অপেক্ষা। বুধবার নাইটদের প্র্যাকটিসে নারিন। ছবি : উৎপল সরকার
আমাদের অস্ট্রেলীয় রিক্রুট ক্রিস লিন অসাধারণ ছেলে। ও আমাদের প্রথম দলে এই আছে, এই নেই। কিন্তু একটুও গজগজ করে না। ওর থেকে যা কিছু চাওয়া হয়, সব করে, এমনকী তার চেয়েও অনেক বেশি। অধিকাংশ অস্ট্রেলিয়ান টিম ক্যাপ বা টিম সং নিয়ে বরাবরের ঐতিহ্যশালী। লিন-ও সে ব্যাপারে ব্যতিক্রম নয়। আমাদের ছেলেটা কেকেআরের আরও একটা টিম সং বানিয়ে ফেলেছে। এবং ও-ই গানটার মুখ্য গায়ক। অথবা অস্ট্রেলিয়ায় যেমন বলা হয়ে থাকে— লিন হল কলকাতা নাইট রাইডার্সের সং মাস্টার।
লিনের এই গানটা আমাদের আসল ‘করব, লড়ব, জিতব’-র চেয়ে অনেকটা আলাদা। গানের কথাগুলো এ রকম:
তো তোমার হাত বুকে রাখো আর গাও...
কেকেআরের হয়ে খেলা মানে সব কিছু...
ই়ডেন গার্ডেন্স থেকে প্রতিটা মোড়ে...
এটা আমার-তোমার চেয়ে অ-নে-ক বেশি...
আমরা জড়ো হয়েছি এসআরকের জন্য খেলতে...
আমাদের রক্তে বেগুনি...
ইয়াউউউউউউউ বিউটি!!!
গানের কথাগুলো আমি একটুও পাল্টাইনি। একেবারে আক্ষরিক তুলে দিলাম। এমনকী ‘ইয়াউ’-তে যতগুলো ‘ডব্লিউ’ আছে তা-ও। আপনারা কেকেআরের সরকারি ফেসবুক পেজ-এ দেখে নিতে পারেন, লিন কী ভাবে প্রধান গায়ক হয়ে উঠেছে আর আমরা সবাই ওর সঙ্গে হেড়ে গলায় কোরাস দিচ্ছি।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে এ রকম ছেলে পছন্দ করি। আমার যখন বেশ ‘বোরিং’ লাগে, লিন-ব্র্যাড হগের মতো প্রাণবন্ত চরিত্ররাই ড্রেসিংরুমে প্রাণ আনে। আমি যতক্ষণে আমার পরের কভার-ড্রাইভ নিয়ে ভাবব, হগের মতো প্লেয়ার পরের মজাটা কী করবে সেটা ভাবতে বসবে!
গুজরাত লায়ন্সের কাছে আমাদের হারের পর টিমের ‘মু়ড’ যথেষ্ট খারাপ ছিল। আরও এক বার ব্যাপারটা আমাদের হারটা নয়, বরং যে ভাবে আমরা গোহারান হেরেছি সেটা। রবিবার আমরা হারলাম আর আমাদের পরের ম্যাচ সামনের শনিবার, যার মানে পাঁচ দিন থাকছে মাঝে। বিশ্বাস করুন, কোনও হারের পর এত লম্বা বিশ্রাম কখনও সাহায্যে আসে না, কারণ পরের অ্যাকশনে নামার জন্য আমি ছটফট করি এই সময়।
অলস সোম আর মঙ্গলবারের পর বুধবার আমরা পুরোদমে প্র্যাক্টিস শুরু করলাম। পুরো গ্রুপের মধ্যে এনার্জির বহরটা দেখে ভাল লাগল। তবে এর কারণটা কী আমি জানি না। ক্রিকেট খেলার দারুণ আনন্দটাই কি কারণ? না কি মঙ্গলবার কলকাতায় ওদের ‘স্পা’ করিয়ে নতুন ভাবে তরতাজা হওয়াটা? যেটাই হোক, ব্যাপারটা কাজে দিয়েছে।
আহত জন হেস্টিংসের জায়গায় অস্ট্রেলীয় পেস বোলার শন টেট আমাদের দলে যোগ দিয়েছে। আমরা সবাই জানি, ক্রিকেট বল হাতে কী করতে পারে ও। ফাস্ট বোলার হিসেবে ও খুব মিশুকে আর আমুদে। আশা করি বাইশ গজে ও ওর উপস্থিতি টের পাওয়াবে। গত দু’দিন আমাদের কেকেআর পরিবারে আরও কয়েকজনকে আমরা অভ্যর্থনা জানিয়েছি। মর্নি মর্কেলের স্ত্রী আর ছেলে সোমবার ওর সঙ্গে যোগ দিয়েছে। আমি ঠিক জানি না, তবে আমাদের একজন সাপোর্ট স্টাফ খবর দিল যে, বিগ ম্যান নাকি ওর বাচ্চার জন্য ন্যাপি কিনতে মার্কেট গিয়েছিল। আমি চিন্তাও করতে পারছি না, একজন আদ্যন্ত ফাস্ট বোলার ডায়াপার পাল্টাচ্ছে!
এ-ও শুনলাম, সাকিব-আল-হাসান ওর স্ত্রী আর মেয়েকে আনতে দমদম এয়ারপোর্ট গিয়েছিল। ওয়াসিম ভাইয়ের স্ত্রী আর বাচ্চা মেয়ে কলকাতায় কিংবদন্তির সঙ্গে ফের যোগ দিয়েছে। ইউসুফ পাঠানের বাচ্চারা তো বিগ ম্যানকে তুমুল ব্যস্ত রেখে চলেছেই। আর আমাদের ফিজিও অ্যান্ড্রু লিপাস, ওর স্ত্রী আর দুটো বাচ্চা মিলে তো একটা সুন্দর ছবি টিমের কাছে।
কেকেআরের খুদেদের টিম-কে সম্পূর্ণ করেছে আমার ছোট্ট রত্নটি। আমাদের টিম হোটেলের বেবি পুল এখন যাকে বলে এক দেখার দৃশ্য! সব মায়েরা আর বাচ্চাদের একসঙ্গে স্নান-পর্ব চলছে সেখানে।
আমাদের খুদেদের দলের জন্য লিন কি একটা গান লিখতে পারে? দেখি, খবরটা নিয়ে আপনাদের কাছে আবার ফিরছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy