Advertisement
০৪ মে ২০২৪

দৌড়ের আগে বেকার ছুটলেন দিনভর

শহরে এসেছেন পঁচিশ কিলোমিটার দৌড়ের ফ্ল্যাগ অফ করতে। রবিবার সকাল ছ’টায় উঠে ছুটতে হবে। কিন্তু বরিস বেকারকে তো শনিবারও দিনভর তিষ্ঠোতে দেখা গেল না। সারাক্ষণ যেন ছুটছেন!

ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।

সুপ্রিয় মুখোপাধ্যায় ও প্রীতম সাহা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:১০
Share: Save:

শহরে এসেছেন পঁচিশ কিলোমিটার দৌড়ের ফ্ল্যাগ অফ করতে। রবিবার সকাল ছ’টায় উঠে ছুটতে হবে। কিন্তু বরিস বেকারকে তো শনিবারও দিনভর তিষ্ঠোতে দেখা গেল না। সারাক্ষণ যেন ছুটছেন!

বেলার দিকে দমদমে নামার পর হোটেলে চেক-ইন করেই সটান আনন্দবাজার অফিসে। এক ঘণ্টার ভেতর সেই লোক পাঁচতারা হোটেলে ‘সেলিব্রিটি শেফ’-দের রন্ধনশালায়। নিজে পাস্তা না রাঁধুন, কিংবদন্তি টেনিস তারকা নিজের হাতে অন্য রাঁধুনিদের মাথায় পরিয়ে দিলেন চিরাচরিত সাদা রঙা ঢ্যাঙা ‘শেফ-হ্যাট’। অন্তত ফটো-শ্যুটের জন্যও বেকারকে টুপি পরার অনুরোধ এলে মুচকি হেসে এড়িয়ে গেলেন— ‘‘হ্যাটস অন বলছেন? নো। হ্যাটস অফ!’’ আপনার তো এখানে পাস্তা রান্নার কথা ছিল! রাঁধলেন না কেন? ভ্রু কুঁচকে ছ’ফুট তিন ইঞ্চি এ বার ঘুরে তাকান। ‘‘পাস্তা আমার ফিটনেস ডায়েট। ওটা খাব। রুমে গিয়ে।’’

সত্যি খেয়েছেন কি না জানা না গেলেও কিছুক্ষণের মধ্যে বেকারকে আর মধ্য কলকাতার অভিজাত হোটেলে নয়, দেখা গেল লালবাজারে! কলকাতা পুলিশের সংবর্ধনা নিতে। যেখান থেকে তাদের ‘গল্ফ কার্ট’-এর মতো দেখতে গাড়িতে চেপে ‘বুম বুম’ (যে নাম দিয়েছিলেন তাঁর প্রথম ডাবলস পার্টনার বিজয় অমৃতরাজ) বেকার শনিবাসরীয় বিকেলে হাজির ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে। ‘পুমা লেজেন্ড’ এসে দাঁড়াতেই চিরকালীন বাঙালি প্রথায় লালপাড় শাড়ি পরিহিতারা উলুধ্বনি আর ফুল ছুড়ে তাঁকে বরণ করেন। ফটোগ্রাফারদের হুড়োহুড়ি আর সাধারণ মানুষের উৎসাহ দেখে তখন কে বলবে, ছ’ঘণ্টা আগেই বেকারকে এয়ারপোর্টে প্রথমে কেউ চিনতেই পারেনি। বাউন্সাররা যখন তাঁকে নিরাপত্তাবলয় দিয়ে গেটের বাইরে নিয়ে আসছেন, তা দেখে গুঞ্জন ওঠে, কে এল, কে এল? শুরু হয়ে যায় বেকার দর্শনের হুড়োহুড়ি।

ক্ষুদিরামে ‘মিট দ্য প্রেস’ সেরে সেই স্পেশ্যাল গাড়িতেই ফিরলেন হোটেলে। এবং প্রচণ্ড ফুটবলভক্ত বেকার তার পর নিজের রুমে বসে পড়েন টিভিতে চেলসি-র লাইভ ইপিএল ম্যাচ দেখতে। বায়ার্ন মিউনিখের সাম্মানিক বোর্ড সদস্য হলেও যিনি চেলসি ফ্যান। ভারতীয় ফুটবলের মক্কায় এসে বললেনও, ‘‘কাল তো ইন্ডিয়ার খুব উত্তেজক ফুটবল লিগের ফাইনাল। তাই না? গতকাল দিল্লিতে এক ফুটবলারের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। ফাইনালের একটা টিম তো আপনাদের কলকাতা-ই!’’

ক্রিকেট? ভারতের মাটিতে সেটাও আছে প্রবাদপ্রতিম জার্মান টেনিস তারকার কথায়। ‘‘ক্রিকেট আমি দেখি। ওই সবুজ মাঠ, সাদা ড্রেস খুব সুন্দর লাগে। উইম্বলডন উইম্বলডন ব্যাপার! কিন্তু ক্রিকেটের রুলগুলো আমি বুঝি না। আর ওই যে দৌড়ে রান করে! কখন দৌড়োয়, কবে দৌড়োয়, কত দিন দৌড়োয়, কে জানে? খেলাটা এক দিনেই শেষ হলে বোধহয় ভাল হত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Boris Becker Tennis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE