Advertisement
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩

সুদীপের মহাকাব্যে সোনালি স্বপ্ন

গত বছর তাঁর প্রথম রঞ্জি মরসুম দেখে ময়দান টের পেয়েছিল, আরও এক জন আসছে। আসছে এমন এক জন যে হবে ভবিষ্যতের লগ্নি, মনোজ তিওয়ারি-লক্ষ্মীরতন শুক্লের পর বঙ্গ ব্যাটিংকে যে টানবে। সোমবারের বডোদরায় সুদীপ চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে উদ্ভূত তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা দিয়ে গেল। মাঠে উপস্থিত বাংলার বাকি দশ শুধু নন, প্রতিপক্ষের এগারোও বুঝে গেল ভবিষ্যতে আবার ম্যাচ পড়লে এই ছিপছপে লম্বা তরুণকে নিয়েও সমান ভাবতে হবে, যতটা এখন ভাবতে হয় মনোজদের নিয়ে!

সুদীপ: ১৯২।

সুদীপ: ১৯২।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫৬
Share: Save:

গত বছর তাঁর প্রথম রঞ্জি মরসুম দেখে ময়দান টের পেয়েছিল, আরও এক জন আসছে। আসছে এমন এক জন যে হবে ভবিষ্যতের লগ্নি, মনোজ তিওয়ারি-লক্ষ্মীরতন শুক্লের পর বঙ্গ ব্যাটিংকে যে টানবে। সোমবারের বডোদরায় সুদীপ চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে উদ্ভূত তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা দিয়ে গেল। মাঠে উপস্থিত বাংলার বাকি দশ শুধু নন, প্রতিপক্ষের এগারোও বুঝে গেল ভবিষ্যতে আবার ম্যাচ পড়লে এই ছিপছপে লম্বা তরুণকে নিয়েও সমান ভাবতে হবে, যতটা এখন ভাবতে হয় মনোজদের নিয়ে!

যাঁরা মাঠে উপস্থিত থেকে বাংলার আর এক বাঁ হাতির শিল্প সৃষ্টি দেখলেন, তাঁদের ঘোর তো সন্ধেতেও কাটল না। অধিনায়ক মুগ্ধ। বহু দিন এমন ব্যাটিং নাকি দেখেননি তিনি। টিম ম্যানেজমেন্টের কারও কারও কথা শুনলে মনে হবে, রঞ্জি উদ্বোধনীতে টিমের নাম্বার থ্রি-র এমন ইনিংস বাকি মরসুমে আত্মবিশ্বাসের শালগ্রামশিলা হয়ে থাকল।

এক কথায়, অভাবনীয় ব্যাটিং। উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হলেও ১৯২ সহজে হয় না। তার জন্য প্রতিভা লাগে, লাগে কঠোর পরিশ্রম। ছোটবেলা থেকে যে দু’টো বরাবরের ‘ফিক্সড ডিপোজিট’ থেকেছে সুদীপের। আফশোস একটাই, মাত্র আটটা রানের জন্য ডাবল সেঞ্চুরিটা হল না।

খারাপ লাগছে না? “একটু লাগছে। জীবনের প্রথম সেঞ্চুরিটা ডাবল সেঞ্চুরি হয়ে থাকত। কিন্তু টিমের দরকারের সময় যে আমি কিছু করতে পেরেছি, সেটাই আসল,” সোমবার সন্ধেয় বডোদরা থেকে ফোনে বলছিলেন মহানায়ক। সৌরভ-সচিনকে যিনি আদর্শ ক্রিকেটার মানেন, যিনি জানেন প্রত্যাশার চাপ কী ভাবে সামলাতে হয়। “প্রত্যাশার চাপটাই আমার মোটিভেশন।”

অপরাজিত ৯১ স্কোরে এ দিন ব্যাটিং শুরু করেছিলেন সুদীপ। প্রথম ঘণ্টার মধ্যে সেঞ্চুরি, চতুর্থ উইকেটে শ্রীবৎস গোস্বামীর (৮৭) সঙ্গে ১৫৬ রানের জুটি, তার পর লক্ষ্মীর (৪৬) সঙ্গে ১০৮ দুশোর আগে কিপারের হাতে ধরা পড়া পর্যন্ত দিনটা সুদীপেরই ছিল। সাত ঘণ্টার ইনিংসে ৩০৩ বলে ১৯২, ২১টা বাউন্ডারি সমেত। লক্ষ্মী শেষ লগ্নে দু’টো উইকেট তুললেন ঠিক, কিন্তু বঙ্গ বোলারদের প্রতিপক্ষকে আক্রমণের সাহসটা থাকত না সুদীপের ইনিংস না থাকলে। তাঁর জন্যই বাংলা প্রথম ইনিংসে ৪৫৫, তাঁর জন্যই ম্যাচে বাংলার ভবিষ্যৎ সোনালি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলা ৪৫৫ (সুদীপ ১৯২, শ্রীবৎস ৮৭, লক্ষ্মী ৪৬, স্বপ্নিল সিংহ ৫-৯৯), বরোদা ৮৬-৩ (লক্ষ্মী ২-৪)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE