Advertisement
E-Paper

বর্ষবরণের সিডনিতে শুরু দল নিয়ে চর্চা

অভাবনীয় বর্ষবরণের রাত। সারা পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে লোকে ছুটে আসে সিডনিতে এই রাতটার জন্য। সব চেয়ে বিখ্যাত আতসবাজির প্রদর্শনী। মেলবোর্নে টেস্ট জিতে সিডনিতে এসে নতুন বছরকে স্বাগত জানালেন বিরাট কোহালিরা।

সুমিত ঘোষ 

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৮
খুশি: রোহিত-ঋতিকার সংসারে নতুন অতিথির আবির্ভাব। টুইটার

খুশি: রোহিত-ঋতিকার সংসারে নতুন অতিথির আবির্ভাব। টুইটার

অভাবনীয় বর্ষবরণের রাত। সারা পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে লোকে ছুটে আসে সিডনিতে এই রাতটার জন্য। সব চেয়ে বিখ্যাত আতসবাজির প্রদর্শনী। মেলবোর্নে টেস্ট জিতে সিডনিতে এসে নতুন বছরকে স্বাগত জানালেন বিরাট কোহালিরা। ক্রিকেটারদের স্ত্রী, পরিবারও যোগ দিয়েছে। তিনি— অনুষ্কা শর্মাও এসেছেন। ভারত অধিনায়ক আগে থেকে টুইটও করে দিয়েছেন যে, নিউ ইয়ার কাটাবেন তাঁর ‘ওয়ান অ্যান্ড ওনলি’-র সঙ্গে।

বিরুষ্কাকে সিডনি হারবার ব্রিজে দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে স্থানীয় ভারতীয়দের মধ্যেও সাংঘাতিক কৌতূহল দেখা গেল। অন্যান্য ক্রিকেটারেরাও তাঁদের পরিকল্পনা সেরে ফেলেছেন। রোহিত শর্মা বাবা হয়েছেন বলে মুম্বই ফিরে গিয়েছেন। তিনি সিডনি টেস্টে খেলবেন না। সোজা যোগ দেবেন ওয়ান ডে-তে।

বর্ষবরণের এমন রঙিন, ঝলমলে রাত। নতুন বছরের প্রথম দিনে আবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ‘হাই টি’-তে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভারতীয় দলকে। মঙ্গলবার সেখানে সকলে যাবেন। মেলবোর্নে ছিল বিজয়োৎসবের আবহ। সিডনিতে দু’দিন ধরে ক্রিকেট নেই, শুধু নিউ ইয়ার উপলক্ষে উৎসবের আমেজ।

তার মধ্যেই জল্পনা আর অঙ্ক কষা শুরু হয়ে গিয়েছে সিডনিতে সম্ভাব্য ভারতীয় একাদশ নিয়ে। কোহালি মেলবোর্নে বলে গিয়েছেন, অশ্বিন প্রায় ম্যাচ-ফিট হওয়ার দিকে এগোচ্ছেন। সিডনিতে টেস্ট শুরুর আগের দিন অর্থাৎ, ২ জানুয়ারি সম্ভবত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে অশ্বিনকে নিয়ে।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, অশ্বিনকে যদি খেলাতে হয়, বসবেন কে? মেলবোর্নে পাঁচ উইকেট নেওয়া রবীন্দ্র জাডেজাকে কী করে বাইরে রাখ যায়? টিম ম্যানেজমেন্টের অনেকেই মনে করছেন, জাডেজা খারাপ করেননি। অম্তত আর কটি সুযোগ তাঁর প্রাপ্য। সিডনি আবার প্রথাগত ভাবে কিছুটা স্পিনারদের সাহায্য করে। তাই হাল্কা করে হলেও তৈরি হতে পারে দুই স্পিনারে খেলার সম্ভাবনা। অস্ট্রেলিয়াও স্পিনার-অলরাউন্ডার টিমে নিয়েছে দেখে মনে হচ্ছে, সিডনির বাইশ গজের বরাবরের চরিত্র পাল্টানো যাবে কি না, তা নিয়ে তারাও নিশ্চিত নয়।

অস্ট্রেলিয়া হল সেই বিরল ক্রিকেট দেশগুলোর একটা, যাদের পিচ প্রস্ততকারকেরা তাঁদের ক্যাপ্টেনের কথা শুনতে বাধ্য নন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁরা শোনেনও না। নিজেদের ইচ্ছা মতো বাইশ গজ তৈরি করেন। তাতে অধিনায়কের না পোষালে তাঁদের কিছু এসে-যায় না। অনেকটা একরোখা অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের মতোই মনোভাব। মেলবোর্নে হারের পরে দু’পক্ষের সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। টিম পেন বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছেন, তিনি মোটেও মেলবোর্নের পিচ নিয়ে খুশি নন। পার্‌থের মতো দ্রুতগতির পিচ চাইছে অস্ট্রেলিয়া। পেনদের মনে হচ্ছে, ভারতীয় ব্যাটিংকে সমস্যায় ফেলতে গেলে দ্রুতগতির, বাউন্সি উইকেট দরকার। সেটা তাঁরা মেলবোর্নে পাননি বলে গজগজ করছেন। সিডনিতে তাই নিজের দেশের ক্যাপ্টেনের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে কি না, সেটা দেখার। সিরিজ হার আটকাতে গেলে সিডনিতে জিততেই হবে পেনদের।

অপারেশন মেলবোর্নের পরে এখন দিন দু’য়েক ছুটি কাটাবে ভারতীয় দল। ২ জানুয়ারি, টেস্ট শুরুর আগের দিন আবার প্র্যাক্টিস। কিন্তু অন্দরমহলে কথাবার্তা হাল্কা করে হলেও শুরু হয়ে গিয়েছে যে, আদর্শ কম্বিনেশন কী হতে পারে। প্রথমত, রোহিত নেই বলে ছয় নম্বরে নতুন কাউকে দরকার। জোরালো সম্ভাবনা হচ্ছে, হনুমা বিহারীকে তাঁর পছন্দের জায়গায় ফেরত পাঠানো। বিহারীকে মেলবোর্নে ওপেন করানো হলেও তাঁকে শর্ট বলের সামনে রীতিমতো হাসফাঁস করতে দেখা গিয়েছে। কারও সর্বনাশ, কারও পৌষ মাসের মতো রোহিত না থাকায় দুই ওপেনারের এক জনকে ফিরিয়ে আনা হতে পারে। বর্ষবরণের রাতে লিখতে বসে মনে হচ্ছে, দুই ওপেনারের মধ্যে দলে ফেরার ব্যাপারে কে এল রাহুল এগিয়ে। অদূর ভবিষ্যতে নাটকীয় কিছু না ঘটলে মুরলী বিজয় তাঁর শেষ টেস্ট খেলে নিয়েছেন পার্‌থে। এর পর পৃথ্বী শ ফিরলে তিনি, মায়াঙ্ক আগরওয়াল এবং রাহুল— এই তিন জনকই ওপেনার হিসেবে ভাবা হবে। রাহুলও রান পাচ্ছেন না কিন্তু বিজয়ের চেয়ে বয়স কম হওয়ায় ভবিষ্যতের কথা ভেবে তিনি এগিয়ে।

মেলবোর্নে প্রথমে ঠিক ছিল, রাহুলকে খেলানো হবে। তিনি এবং মায়াঙ্ক ওপেন করবেন। পরে সেই ভাবনা ত্যাগ করে বিহারীকে দিয়ে ওপেন করানোর সিদ্ধান্ত হয়। প্রথম ইনিংসে বিহারীর ৬৬ বল খেলা দেখে অনেকে তাঁর সাহসের প্রশংসা করেছেন। আবার জেফ থমসনের মতো প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় মনে করছেন বিহারীকে ওপেনে নামিয়ে সময় নষ্ট করা হচ্ছে। তাঁর সেই টেকনিক নেই।

সিডনিতে আদর্শ বোলিং কম্বিনেশন ধরা হয়, টু প্লাস টু। অর্থাৎ, দুই পেসারের সঙ্গে দুই স্পিনার। যদি সেই ফর্মুলা প্রয়োগ করা বয়, তা হলে অশ্বিন এবং জাডেজা দু’জনেই খেলবেন। দুই পেসার হবেন যশপ্রীত বুমরা এবং মহম্মদ শামি। যদি অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের ইচ্ছা মেনে পিচে প্রাণবন্ত ঘাস ছেড়ে রাখা হয়, তা হলে মেলবোর্নের মতোই তিন পেসার এবং এক স্পিনারের নকশা তৈরি করা হবে। তখন ওপেন করবেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল এবং কে এল রাহুল। ছয় নম্বরে বিহারী। চার বোলার বুমরা, শামি, অশ্বিন, জাডেজা। কিন্তু যদি এক স্পিনারে নামতে হয়, তখন কঠিন সিদ্ধান্ত যে, কাকে খেলাব? অশ্বিন না জাডেজা? সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পরে ওভালের শেষ টেস্টে অশ্বিনকে বসিয়ে জাডেজাকে খেলানো হয়েছিল। এখানেও সে রকম কিছু নাটক অপেক্ষা করে আছে কি না, সেটা নতুন বছরের সেরা আকর্ষণ হতে যাচ্ছে।

Border Gavaskar Trophy 2018 Cricket Test India Australia Sydney Test
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy