Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘মেসিকে থামাতে অস্ত্র হয়তো কঁতে’

কঁতেকে প্রথম বার দেখেই আমার মনে পড়ে গিয়েছিল মাইকেল এসিয়েনের কথা। অনেকটা একই রকম খেলার ধরন। মাঝমাঠে বিপক্ষের ছন্দ নষ্ট করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে নামেন।

রণনীতি: মেসিকে আটকানোর দায়িত্ব হয়তো কঁতের উপরে। ফাইল চিত্র

রণনীতি: মেসিকে আটকানোর দায়িত্ব হয়তো কঁতের উপরে। ফাইল চিত্র

ট্রেভর জেমস মর্গ্যান
শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৮ ০৪:৪৪
Share: Save:

শিল্প বনাম শক্তির দ্বৈরথ। এক দিকে লিয়োনেল মেসি। অন্য দিকে এনগোলো কঁতে। আজ, শনিবার কাজানে বিশ্বকাপের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে কে জিতবেন, তা অবশ্য সময়ই বলবে।

কঁতেকে প্রথম বার দেখেই আমার মনে পড়ে গিয়েছিল মাইকেল এসিয়েনের কথা। অনেকটা একই রকম খেলার ধরন। মাঝমাঠে বিপক্ষের ছন্দ নষ্ট করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে নামেন। ক্লান্তিহীন ভাবে পুরো নব্বই মিনিট দৌড়ন। চেলসির প্রাক্তন তারকা ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, মেসিকে আটকাতে পারেন কঁতে-ই। ল্যাম্পার্ডের অনুমান ঠিকই ছিল। গত মরসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগেই বার্সেলোনার বিরুদ্ধে প্রথম লেগে ঘরের মাঠে মেসিকে কার্যত খেলতেই দেননি কঁতে। আমি নিশ্চিত ভাবেই বলতে পারি, দিদিয়ে দেশঁ শনিবার ওঁকে ব্যবহার করবেন মেসিকে আটকানোর জন্য। অবাক হব না যদি দেখি মেসির ছায়াসঙ্গী হয়ে পুরো মাঠ দৌড়চ্ছে কঁতে!

ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, মেসির মতো শিল্পীকে পুরো নব্বই মিনিট আটকে রাখা সহজ নয়। কঁতে কাঁটা উপড়ে ফেলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চেলসির বিরুদ্ধে দুই পর্বেই গোল করেছিলেন বার্সেলোনা তারকা।

তা হলে কি মেসি অপ্রতিরোধ্য? না। আর্জেন্টিনা অধিনায়ককে কী ভাবে নিষ্প্রভ করতে হয়, তা এই বিশ্বকাপেই আইসল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া দেখিয়ে দিয়েছে।

অঙ্কটা খুব সহজ, মেসির পায়ে বল পৌঁছতে দেওয়া চলবে না। অর্থাৎ, আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা যেন তাঁদের অধিনায়ককে পাস দিতে না পারেন। দ্বিতীয়ত, মেসি যেন বল নিয়ে দৌড়নোর জায়গা না পান। এই দু’টো কাজ করতে পারলেই কিন্তু আর্জেন্টিনা অধিনায়ককে থামিয়ে দেওয়া সম্ভব। তবে ম্যান মার্কিং করে মেসিকে আটকাতে গেলেই বিপদ। ফ্রান্সের উচিত, জোনাল মার্কিংয়ে ওঁকে থামানোর চেষ্টা করতে।

গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ নাইজিরিয়ার কোচ এই ভুলটাই করেছিলেন। ম্যাচের শুরু থেকে এক ফুটবলারকে মেসির সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন। ওঁর উচিত ছিল, আইসল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়া কোচের পরিকল্পনা অনুসরণ করে খেলা। নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে মেসির গোলটা মনে পড়ছে? প্রচণ্ড গতিতে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে ঢুকে পড়ে এভার বানেগার পাস বাঁ ঊরু দিয়ে নামিয়ে ডান পায়ে শটে গোল করে এগিয়ে দেন আর্জেন্টিনাকে।

ফ্রান্স মনে হয় এই ভুলটা করবে না। ইন্টারনেটে পড়ছিলাম, দেশঁ নাকি আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে ছক বদলের ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৪-৩-৩ ছকে খেলেছিলেন পোগবারা। তার পরের দু’টো ম্যাচে অস্ত্র ছিল ৪-৪-১-১ ফর্মুলা। এই ম্যাচে ফের ৪-৩-৩ ছকে খেলার ভাবনা দেশঁর। মাঝমাঠে কঁতের সঙ্গে থাকবেন কোঁহতা তুলিসো ও পল পোগবা।

দেশঁ নিজে দুর্দান্ত ফুটবলার ছিলেন। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের জয়ের নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। দেশঁ জানেন, একা কঁতের পক্ষে পুরো ম্যাচ মেসিকে আটকে রাখা কঠিন। তাই তাঁকে সাহায্য করার জন্য থাকবেন পোগবা। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ম্যানেজার মোরিনহো ফরাসি তারকাকে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবেই খেলান। এঁদের ঠিক পিছনেই থাকবেন রাফায়েল ভারান ও স্যামুয়েল উমতিতি। ওঁরা দুজনেই খুব ভাল জানেন মেসির শক্তি ও দুর্বলতা কোথায়। রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে ভারান সামলান আর্জেন্টিনা অধিনায়ককে। উমতিতি তো বার্সেলোনারই ডিফেন্ডার। ওঁরাই এখন প্রধান ভরসা দেশঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE