Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘মনে হচ্ছিল, বিশ্বরেকর্ডই করে ফেলবে’

প্রায় তিন বছর পরে বিরাট কোহালি ওয়ান ডে ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার পরে প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে রোহিত আর ভারতের ক্যাপ্টেন যে ভাবে তাণ্ডব শুরু করেছিল, ভেবেছিলাম বিশ্বরেকর্ড হবে।

যুগলবন্দি: জোড়া সেঞ্চুরির দুই নায়ক। রোহিত-কোহালি। ছবি: রয়টার্স।

যুগলবন্দি: জোড়া সেঞ্চুরির দুই নায়ক। রোহিত-কোহালি। ছবি: রয়টার্স।

অশোক মলহোত্র
শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:০৬
Share: Save:

৩৭৫ উঠল বটে, তবে যা ভেবেছিলাম, হল না।

প্রায় তিন বছর পরে বিরাট কোহালি ওয়ান ডে ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার পরে প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে রোহিত আর ভারতের ক্যাপ্টেন যে ভাবে তাণ্ডব শুরু করেছিল, ভেবেছিলাম বিশ্বরেকর্ড হবে। ওয়ান ডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের বিশ্বরেকর্ড। যেটা এখন ইংল্যান্ডের দখলে আছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গত বছরে করা ৪৪৪ রানের সেই দুরন্ত নজির। ভাবার কারণও তো ছিল। ২৯ ওভারেই ২১৯-১ উঠে গিয়েছিল ভারতের।

একে সামনে এই নুইয়ে পড়া শ্রীলঙ্কা, তার উপরে প্রেমদাসা স্টেডিয়ামের এ রকম আদর্শ ব্যাটিং পিচ আর বিদ্যুৎ গতির আউটফিল্ড। এই ম্যাচে বিশ্বরেকর্ড হবে না তো কোন ম্যাচে হবে!

কিন্তু বিরাট আউট হতেই রান তোলার সেই ছন্দটা হারিয়ে ফেলল ভারত। আসলে ক্রিকেটে একটা অলিখিত নিয়ম রয়েছে, টপ অর্ডারে খুব দ্রুত বড় রান উঠলে মিডল অর্ডারে একটা গা ছাড়া ভাব চলে আসে। বিরাট আউট হওয়ার পরে হার্দিক পাণ্ড্য ক্রিজে নেমেই দুমদাম চালাতে গিয়ে উইকেটটা খুইয়ে বসল। তার পরের বলেই আউট হয়ে গেল রোহিতও।

আরও পড়ুন: ‘তুমিই আমাদের ক্যাপ্টেন’, আবেগাপ্লুত বিরাট

কেন ব্যাটিং অর্ডারে হার্দিক পাণ্ড্যকে আগে নামানো হল, সেটাও বুঝলাম না। আমার মনে হয়, হার্দিককে চার নম্বরে ব্যাট করতে না পাঠিয়ে ৬-৭ নম্বরে নামানোই সবচেয়ে ভাল। ডেথ ওভারে হার্দিক আরও বেশি কার্যকরী। আরও বেশি ঘাতক।

হার্দিকের জায়গায় মণীশ পাণ্ডে-কে আরও আগে নামানো যেত। গত বছর সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ও রকম দুর্ধর্ষ ব্যাটিং করে ফাইনাল জেতানো মণীশকে ৪ নম্বরে ব্যাট করতে পাঠানো যেত। ওর হাতে যে রকম বড় শট আছে, সে রকম পরিস্থিতি বুঝে আক্রমণের ঝড় তুলে দিতে পারে। প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে আজ মণীশের ঝড় তোলার মতো পরিস্থিতি ছিল না। যে সময়ে ও ব্যাট করতে নামে তখন কাউকে ক্রিজে থিতু হতে হত। যাতে উইকেট আর না হারায় ভারত।

ধোনিরও সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে বড় রান করাটা এখন সোজা নয়। কেরিয়ারের শুরুর দিকে ধোনি যে রকম চালিয়ে খেলত, ওর তিনশোতম ওয়ান ডে-তেও সেই একই আক্রমণাত্মক ভঙ্গি থাকবে, সেটা আশা করা যায় না। এই ধোনি ইনিংসের শেষের দিকে জয়ের জন্য দু’ওভারে ১০-১৫ রান দরকার হলে তুলে দেবে। কিন্তু প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ধোনিকে এখন সেট হওয়ার সময় দিতে হচ্ছে। যখন সেট হয়ে যাচ্ছে তার পরে আর বড় রান করার যথেষ্ট সময় থাকছে না।

আসলে সিরিজ আগেই পকেটে পুরে ফেলায়, বিরাট এই ম্যাচটায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চেয়েছিল। দেখতে চেয়েছিল প্রথমে ব্যাট করলে কত বড় লক্ষ্য বিপক্ষের সামনে রাখতে পারে টিম। সে দিক থেকে দেখলে বিরাটের উদ্দেশ্য সফল। শ্রীলঙ্কার চতুর্থ ওয়ান ডে ১৬৮ রানে হারেই সেটা পরিষ্কার হয়ে গেল। যা শ্রীলঙ্কায় ভারতের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। সবই হল, শুধু একটাই আফসোস। বিশ্বরেকর্ড করা গেল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE