Advertisement
২৯ মার্চ ২০২৩
Novak Djokovic

৩৫-এ ২২ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম! রাফার বিশ্বরেকর্ডে ভাগ জোকারের, জয়ী অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে যে ছন্দে শেষ কয়েকটি ম্যাচে খেলেছেন, সেই একই আগ্রাসন বজায় রেখে ফাইনালে স্টেফানোস চিচিপাসকে হারালেন নোভাক জোকোভিচ। জিতলেন ৬-৩, ৭-৬ (৭-৪), ৭-৬ (৭-৫) গেমে।

novak djokovic wins australian open

দশম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতলেন নোভাক জোকোভিচ। ছুঁয়ে ফেললেন রাফায়েল নাদালকে। ছবি: রয়টার্স

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:১৩
Share: Save:

অঘটন হল না। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে যে ছন্দে শেষ কয়েকটি ম্যাচে খেলেছেন, সেই একই আগ্রাসন বজায় রেখে ফাইনালে স্টেফানোস চিচিপাসকে হারালেন নোভাক জোকোভিচ। সার্বিয়ার খেলোয়াড় জিতলেন ৬-৩, ৭-৬ (৭-৪), ৭-৬ (৭-৫) গেমে।এই নিয়ে দশম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতলেন নোভাক জোকোভিচ। ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে ছুঁয়ে ফেললেন রাফায়েল নাদালকে। একই সঙ্গে টেনিসের ক্রমতালিকায় কার্লোস আলকারাজকে সরিয়ে ফিরে পেলেন শীর্ষস্থান।

Advertisement

চিচিপাসের ফোরহ্যান্ডটা কোর্টের বাইরে পড়তেই মাথায় হাত দিয়ে একটা ইঙ্গিত করলেন জোকোভিচ। দর্শকদের সামান্য অভিবাদন জানিয়ে সটান উঠে গেলেন দর্শকাসনে, যেখানে ছিলেন তাঁর কোচ গোরান ইভানিসেভিচ এবং বাকিরা। উল্লাস করতে করতেই শুয়ে পড়লেন। জোকোভিচের চোট ফেটে বেরোচ্ছিল জল। এর আগে কোনও দিন ট্রফি জেতার পর এতটা কাঁদতে দেখা যায়নি। ৩৫ বছরে ২২তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার জন্য যে এই কান্না নয়, এটা প্রায় সবাই বুঝতে পেরেছেন। নিঃসন্দেহে এক বছর আগের ঘটনা মনে পড়ে যাচ্ছিল তাঁর। অস্ট্রেলিয়ায় এসেও নামতে পারেননি কোর্টে। টানা দু’সপ্তাহ সরকারের সঙ্গে আইনি লড়াই চলার পর মাথা নীচু করে কার্যত চোরের মতো দেশ ছাড়তে হয়েছিল। অপরাধ ছিল কোভিড প্রতিষেধক নিতে রাজি না হওয়া। এক বছর পর কী অভূতপূর্ব প্রত্যাবর্তন! রবিবারের ট্রফি জয় যেন অস্ট্রেলিয়ার পূর্বতন সরকারকে সপাটে জবাব।

চলতি অস্ট্রেলিয়ার ওপেনে জোকোভিচকে এক বারই চার সেটের ম্যাচ খেলতে হয়েছে। দ্বিতীয় রাউন্ডে ফ্রান্সের খেলোয়াড় এনজো কুয়াকুদের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচের দ্বিতীয় সেট টাইব্রেকারে হারার পর বাকি দু’টি সেটে জোকোভিচ প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতে দেননি। তার পর যে চারটি ম্যাচ খেলেছেন, কোনওটিতেই তাঁর প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় লড়াই দিতে পারেন। সবক’টি জয়ই এসেছে স্ট্রেট সেটে। শেষ তিনটি ম্যাচে তো বিপক্ষকে আট গেমের বেশি নিতেই দেননি। এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল জোকোভিচের খেলা।

মনে করা হয়েছিল, চিচিপাস সেই যাত্রা থামাতে পারবেন। বিশেষত, গত কয়েক দিন ধরে যে ছন্দে ছিলেন গ্রিসের খেলোয়াড়, তাতে কিছুটা লড়াই অন্তত আশা করা হয়েছিল। সেটা দেখা গেল না। ম্যাচের মাঝে বার কয়েক চিচিপাস প্রতিভার ঝলক দেখিয়েছেন বটে। জোকোভিচের আগ্রাসনের সামনে তা টিকতে পারেনি।

Advertisement

রবিবার প্রথম সেটের চতুর্থ গেমেই চিচিপাসকে ব্রেক করেন জোকোভিচ। দুই খেলোয়াড় প্রথম দিকে নিজেদের সার্ভ ধরে রাখার পর চতুর্থ গেমে লম্বা র‌্যালি দেখা যায়। জোকোভিচ ব্রেক করেন চিচিপাস ডাবল ফল্ট করায়। এর পরে দুই খেলোয়াড়ই নিজেদের সার্ভ ধরে রেখেছিলেন। কিন্তু ওই একটি ব্রেকে যে ব্যবধান তৈরি হয়ে গিয়েছিল, তা আর মেটানো যায়নি।

দ্বিতীয় সেটে তাই শুরু থেকেই চিচিপাসের লক্ষ্য ছিল কোনও মতে যাতে ব্রেক না করতে পারেন জোকোভিচ। সেটা করতে গিয়ে দুর্দান্ত কিছু রিটার্ন এবং ফোরহ্যান্ড বেরল চিচিপাসের র‌্যাকেট থেকে। লম্বা গ্রিক খেলোয়াড়ের সার্ভ এমনিতেই শক্তিশালী। তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যায় তাঁর ব্যাকহ্যান্ডকেও। এক হাতে ব্যাকহ্যান্ড দর্শনীয় করে তুলেছিলেন রজার ফেডেরার। পরের দিকে যা দেখা যায় গ্রিগর দিমিত্রভের হাতে। সেই তালিকায় চিচিপাস ঢুকে পড়লে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এতটাই শক্তিশালী ব্যাকহ্যান্ড মারতে পারেন তিনি।

টান টান লড়াই হল দুই খেলোয়াড়ে। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিলেন না। ফলে দু’জনেই নিজেদের সার্ভ ধরে রাখলেন শেষ পর্যন্ত। টাইব্রেকারে বাজি মারলেন জোকোভিচ। সেখানেও শুরুতে লড়াই হয়েছে। ৪-৪ ছিল এক সময়। চিচিপাসের জোড়া ভুলের সুযোগ নিয়ে এগিয়ে যান জোকোভিচ। সেখান থেকে তাঁকে আর আটকানো যায়নি।

২০১০-এর পর কোনও দিন গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে প্রথম দু’টি সেট জেতার পর হারেননি জোকোভিচ। সেই নজির হঠাৎই ভাঙার উপক্রম হয়েছিল তৃতীয় সেটের শুরুতে। প্রথম গেমেই জোকোভিচকে ব্রেক করে দেন চিচিপাস। টেনিসপ্রেমীরা তখনই নড়েচড়ে বসলেন। মনে প্রশ্ন, অ্যান্ডি মারে কিছু দিন আগে যে প্রত্যাবর্তন দেখিয়েছিলেন, এ বার চিচিপাসের সেটা দেখানোর পালা? তবে আনন্দ স্থায়ী হল মাত্র কিছু ক্ষণ। পরের গেমেই চিচিপাসকে ব্রেক করলেন জোকোভিচ। খেলা আবার সমান-সমান। তার পর আবার দ্বিতীয় সেটেরই প্রতিফলন। দু’জনেই নিজেদের সার্ভ ধরে রাখলেন। টাইব্রেকারে শুরুতেই ৫-০ এগিয়ে গেলেন জোকোভিচ। তার পরেও প্রত্যাবর্তন করলেন চিচিপাস। কেড়ে নিলেন পাঁচটি পয়েন্ট। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.