অভিযান: ভরতের সামনে নয়া চ্যালেঞ্জ। ফাইল চিত্র
সময় পেলে দু’রকম ভিডিও চালিয়ে দেখেন তিনি। একটায় থাকে, ব্রুস লি-র বিভিন্ন সিনেমা। দু’নম্বরটায়, কোনর ম্যাকগ্রেগরের মিক্সড মার্শাল আর্টসের লড়াইয়ের ক্লিপিংস।
একটা সময় তাঁর স্বপ্ন ছিল, ম্যাকগ্রেগর যে ইউএফসি-তে (আলটিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপ) লড়েন, এক দিন তিনিও সেখানে নামবেন। সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে ২৮ বছর বয়সি ভরত খানডারের। যখন আজ, শনিবার সাংহাইয়ে অভিষেক ঘটবে মহারাষ্ট্রের এই তরুণের।
রিংয়ে নামা মাত্রই এক ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে যাবে ভরতের নাম। তিনিই হবেন প্রথম কোনও ভারতীয় মিক্সড মার্শাল আর্টস ফাইটার, যিনি লড়বেন বিশ্ববিখ্যাত ইউএফসি-তে। গত মাসে অর্জন সিংহ ভুল্লার প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসেবে ইউএফসি-তে যোগ দেন। কিন্তু তিনি ছিলেন কানাডার প্রতিনিধি। এ বারই প্রথম পাওয়া যাচ্ছে কোনও নিখাদ ভারতীয়কে।
আরও পড়ুন: লড়াই জামশেদপুর-কেরলের, নজর রাখুন এই ফুটবলারদের দিকে
এই ভাবে ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে যেতে কেমন লাগছে? লড়াইয়ে নামার আগের দিন সাংহাই থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে ভরত বলছিলেন, ‘‘আমার অনেক দিনের স্বপ্ন সত্যি হতে যাচ্ছে। যখন থেকে এমএমএ-কে বেছে নিই, স্বপ্ন দেখতাম ইউএফসি-তে নামব। সেটাই এ বার সত্যি হবে।’’ কিন্তু এমএমএ-কে কেন বেছে নিয়েছিলেন? আপনার পরিবারের কেউ কি ‘বডি কনট্যাক্ট স্পোর্টস’-এর সঙ্গে জড়িয়ে? ভরত বলছিলেন, ‘‘ভারতে অনেকে অনেক খেলা বেছে নেয়। কিন্তু মিক্সড মার্শাল আর্টসে খুব কমই আসে। আমি প্রথমে কুস্তিতে ছিলাম। বডি কনট্যাক্ট স্পোর্টসে থাকার পরে এমএমএ-কে বেছে নিই।’’ আপনার পরিবারের কেউ কি আপনার প্রেরণা? ‘‘আমার বাবা ক্যারাটেতে ব্রাউন বেল্ট। আর আমার ভাইয়েরাও কুস্তিতে রয়েছে। ফলে আমার পক্ষে এই স্পোর্টসে আসাটা খুব স্বাভাবিক,’’ বলছেন ভরত।
শনিবার ইউএফসি-তে
ভরত খান্ডারে বনাম ইয়াদং সং
(দুপুর ২-১৫ থেকে সোনি ইএসপিএনে)।
জানা গিয়েছে, একটা সময় কুস্তিকে খুব গুরুত্বই দিতেন ভরত। কিন্তু সেখানে নানা ভাবে রাজনীতির শিকার হওয়ার পরে বেছে নেন এই নতুন রাস্তা। কিন্তু ভরতের সামনে চ্যালেঞ্জটা সহজ হতে যাচ্ছে না। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, চিনের ইয়াদং সং যথেষ্ট অভিজ্ঞ। বেশ কয়েকটা লড়াইও জিতেছেন। সবচেয়ে বড় কথা, মাত্র সাত দিন আগে বদলে যায় ভরতের প্রতিন্দ্বন্দ্বী। এমনকী, তাঁর ওজনের বিভাগও। এখন ভরতকে ব্যান্টামওয়েট ছেড়ে লড়তে হচ্ছে ফেদারওয়েটে। এতে কি সমস্যা হবে না? ভরত মানছেন না। ভারতীয় তরুণ বলে দিচ্ছেন, ‘‘আমার সামনে সুযোগ এসেছে ইউএফসি-তে নামার। সেই সুযোগটা হারাতে চাইনি। তাই প্রতিদ্বন্দ্বী, এমনকী ওজন বদলে গেলেও আমি লড়তে রাজি হয়ে যাই। এই সুযোগ সবাই পায় না।’’
কী ভাবে প্রস্তুত হচ্ছেন এই মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য? সাধারণ ট্রেনিংয়ের সঙ্গে চলছে যোগ ব্যায়াম এবং মোটিভেশনাল কোর্স। কিন্তু নিজেকে উদ্দীপিত করতে বাড়তি কী করছেন? ভরতের জবাব, ‘‘আমি ব্রুস লি-র ভক্ত। ব্রুস লি-র সিনেমা দেখে নিজেকে তাতিয়ে তুলি। আরও একটা জিনিস দেখি। কোনর ম্যাকগ্রেগরের লড়াইয়ের হাইলাইটস। ম্যাকগ্রেগরের লড়াই আমাকে খুব উদ্দীপিত করে।’’
ইতিহাস সৃষ্টির দিন ব্রুস লি-র ভক্ত দেশকে কী উপহার দেন, এখন সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy