সৌজন্য: রঞ্জি দ্বৈরথের আগে শুভেচ্ছা বিনিময় মনোজ তিওয়ারি (বাঁ দিকে) ও পীযূষ চাওলার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
সাত দিন পরেই নিউজ়িল্যান্ড উড়ে যাবেন ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে ওপেন করতে। গতি ও সুইংয়ের বিরুদ্ধে পরীক্ষা দিতে হবে অভিমন্যু ঈশ্বরন ও প্রিয়ঙ্ক পঞ্চালকে। তার আগে শুক্রবার থেকে ইডেনের সবুজ পিচে মুখোমুখি দু’দলের দুই ওপেনার। একজন বাংলার অধিনায়ক, অন্য জন গুজরাতের সহ-অধিনায়ক।
বুধবারই ড্রেসিংরুমের সামনে দাঁড়িয়ে ইডেনের পিচ নিয়ে আলোচনা করতে দেখা গিয়েছিল তাঁদের। প্রিয়ঙ্ক তো বলেই দিলেন, ‘‘উইকেটে প্রচুর ঘাস। ব্যাট করতে ভালই লাগবে।’’ বাংলার অধিনায়কও এ ধরনের পরীক্ষায় বসতে পছন্দ করেন। তাই গুজরাতের বিরুদ্ধে বাংলার ব্যাটিং লাইন-আপের অন্যতম স্তম্ভ তিনিই। নেতৃত্বের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ব্যাটিংয়ে সে ভাবে ছন্দে দেখা যাচ্ছএ না অভিমন্যুকে। তিনি মনে করেন, আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দেবে একটি বড় ইনিংস।
বাংলার কাঁটা হয়ে উঠতে পারেন বিপক্ষ কোচ সাইরাজ বাহুতুলে। ২০১৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত মনোজ তিওয়ারি, অভিমন্যু, অভিষেক রামনদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি। কার কোথায় শক্তি, কে কোথায় দুর্বল, সব কিছুই তাঁর নখদর্পণে। এমনকি বাংলার পরিকল্পনা কী হতে পারে, সে বিষয়েও আন্দাজ রয়েছে সাইরাজের। বর্তমান দলের প্রত্যেকের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাঁর রয়েছে। কোচ অরুণ লালের সঙ্গেও গত মরসুমে কাজ করেছেন। বাংলার সব পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে প্রাক্তন কোচের। কিন্তু সাইরাজ বলে দিলেন, ‘‘পরিকল্পনা দিয়ে ক্রিকেট হয় না। গত বছরের চেয়ে ওরা উন্নত। হ্যাঁ, রামনদের যা শিখিয়ে গিয়েছি তার ফল এখন পেতে শুরু করেছে। শেষ দু’ম্যাচে দু’টি সেঞ্চুরি। অসাধারণ।’’
বৃহস্পতিবার দুপুরে উইকেটের আচ্ছাদন সরাতেই বিপক্ষ কোচ ও অধিনায়ক মিলে উইকেট দেখে এলেন। গত বছর যে কাজটি করতেন মনোজ তিওয়ারিকে নিয়ে। এখন তাঁর নতুন সঙ্গী পার্থিক পটেল। পিচ দেখে এসে গুজরাত অধিনায়ক পার্থিব বললেন, ‘‘এই পিচ পেসারদের জন্য স্বর্গ। পারলে পাঁচ পেসার খেলানো উচিত।’’ কিন্তু গুজরাতের শক্তি তাদের স্পিনাররা। পীযূষ চাওলা, অক্ষর পটেলের মতো তারকা ইডেনের এই সবুজ পিচ থেকে কতটা ফায়দা তুলতে পারেন, দেখার। অবশ্য পেস বিভাগেও শক্তির অভাব নেই তাদের। ডান-হাতি অভিজ্ঞ পেসার চিন্তন গাজা রয়েছেন। তাঁকে সঙ্গ দিতে পারেন দুই বাঁ-হাতি পেসার। রুশ কলরিয়া ও অর্জন নগওয়াসওল্লা।
বাংলা চার পেসারের ছকেই এগোচ্ছে। অরুণ জানিয়েছেন, উইকেটের এক দিকে প্রচুর ঘাস। অন্য প্রান্তে কিছুটা ছাঁটা। এই অবস্থায় ঈশান পোড়েল, আকাশ দীপ ও মুকেশ কুমারের সঙ্গে চতুর্থ পেসার হিসেবে বি অমিত নাকি অলরাউন্ডার অয়ন ভট্টাচার্যকে নেওয়া হয় সেটাই দেখার। দলীয় সূত্রে খবর, গুজরাতের বিরুদ্ধে ব্যাটিং লাইন-আপ আরও শক্তিশালী করার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলার। তাই অমিতের পরিবর্তে জায়গা পেতে পারেন অয়ন। সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের পরিবর্তে কাকে ভাবা হচ্ছে? কোচের ঘোষণা, ‘‘ঋত্বিক রায়চৌধুরীর অভিষেক হতে পারে। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে মিডিয়াম পেসও করতে পারে।’’
সুদীপের বাদ পড়ার খবর শুনে হতাশ প্রাক্তন কোচ সাইরাজ। বলছিলেন, ‘‘সুদীপকে ছাড়া বাংলা দল দেখে কিছুটা অবাক। কিন্তু দলের প্রয়োজনীয়তাই আসল। তবে ওর টেকনিক অপূর্ব।’’ অশোক ডিন্ডার বিষয়েও তিনি ওয়াকিবহাল। যদিও মন্তব্য করতে চাইলেন না। তিনি কোচ থাকাকালীন ড্রেসিংরুম যে একেবারে শান্ত ছিল, বলা যাবে না। তবে ভেতরের ঝামেলা বাইরে আসতে দিতেন না। সাইরাজ বলে গেলেন, ‘‘ড্রেসিংরুমে শান্তি বজায় রাখার দায়িত্ব কোচের। আমি থাকাকালীন প্রচুর চেষ্টা করেছি। ক্রিকেটারদের সব কিছু খুলে বলতে নেই। অনেক কথা নিজের মধ্যে রাখা উচিত। একটা দল চালাতে হলে এগুলো মানতেই হয়।’’
দু’দলের যাবতীয় পরিকল্পনা আবার ভেস্তে দিতে পারে বৃষ্টি। আবহাওয়ার পূর্বাভাস, শুক্রবার ও শনিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গত ম্যাচেও খারাপ আলো ও বৃষ্টির জন্য অধীকাংশ ওভার নষ্ট হয়েছে। তাই ওভার নষ্টের প্রবণতা কমাতে আজ, শুক্রবার সকাল ৮-৩০ থেকে
শুরু হবে ম্যাচ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy