Advertisement
E-Paper

অবিশ্বাস্য মেসি দুর্ভাগা রোনাল্ডো

একজনের সম্পর্কে তাঁর অধিনায়কের শংসাপত্র— তাঁকে নাকি কিছু বলতেই হয় না! একটাই জিনিস জানেন তিনি। বল পেটাও! অন্যজন আবার নিজেই তাঁর সাফল্যের রসায়ন ফাঁস করছেন— তাঁর ব্যাটিংয়ের চাবিকাঠিটাই নাকি পরিস্থিতি বুঝে নিয়ে দলের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাট করা। তাঁরা হার্দিক পাণ্ড্য আর রোহিত শর্মা। এক দিন আগেই শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-বধে ভারতের দুই বাঘ।

সোহম দে

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:৫৩

ইপিএলের ক্লাবকে তিনি নাকি গোল দিতে পারেন না! তাঁর সবচেয়ে অপয়া কিপার পের চেক। মঙ্গল-রাতের আগে হাফডজন ম্যাচে একবারও চেক-পোস্ট টপকাতে পারেননি লিও মেসি।

পুরনো কথা মনে করিয়ে চিমটিটা কেটে ফেলেছিলেন আর্সেন ওয়েঙ্গার। বোধহয় জানতেন না ভিমরুলের চাকে ঢিল মারলে কী হয়!

বুঝলেন যখন তখন সব ধুয়েমুছে সাফ। তাও মাত্র সাড়ে ১৪ সেকেন্ডে!

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আর্সেনালের চেক-কে লিও মেসির জোড়া গোল দেওয়ার প্রথমটা তো ওই সাড়ে ১৪ সেকেন্ডের অবিস্মরণীয় মুভ থেকেই! যা দেখার পর কার্শিয়াং থেকে কাকদ্বীপ এক বাক্যে স্বীকার করতে বাধ্য ইউরোপিয়ান ফুটবলে এ বারের ম্যান অব দ্য উইক ফের এলএম টেন। যে দলে মিলছে কট্টর রোনাল্ডো ভক্তও।

মঙ্গলবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম পর্বের হাইভোল্টেজ ম্যাচ ছিল আর্সেনাল-বার্সেলোনা। ওয়েঙ্গারের মগজাস্ত্র বনাম মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ ত্রিফলা। যার শেষে দুটো জিনিস পরিষ্কার— এক, এই মুহূর্তে মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের অ্যান্টিডোট কোনও বিপক্ষ কোচের হাতেই নেই। দুই, ইউরোপে ইংলিশ ক্লাবের অবস্থা সেই ছ্যাঁকরা গাড়ির মতোই।

ওয়েঙ্গারের মতো দুঁদে কোচও বোধহয় কেঁপে গিয়েছিলেন মাঠে নামার আগে। না হলে কোন দুঃখে বলে বসবেন, ‘‘অ্যাওয়ে ম্যাচে যাতে লড়াইটা বেঁচে থাকে...।’’

বিপক্ষ কোচ এ কথা বলা মানে তো পাহাড়ি চিতার সামনে মাংসের টুকরো নাড়াচাড়া করা। সেই জোশেই দ্বিতীয়ার্ধে টানা ছ’টা পাসে এত দিন না হওয়া চেক-বধ আর্জেম্তিনার রাজপুত্রের। কিন্তু একা মেসি তো নন! মেসি যদি ফেরারি হন তা হলে লুইস এনরিকের টিমে নেইমার আর সুয়ারেজ যেন রোলস রয়েজ আর ল্যাম্বর্ঘিনি।

ভারতীয় সময় রাত আড়াইটার আশেপাশে যখন মেসি তাঁর চেক-বধ পালা সাঙ্গ করছেন তখন টুইটারে এমএসএন বন্দনার সুনামি। কেউ লিখছেন, ‘‘এমএসএন-এর চেয়ে সেরা ত্রিফলা আর কেউ আছে নাকি?’’ আবার কেউ চোদ্দো বছর আগে ব্রাজিল টিমের থ্রি-আর—রোনাল্ডো, রোনাল্ডিনহো, রিভাল্ডো নস্ট্যালজিয়ায় বিভোর।

বার্সার প্রথম গোলটার সময় পিকের থেকে মুভমেন্ট শুরু হয়ে শেষ মেসিতে। এনরিকের আমলে এই ফুটবলটাই তো আমদানি করেছে বার্সা। পাস খেলব কিন্তু একটা সঠিক গতি বজায় রেখে। আগের তিকিতাকার চেয়ে অনেক বেশি ডিরেক্ট। সঙ্গে রিজার্ভ বেঞ্চটাও বার্সা কোচের কাছে যেন আরামকেদারা। আসছেন, বসছেন, হাসছেন। বিন্দাস।

ইংলিশ ক্লাবের জন্য ইউরোপ যেন এখন সমাধিস্থল। একটা সময় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ চারের মধ্যে তিনটে দলই থাকত ইপিএলের। এখন তা সোনালী অতীত। প্যারিসের বিরুদ্ধে প্রথম পর্বে হেরে বসে আছে চেলসি। ফর্ম হারা হ্যাজার্ড। কে বলবে এই টিমটাই গত বছরের ইংল্যান্ড সেরা। আর্সেনাল বোধহয় এখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলে রেভেনিউ-এর ভাগ পেতে। রুনির ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড এখন ইউরোপাতেও জিততে পারে না। ইউরোপে ইংলিশ ক্লাবের লাইট হাউস কেবল ম্যাঞ্চেস্টার সিটি। সিলভা-তোরে-আগেরোর গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৩-১ জিতল ডায়নামো কিয়েভের বিরুদ্ধে। পেপ গুয়ার্দিওলা আসছেন শুনে দাভিদ সিলভারাও যেন তেতে গিয়েছেন। পেপের বর্তমান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ যদিও ২-২ ড্র করল জুভেন্তাসের বিরুদ্ধে। খারাপ ডিফেন্সের জন্য।

মেসির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবার বিমর্ষ ভাল সাপোর্টের অভাবে। লা লিগায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর রিয়াল মাদ্রিদ মালাগার বিরুদ্ধে ১-১ করতেই জেগেছে এই প্রশ্নটা। বেচারা রোনাল্ডো! তাঁর পাশে না আছে কোনও নেইমার, না আছে কোনও সুয়ারেজ। আছেন বেঞ্জিমা। যিনি গোল করলেও স্কিলে নে‌ইমার-সুয়ারেজ তো নন। আর গ্যারেথ বেল! তিনি তো মাঠের থেকে বেশি থাকেন হাসপাতালে। চোট আর চোট!

রিয়ালে পান থেকে চুন খসা মানেই আসলে রোনাল্ডোকে ধরো!

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy