Advertisement
০৫ মে ২০২৪
অবসর নিলেন সৌরাশিস

গোলাপি বল ব্যাটিংয়ের কড়া চ্যালেঞ্জ, বলছেন মনোজ তিওয়ারি

ইডেনের বুকে গোলাপি বলে দিন-রাতের ম্যাচে দল নিয়ে নামছেন— এটা ভাবলেই রোমাঞ্চ অনুভব করছেন বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। যদিও সেই সুযোগ এখনও আসেনি তাঁর সামনে।

সৌরাশিস লাহিড়ীকে বিদায় সংবর্ধনা তাঁর তিন প্রাক্তন সতীর্থ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মনোজ তিওয়ারি ও লক্ষ্মীরতন শুক্লর। বৃহস্পতিবার ইডেনে। ছবি: উৎপল সরকার

সৌরাশিস লাহিড়ীকে বিদায় সংবর্ধনা তাঁর তিন প্রাক্তন সতীর্থ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মনোজ তিওয়ারি ও লক্ষ্মীরতন শুক্লর। বৃহস্পতিবার ইডেনে। ছবি: উৎপল সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৬ ০৩:৩৫
Share: Save:

ইডেনের বুকে গোলাপি বলে দিন-রাতের ম্যাচে দল নিয়ে নামছেন— এটা ভাবলেই রোমাঞ্চ অনুভব করছেন বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। যদিও সেই সুযোগ এখনও আসেনি তাঁর সামনে। তবে সুপার লিগের ফাইনালে খেলতে পারলে যে তা তাঁর জীবনের অন্যতম স্মরণীয় ম্যাচ হয়ে উঠবে, তা জানিয়ে দিতে দ্বিধা করলেন না মনোজ।

বঙ্গ ক্রিকেটের অন্দরমহল গোলাপি বলের ম্যাচ নিয়ে এখন সরগরম। গোলাপি বলে খেলা যেমন এ দেশে এই প্রথম, তেমনই চার দিনের সুপার লিগ ফাইনাল সারা দেশে সরাসরি টিভিতে দেখা যাওয়ার ঘটনাও বাংলার ক্লাব ক্রিকেটের ইতিহাসে এই প্রথম। যা নিয়ে বেশ উত্তেজিত লাগল বাংলার রঞ্জি ক্যাপ্টেনকে। শুক্রবার থেকে ইডেনে দুই প্রধানের যুদ্ধের মতো তাঁদের (কালীঘাট-তপন মেমোরিয়াল) ম্যাচও কার্যত সেমিফাইনাল। সরাসরি জিতলে হয়তো সেই স্বপ্ন পূরণের সুযোগ আসবে তাঁর।

সেই হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে নামার আগের দিন মনোজ বললেন, ‘‘বহুবছর আগে একবার অস্ট্রেলিয়ায় এমার্জিং ট্রফি খেলতে গিয়ে গোলাপি বলে একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু ইডেনে দেশের প্রথম গোলাপি বলের ম্যাচের মতো ঐতিহাসিক ঘটনার অঙ্গ হতে পারলে সেটা হবে জীবনের অন্যতম সেরা ঘটনা। যার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। কাল থেকে ম্যাচটা জেতার জন্য আমরা মরিয়া। সিএবি যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা অসাধারণ।’’

মনোজ এই কথা বলার আগেই অবশ্য বিসিসিআই থেকে খবর এসে যায় অক্টোবর-নভেম্বরে ভারত-নিউজিল্যান্ড টেস্ট হবে ইডেনে। বোর্ড সরকারি ভাবে না বললেও ক্রিকেটমহলে খবর, এটাই হতে পারে ভারতের মাটিতে প্রথম দিন-রাতের টেস্ট। যদিও তা ঠিক হবে সেপ্টেম্বরে দলীপ ট্রফির পর, যার সব ম্যাচই হবে গোলাপি বলে, দিন-রাতে। ভারতীয় কন্ডিশনে গোলাপি বলে খেলা কতটা বাস্তবসম্মত, তা পরখ করে নিতেই এ বার দলীপে গোলাপি বলের প্রচলন। তার আগে অবশ্য ইডেনেই এর একটা ছোট্ট রিহার্সাল হয়ে যাবে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন এই খবর পেয়ে বলেন, ‘‘ইডেনে টেস্টটা যে দিন-রাতেরই হবে, তা এখনও চূড়ান্ত নয়। তাই এখনই বলা যাচ্ছে না, এটাই ভারতের প্রথম দিন-রাতের টেস্ট কি না।’’

মনোজ বলছেন, ‘‘গত বছর গোলাপি বলে টেস্ট দেখেছিলাম টিভিতে। নিজে ম্যাচও খেলেছি এই বলে। আর সম্প্রতি খোঁজখবরও যা পাচ্ছি, তাতে আমার মনে হয়েছে, গোলাপি বলে ব্যাটসম্যানদের চেয়ে বেশি সুবিধা পায় বোলাররা। কারণ, গোলাপি কোকাবুরা বল যেমন বেশি সুইং করে, তেমন বেশি মুভও করে। আর এতে বাড়তি বাউন্সও পায় বোলাররা। ফলে ব্যাটসম্যানদের কাজ কঠিন হয়। ব্যাটসম্যান হিসেবে এই চ্যালেঞ্জটাই উপভোগ করব।’’

নভেম্বরে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে প্রথম দিন-রাতের টেস্টেও ব্যাটসম্যানরা তেমন সুবিধা করতে পারেননি। তিন দিনে শেষ হওয়া ম্যাচে ৮২১ রান উঠেছিল আর উইকেট পড়েছিল ৩৭টি। কিন্তু এই দেশের আবহাওয়া ও উইকেটে গোলাপি বলে কতটা ভাল ক্রিকেট খেলা যাবে, তা নিয়ে কোনও ধারণা নেই মনোজের। বললেন, ‘‘সেটাই তো এখানে পরখ করে দেখা হবে। ইডেনের ম্যাচের অভিজ্ঞতা আমাদের দলীপে কাজে লাগবে।’’

এই সরগরম আবহের মধ্যেই এ দিন সন্ধ্যায় ক্লাব হাউসে যেন কিছুক্ষণের জন্য বেজে উঠল বিষাদের সুর। অবসর ঘোষনা করলেন একশো প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা স্পিনার সৌরাশিস লাহিড়ী। যাঁকে বেশ জাঁকজমক করে বিদায় সংবর্ধনা দিল সিএবি। সৌরাশিস যাতে বেশ আপ্লুত। সম্প্রতি এ ভাবে বাংলার কোনও ক্রিকেটারকেই বিদায় জানানো হয়নি। লক্ষ্মীরতন শুক্ল-র ক্ষেত্রে তো ব্যাপারটা ঘটেছিল পুরো উল্টো। সেই লক্ষ্মীও এ দিন ছিলেন অনুষ্ঠানে। ছিলেন সৌরভ, মনোজ, রণদেব বসু, অশোক দিন্দা, সুদীপ চট্টোপাধ্যায়-সহ তাঁর অন্যান্য সতীর্থরাও। সৌরাশিস বললেন, ‘‘অভাবনীয় পরিবেশ। তিন-তিনবার সচিন তেন্ডুলকরকে আউট করার মতোই স্মরণীয় হয়ে থাকবে ঘটনাটা। আর না খেললেও ক্রিকেটে থাকতে চাই কোচ হিসেবে। বাংলাকেও সার্ভিস দিতে চাই।’’ সিএবি সূত্রের খবর, কয়েক মাস পর সেই সুযোগ সম্ভবত আসতে চলেছে তাঁর কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pink ball Monoj Tiwary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE