Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ভিন রাজ্যের পথে চিন্তা অঙ্কিতারও

শহরের এক টেবল টেনিস তারকা সম্প্রতি এই রাজ্য ছেড়ে হরিয়ানার হয়ে খেলার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এ বার শিলিগুড়ির আরেক খেলোয়াড়ও সেই পথে চলার ভাবনা চিন্তা করছেন বলে জানালেন। তিনি অঙ্কিতা দাস। একের পর এক আন্তর্জাতিক স্তরের এই খেলোয়াড়দের রাজ্য ছাড়ায় বিতর্কও তৈরি হচ্ছে টেবল টেনিস মহলে।

মন্ত্রীর দফতরে অঙ্কিতা।—নিজস্ব চিত্র

মন্ত্রীর দফতরে অঙ্কিতা।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৬ ০২:১৪
Share: Save:

শহরের এক টেবল টেনিস তারকা সম্প্রতি এই রাজ্য ছেড়ে হরিয়ানার হয়ে খেলার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এ বার শিলিগুড়ির আরেক খেলোয়াড়ও সেই পথে চলার ভাবনা চিন্তা করছেন বলে জানালেন। তিনি অঙ্কিতা দাস। একের পর এক আন্তর্জাতিক স্তরের এই খেলোয়াড়দের রাজ্য ছাড়ায় বিতর্কও তৈরি হচ্ছে টেবল টেনিস মহলে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে হরিয়ানার টেবল টেনিস সংগঠনে যোগ দিয়েছেন সৌম্যজিৎ ঘোষ। বছর চারেক আগে লন্ডন অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন সৌম্যজিৎ এবং অঙ্কিতা দু’জনেই। সিনিয়র টেবল টেনিসে জাতীয় চ্যাম্পিনয়ও তাঁরা দু’জন। অথচ রাজ্য থেকে সে ভাবে সম্মান পাননি বলে অভিযোগ। মান্তু ঘোষ, মৌমা দাসরা বঙ্গরত্ন, বঙ্গবিভূষণ পেয়েছেন। সেটাও মেলেনি অঙ্কিতা, সৌম্যজিৎদের। তা ছাড়াও শিলিগুড়ির টেবল টেনিস মহলের একাংশ মনে করছেন, ক্রিকেট ফুলটবলাররা এ রাজ্যে যতটা সম্মান পান, টেবল টেনিসে জাতীয় সেরা হয়েও সে সম্মান জোটে না টেবল টেনিস তারকাদের। জাতীয় খেতাব পেয়েও টেবল টেনিসের অনেকেই জমি পান না।

মান্তু ঘোষের স্বামী তথা নর্থবেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুব্রত রায়ের কথায, ‘‘মান্তু, মৌমাদেরও অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তবে তাঁরা বাংলা ছাড়েননি। তা ছাড়া অঙ্কিতা, সৌম্যজিৎরা এখন যে স্তরে খেলছেন, তাতে অন্তত সাত থেকে আট বছর তাঁরা পেট্রোলিয়াম স্পোর্টস প্রোমোশন বোর্ডের হয়েই খেলবেন। তাই যে রাজ্যেই তাঁরা থাকুন, সেই রাজ্যের হয়ে খুব কমই খেলার সুযোগ পাবেন।’’

শিলিগুড়ির অন্যতম টেবল টেনিস কোচ অমিত দাম জানান, জাতীয় প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হলে অন্য রাজ্যগুলি থেকে খেলোয়াড়দের অনেক সম্মান মেলে। এ রাজ্যে টেবল টেনিসে এখনও সেটা সকলে পান না। সে ক্ষেত্রে ক্ষোভ, অসন্তোষ থাকে। খেলাধুলোর জন্য চাকরি পেতে অনেক সময় অ্যাসোসিয়েশনের একটা ভূমিকা থাকে। তবে ওঁরা যে র‌্যাঙ্কের খেলোয়াড়, তাতে যে রাজ্যের হয়েই খেলুন, ওদের সমস্যা হবে না।

সৌম্যজিতের পরিবার থেকে এ দিনও জানানো হয়েছে, এখন তিনি হরিয়ানার টেবল টেনিস সংগঠনের হয়েই খেলবেন। সেই মতো নর্থ বেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের ছাড়পত্রও নিয়েছেন। কিন্তু আলোচনা হলেও এক জন ভিন রাজ্যের হয়ে খেলতে নাম লেখানোয় এবং আরেক জন সেই পথেই পা বাড়ানোয় প্রশ্ন উঠেছে। অথচ অলিম্পিকে অংশ নেওয়া বা জাতীয় খেতাবের পরেও ২০১৪ কমনওয়েলথে মিক্সড ডাবলসে সোনা জিতেছে অঙ্কিতারা। তা নিয়ে উচ্চবাচ্য করেননি কেউ। সিঙ্গলসে তাঁকে খেলতে দেওয়া হয়নি। অঙ্কিতার নিজের কথায়, ‘‘বাংলার হয়েই তো এত দিন খেলেছি। আমাদেরও অনেক প্রত্যাশা থাকে। তা পূরণ না হলে খারাপ তো লাগেই। তাই ভাবনা চিন্তা করছি অন্য রাজ্যের হয়ে খেলার।’’ বাংলা ছাড়লে কোন রাজ্যের হয়ে খেলতে চান? অঙ্কিতা জানান, চেন্নাইতে সুব্রহ্মনিয়ম রমনের কাছে তিনি অনেক দিন ধরেই অনুশীলন করছেন। দেশের মধ্যে টেবল টেনিস কোচ হিসেবে তিনি অন্যতম। তাই বাংলা যদি ছাড়তেই হয় চেন্নাইয়ের হয়ে খেলার কথা ভাবছি।’’

গত নভেম্বরে বাবাকে হারিয়েছেন অঙ্কিতা। তিনি খেলাধুলোয় অঙ্কিতাকে সব সময়েই উৎসাহ দিতেন। সেচ দফতরের শিলিগুড়ি তিনবাতি অফিসের কর্মী ছিলেন তিনি। চাকরি আরও পাঁচ বছর ছিল। সেই চাকরি অঙ্কিতার মা যাতে পান, সে জন্য শুক্রবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে তাঁর দফতরে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিন মাস ধরে বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। এ দিন ভোট ঘোষণা হওয়ায় এখনই তিনি তাঁকে সে ভাবে সাহায্য হয়তো করে উঠতে পারবেন না। তবে ভোট ঘোষণার আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, বিষয়টি দ্রুত হওয়ার নয়। তিনি চেষ্টা করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TT bengal ankita
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE