ফেড কাপ আসার পর বাগান তাঁবু। বুধবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
বউবাজারের শান্তি চক্রবর্তীর বয়স বাহাত্তর বছর। প্রৌঢ়া আদ্যন্ত মোহনবাগান সমর্থক। দীর্ঘ আট বছর পর সবুজ-মেরুনের ফেড কাপ জয়ের আনন্দের শরিক হতে তুমুল ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়েও সবুজ-মেরুন পতাকা হাতে হাজির ক্লাব তাঁবুতে।
মির্জাপুর স্ট্রিটের ধীমান ভট্টাচার্যের বয়সও বাহাত্তর পেরিয়েছে। প্রতিবন্ধী মানুষটি ভাল করে হাঁটতে পারেন না। তবু একই লক্ষ্যে বাগানে এলেন সমর্থকদের কাঁধে চেপে।
ক্লাস ওয়ানের সৌমি মুখোপাধ্যায় বাবার হাত ধরে তাঁবুতে এসেছিল উৎসবের শরিক হতে। বাগান কোচ সঞ্জয় সেন ড্রেসিংরুমে নকুড়ের সন্দেশ কেটে তার মুখে তুলে দিতেই মুখে হাইভোল্টেজ হাসি বাটানগরের খুদে সবুজ-মেরুন সমর্থকের মুখে।
তাঁবুর বাইরে তখন কান পাতা দায়, ‘মোহনবাগান-মোহনবাগান’ স্লোগানে। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ছে, যা দেখে এক সমর্থকের রবীন্দ্রগান, ‘আনন্দধারা বহিছে...।’
এয়ারপোর্ট থেকে মাণিকতলা হয়ে গোষ্ঠপাল সরণির রং বুধবার দুপুরে শুধুই সবুজ-মেরুন। তখনই যে ভারতসেরা হওয়ার কাপ বগলদাবা করে তাঁবুতে ফিরল সঞ্জয় ব্রিগেড।
এক বছর আগে আই লিগ জয়ী বাগান টিমের শহরে ফেরার সময় যে বাঁধভাঙা আবেগ দেখা গিয়েছিল, এ দিন সেই ঘটনারই প্রায় পুনরাবৃত্তি। তুমুল ঝড়বৃষ্টির উপেক্ষা করে হাজার তিনেক সবুজ-মেরুন সমর্থক এসেছিলেন সাফল্যের স্বাদ চেটেপুটে নিতে। তাঁবুতে প্রাক্তন ফেড কাপ জয়ী বাগান অধিনায়কেরা বরণ করে নিলেন নতুন ভারতসেরাদের। কোচ সঞ্জয় সেনকে বরণ করলেন প্রদীপ চৌধুরী। মানস-বিদেশ-কৃষ্ণেন্দু-বাবু মানিরা হাজির থাকলেও ছিলেন না শিশির ঘোষ, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়রা। গরহাজির এ মরসুমের বাগান অধিনায়ক শিল্টন পাল-ও। সংবর্ধনার মঞ্চ থেকেই সঞ্জয়ের প্রতিজ্ঞা, ‘‘পরের বার কোচ থাকলে আই লিগ-ফেড কাপ দু’টোই জিতব।’’
তবে উৎসবের দিনে দু’টো ধূসর তথ্যও থাকছে বাগানের জন্য। গুয়াহাটি থেকে আসার পথে এ দিন ফেড কাপ তোলা নিয়ে আপত্তি করেছিলেন সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার কর্মীরা। যা নিয়ে মৃদু উত্তেজনা তৈরি হয় গুয়াহাটি বিমানবন্দরে। পরে অবশ্য ট্রফি নিয়ে টিম কলকাতা আসার অনুমতি পেতে সেই উত্তেজনার সমাপ্তি হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy