দু’বছর আগে আইপিএল জেতার সময়ও ইউসুফের এ রকম নৃশংস বা দর্শনীয় যাই বলুন, ইনিংস দেখিনি যেটা ও হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে খেলল। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে দুটো টুর্নামেন্টের মধ্যে মিলও রয়েছে।
২০১২ আইপিএলেও টানা হারে আমরা পিছিয়ে পড়েছিলাম আর সে বারও টুর্নামেন্টে ফিরতে আমাদের পরপর মাচ জিততে হত। সাতটা ম্যাচ জিতেছিলাম সে বার। এ বারও আমরা ঠিক সেটাই আবার করে দেখিয়েছি।
এটা সত্যি যে কেকেআর শিবিরের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। তার সঙ্গে এও ঠিক যে বিপজ্জনক আত্মতুষ্টি গেড়ে বসেনি। মাসখানেক আগেই যে আমরা সাতটার মধ্যে পাঁচটা ম্যাচ হেরে বসেছিলাম সেটা আমাদের পা মাটিতে রাখতে সাহায্য করেছে। আসলে একটা দল হিসেবে হোক বা ব্যক্তিগত স্তরে, প্রত্যেক প্লেয়ারের আত্মবিশ্বাস থাকাটা দারুণ ব্যাপার। কিন্তু দেখতে হবে, এই আত্মবিশ্বাসটা যেন আত্মতুষ্টিতে বদলে না যায়।
সেমিফাইনালে পৌঁছনো নিয়ে ছ’সপ্তাহ ফোকাস করার পর এত দিন আমরা যা করেছি, সেটা ভুলে যেতে হবে এ বার। যতই শেষ চারে ওঠাটা কঠিন বা প্রথম দুই দলে থাকাটা প্রচণ্ড শক্ত কাজ হোক না কেন, এখন আর সে দিকে তাকিয়ে লাভ নেই।
তার মানে অবশ্য এই নয় যে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ইউসুফের মারকাটারি ইনিংসের রিপ্লে কেউ দেখবে না। বহু বছর ধরে দেখবে, আর চমকেও উঠবে। পাঁচ-ছ’বছর আগে এরকম ইনিংসকে অসম্ভব বলে ধরা হত। কিন্তু আইপিএলে প্রতি বছর আমরা সম্ভব আর অসম্ভবের সংজ্ঞাটা বদলে ফেলছি। তার মধ্যে ইউসুফের ইনিংসটা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে।
মাঠে ব্যাট হাতে ও রকম বিস্ফোরক লাগলে কী হবে, বিরাট চেহারার মানুষটা কিন্তু আদতে বেশ চুপচাপ। খুব বেশি কথা বলে না। এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন সেটা কেন। ক্রিকেটে শব্দের থেকেও কাজে অনেক বেশি কিছু বলা যায়। ওর জন্য টুর্নামেন্টটা কিছুটা চুপচাপই কাটছিল হয়তো, কিন্তু ও এখন একাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারছে। বিপক্ষও বুঝে গিয়েছে, ইউসুফ আউট না হলে ও একাই ম্যাচ শেষ করে দেবে।
আশ্চর্য হওয়ার মতো ঘটনা কেরিয়ারে অনেক দেখেছি। কিন্তু ইউসুফের মতো এত পরিষ্কার ভাবে শট মারতে কাউকে দেখিনি। বারবার হায়দরাবাদকে সেই দিনটা মনে করিয়ে দিতে খারাপ লাগছে, তবে না বলে পারছি না যে একটা ক্যাচ ফস্কানোর কতটা মূল্য চোকাতে হতে পারে ইউসুফের ইনিংস সেটা যন্ত্রণার সঙ্গে ওদের স্মরণ করিয়ে দেবে।
ইউসুফের ইনিংস আমাদের সরাসরি ফাইনালে যাওয়ার একটা সুযোগ করে দিয়েছে। মঙ্গলবার পঞ্জাবকে আবার হারাতে পারলেই আমরা ফাইনালে উঠব। তার সঙ্গে এটাও ভাল লাগছে ভেবে যে প্রথম কোয়ালিফায়ারে ব্যর্থ হলে আমাদের একটা দ্বিতীয় সুযোগও রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের খেলতে হবে এলিমিনেটরের বিজয়ী দলের বিরুদ্ধে। তবে সেই প্যারাশুটটা ব্যবহার না করতে পারলেই ভাল।
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ম্যাচটার আগে আমি নির্দিষ্ট প্লেয়ারের জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনার উপর জোর দিয়েছিলাম। সেটা আমরা নিখুঁত ভাবে কাজেও লাগিয়েছিলাম। আবার সেই কাজটা না করতে পারার কোনও কারণ নেই। পাশাপাশি আমাদের একটা ‘গোপন’ অস্ত্র আর গোপন নেই। সেটা রবিন নয়, সুনীল নারিনও না। সেটা ইডেন গার্ডেন্স আর তার মধ্যে থাকা সমর্থকরা। দর্শকরাই আমাদের দ্বাদশ প্লেয়ার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy