের সাহায্য যদি এ ম্যাচেও তিনি তুলতে না পারেন, তা হলে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। মুস্তাফিজুরের সঙ্গেই নেটে ভয়ঙ্কর দেখিয়েছে আল আমিন হোসেনকে। অধিনায়ক মোমিনুল হক তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক বার পরাস্ত হন। সমস্যায় পড়েছেন মুশফিকুর রহিমও। সূত্রের খবর, মুস্তাফিজুরের সঙ্গে আল আমিনকেও খেলানো হতে পারে। তৃতীয় পেসার হয়তো আবু জায়েদ রাহি।
এ বারও কি দুই স্পিনারে ভরসা রাখবে বাংলাদেশ? না কি তিন পেসার, এক স্পিনার ও এক জন অতিরিক্ত ব্যাটসম্যানের উপর ভরসা রাখবেন মোমিনুল? স্পিন বোলিং কোচ ড্যানিয়েল ভেত্তোরি সাংবাদিক বৈঠকে বলছিলেন, ‘‘দল নির্বাচনের দায়িত্ব কোচ ও অধিনায়কের। তবে গোলাপি বলেও কিন্তু স্পিনাররা সাহায্য পেতে পারে।’’ যোগ করেন, ‘‘যে কোনও ম্যাচেই কোনও না কোনও সময় স্পিনারদের কাজে লাগে। দিনরাতের টেস্টেও ওদের ম্যাচের বাইরে রাখা যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy