আকর্ষণ: প্রো-কবাডি লিগে অভিনেতা অক্ষয় কুমার। শনিবার নেতাজি ইন্ডোরে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
ঘড়ির কাঁটায় সাড়ে সাতটা বাজতেই ঢুকে পড়েছিলেন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। শুক্রবারই প্রো-কবাডি লিগে পটনাকে হারিয়েছে তাঁর টিম বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স। শনিবারের ম্যাচের আগে দলকে চাঙ্গা রাখতে তাঁদের সঙ্গেই ওয়ার্ম-আপ করতে নেমে পড়লেন অভিনেতা অক্ষয় কুমার। তাঁর আগে একান্তে কথা বলে গেলেন আনন্দবাজার-এর সঙ্গে।
প্রশ্ন: বলিউডের ‘খিলাড়ি’ কবাডির ভক্ত হলেন কবে?
অক্ষয়কুমার: কবাডি আমি ছোট থেকে খেলছি। আমার বাবা সেনাবাহিনীতে ছিলেন। উনি কুস্তিও লড়তেন। ছোটবেলায় ছুটির দিনে আমি ঘরে চক দিয়ে কোর্ট বানিয়ে বাবার সঙ্গে ওয়ান-টু-ওয়ান কবাডি খেলতাম। এটা ছিল আমার প্রত্যেক শনি, রবিবারের রুটিন। মনে রাখবেন, ক্রিকেট জনপ্রিয় হওয়ার আগেও এই খেলাটা তার চেয়েও তুমুল জনপ্রিয়। গোটা দেশে খেলা হয়।
প্র: বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স এখনও এক বারও এই টুর্নামেন্ট জেতেনি। তা সত্বেও আপনি এই টিমের মালিক হতে রাজি হয়ে গেলেন?
অক্ষয়: আরে ভাই, বেকার থেকে আমাকে চাকরি জুটিয়ে দিয়েছিল এই শহর। প্রথম চাকরি তো কলকাতাতেই। বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স কর্তারা যখন সহ-মালিক হওয়ার প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন, তখনই দারুণ লেগেছিল। কারণ কলকাতা খেলার শহর। তা ছাড়া কাজের মাঝে এখানে আসার তো একটা বাহানা পাওয়া গেল। তাই রাজি হয়ে গিয়েছিলাম দেরি না করে। আর চ্যাম্পিয়ন? আমার টিম কিন্তু এ বারের টুর্নামেন্টে সব সে বড়া খিলাড়ি।
প্র: এত আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন কোথা থেকে?
অক্ষয়: টিমের খেলা দেখেই বুঝতে পারছি অন্য টিমগুলোর তুলনায় আমার টিম বেশি ক্ষিপ্র। আর আমি তো এটাই চাই। মনে রাখবেন, এই খেলাটায় তাগড়া চেহারার চেয়েও দরকার হয় ক্ষিপ্রতা। তবেই আপনি জিতবেন। যেটা আমার টিমে রয়েছে।
প্র: বেঙ্গল ওয়ারিয়র্স-এর সব খেলা দেখেছেন?
অক্ষয়: সব ম্যাচ নিয়ম করে দেখছি। হায়দরাবাদে শুরুর ম্যাচে গিয়েছিলাম। তার পরে লন্ডনে শুটিং-এর জন্য চলে যাই। কিন্তু আমার টিম ম্যাচের সব ফুটেজ পাঠাতো। হোটেলে ফিরে সেগুলো দেখতাম।
প্র: অভিষেক বচ্চন, সচিন তেন্ডুলকর-ও রয়েছেন এ বারের লিগে।
অক্ষয়: হায়দরাবাদে সচিনের সঙ্গে বসে কবাডি ম্যাচ দেখার সময় অনেক গল্প হল। এ বারের টুর্নামেন্ট নিয়ে ওর সঙ্গে আমার একটা চ্যালেঞ্জও হয়েছে। সেটা এখন বলছি না।
প্র: মেয়েদের বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখতে গিয়েছিলেন। ঝুলন গোস্বামীর সঙ্গে আলাপ হয়েছে?
অক্ষয়: অফ কোর্স। দারুণ বোলার ঝুলন। ঝুলন গোস্বামী বোলিং এন্ড থেকে দৌড় শুরু করলেই আমার মনে হয় উইকেট আসবেই। বিশ্বকাপ ফাইনালে ওরা হেরে গেলেও ওদের লড়াইটা মনে রাখার মতো। মিতালিদের সেটা বলেওছি।
প্র: দু’বছর আগে আনন্দবাজার পত্রিকা দফতরে এসেছিলেন। তখন ক্রীড়া দফতর থেকে আপনাকে একটা ফুটবল দেওয়া হয়েছিল। সেটা এখনও আপনার বাড়িতে আছে?
অক্ষয়: আরে ওই ফুটবলটা দিয়ে আমি আর ছেলে আরভ ছুটির দিনে ওর বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির লনে ফুটবল খেলি। ধন্যবাদ আনন্দবাজারকে।
প্র: আপনিও কি আরভ-এর সঙ্গে ঘরে কবাডি খেলেন ছোটবেলার মতো?
অক্ষয়: শুরু করেছিলাম কয়েকদিন। কিন্তু ওর আবার পড়াশোনা আর মার্শাল আর্টস বেশি পছন্দ। সঙ্গে ফুটবল।
প্র: কলকাতায় আপনার পেশাদার জীবন শুরু। নিশ্চয়ই মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের নাম শুনেছেন।
অক্ষয়: শুনব না মানে! এই দু’টো টিম তো ভারতীয় ফুটবলের জোড়া পাওয়ার হাউস। কলকাতায় চাকরি জীবন থেকে খবর রাখি। চার বছর আগে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অনুষ্ঠানে এসেছিলাম। বর্ণময় সব সমর্থক। জানি একই রকম সমর্থক রয়েছে বাগানেও। ওরা ডাকলে আবার আসার ইচ্ছা রয়েছে।
প্র: অক্ষয় কুমার নিজে এতটা খেলা ভালবাসেন। কিন্তু খেলা বিষয়ক ছবিতে আপনাকে এখনও দেখা গেল না কেন?
অক্ষয়: তার জন্য ভাল গল্প, সংলাপ, পরিচালক লাগবে। সেটা এখনও পাইনি।
প্র: এক সপ্তাহ পরেই পঞ্চাশ পেরোবেন আপনি। জন্মদিনের আগাম শুভেচ্ছা। এ বার কোন জায়গাগুলোতে ইতি টানতে চান, যা পঁচিশে করতেন?
অক্ষয়: ধন্যবাদ। কোনও ইতি নয়। মনটাকে পঁচিশের মতোই রাখি। রাখতেও চাই। এই তো এখনই গিয়ে টিমের জন্য বছর পঁচিশের ছেলের মতোই গলা ফাটাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy