Advertisement
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ঘর বাঁচাতে গিয়ে সাহস দেখাতে পারলেন না দুই কোচ

আই লিগের প্রথম ডার্বিতে পাওয়া গেল না চোখ ধাঁধানো খেলা। গোলশূন্য এই ড্রয়ের পিছনে কারণ খুঁজলেন দীপেন্দু বিশ্বাসআই লিগের প্রথম ডার্বিতে পাওয়া গেল না চোখ ধাঁধানো খেলা। গোলশূন্য এই ড্রয়ের পিছনে কারণ খুঁজলেন দীপেন্দু বিশ্বাস

ছবি: উৎপল সরকার।

ছবি: উৎপল সরকার।

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪২
Share: Save:

দু’জোড়া গ্লাভস

দুই দলের গেমপ্ল্যানই ছিল ডিফেন্সিভ ভিতের উপর। খুব বেশি আক্রমণে কেউ যায়নি। তাতেও অবশ্য গোল হতে পারত। যদি দুই দলের দুই গোলকিপার কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ সেভ না করত। রেহনেশকে আমার সব সময় খুব আত্মবিশ্বাসী মনে হয়। গোলকিপার হতে গেলে যা থাকা অত্যন্ত জরুরি। স্নায়ুর চাপটা সামলাতে জানে। সনির ভাসানো ইনসুইং কর্নারটা দারুণ বাঁচাল। অত প্লেয়ারের ভিড়ে সেভ করা সহজ নয়। কিন্তু ক্ষিপ্রতা দেখিয়ে ভাল সেভটা করল।

দেবজিতও প্লাজার শটটা ভাল বাঁচিয়েছে। দেবজিতের রিফ্লেক্স নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। উপস্থিত বুদ্ধিও আছে। অনুমান করতে পারে কোন হাইটে বলটা থাকতে পারে। সেটাই কাজে লাগাল। বাকি সময়েও দুই দলের গোলকিপার বেসিক কাজগুলো ঠিকঠাক করেছে।

বুকেনিয়া আর এডুয়ার্ডো

দুই ডিফেন্সের দুই বিদেশি। এদের ঘাড়েই দায়িত্ব ছিল কয়েকজন ভয়ঙ্কর আক্রমণাত্মক ফুটবলারকে থামানোর। সেই পরীক্ষায় বুকেনিয়াকে একশোয় আমি লেটার মার্কস দেব। বুকেনিয়ার সমস্যা হচ্ছে খুব বেশি নড়াচড়া করায় মাঝে মাঝে ক্লিয়ারেন্সের টাইমিংটা ভুল হয়ে যায়। কিন্তু ডার্বিতে বুকেনিয়ার পজিশনিং নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠতে পারে না। সঠিক জায়গায় ছিল। ফিজিকাল ডিফেন্ডার। এক ইঞ্চিও জমি ছাড়েনি জেজে-ডাফিদের। বারবার গায়ে লেগে লেগে খেলছিল। ফাইনাল ট্যাকলগুলো ঠিকঠাক করছিল।

এডুয়ার্ডোও দু’একটা ভুল ছাড়া খুব খারাপ কিছু খেলেনি। হ্যাঁ, প্লাজার শটটা ওর দোষেই হল। কিন্তু তাতেও বলব, ইস্টবেঙ্গলের ফিজিকাল আক্রমণ লাইন আপকে ভালই সামলেছে। রবিন সিংহ, ওয়েডসনদের মতো প্লেয়াররা মোহনবাগান দলের থেকে অনেক বেশি ফিজিকাল। তাদের মার্কিংয়ে রাখা সহজ নয়। সেট পিস সিচুয়েশনেও ভাল খেলেছে।

আক্রমণে যাব না

দুই দলের খেলার স্টাইলে পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু ডার্বিতে দুই দলের একটা জায়গায় মিল পাওয়া গেল— কোচেদের গেমপ্ল্যানে। সঞ্জয় সেন ও ট্রেভর মর্গ্যান যেন আগের থেকেই ভেবে নেমেছিলেন এক পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবেন। খুব বেশি আক্রমণে কেউ যাবেন না। কাউন্টারে খেলবেন। কিন্তু সেটা করতে গেলেও তো লোক লাগে। কাউন্টার তো দু’জন মিলে করা যায় না। তার জন্য মাঝমাঠকে সক্রিয় থাকতে হয়। কিন্তু মোহনবাগানের প্রণয় ও ইস্টবেঙ্গলের মেহতাব খুব বেশি অপোনেন্ট জোনে এলো কোথায়? বরং দু’দলের মাঝমাঠ এত ডিপ খেলছিল, মনে হচ্ছিল তিনজন সেন্টার ব্যাক খেলছে। কাউন্টারে মাঝমাঠ যদি সাহায্য না করে তা হলে গোলটা হবে কোথা থেকে? তার উপরে আবার সব কিছুই ডিপ থেকে তৈরি করা। ছোট ছোট পাস নয়, লং বল। এতে গোলের মুখ খুলছিল না। নিটফল সবার চোখের সামনে।

প্লাজা

প্লাজার খেলার সবচেয়ে শক্তিশালী দিকটা হচ্ছে ওর টাচটা খুব ভাল। টাচ সুন্দর হলে কোনও অ্যাটাকিং ফুটবলারের সুবিধা হয় গোল করার ক্ষেত্রে। রবিবার সেই প্লাজা চোখে পড়ল না। যত বার বল পাচ্ছে, হয় প্রথম টাচ খারাপ নয়তো কন্ট্রোল করতে পারছে না। মাঝে মাঝে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় বল রেখেছে নিজের কাছে। জটলার মধ্যে চলে যাচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে ডার্বিতে খেলার উত্তেজনাটা খেলায় প্রভাব ফেলছে। ড্রিবল করার চেষ্টা করছে যখন পাস দেওয়া উচিত। আবার শটেও কোনও পাওয়ার নেই। সুযোগটা যেটা পেয়েছিল সেটার থেকেও কিছু করতে পারল না। প্লাজার খারাপ খেলাই গোটা ইস্টবেঙ্গল ফরোয়ার্ড লাইনকে সমস্যায় ফেলে দিল।

ওয়েডসন ও সনি

দুই হাইতিয়ান চেষ্টা করেছিল গ্যালারিকে ভাল একটা ম্যাচ দেওয়ার। চেষ্টা করেছিল গোল সাজানোর। কিন্তু দুই কোচের ছকের জালে পড়ে সেটা আর হল না। ওয়েডসনকে যেমন অনেক ডিপ থেকে ব্যবহার করছিলেন মর্গ্যান। বারবার নীচে নেমে বল রিকভার করতে হয়েছে। তার পর বল দেওয়ার কাউকে পাচ্ছিল না। কারণ খুব বেশি কেউ আক্রমণে সাপোর্টে যাচ্ছিল না। তাই মাঝে মাঝে বলটা পেয়েও কোনও লোক পায়নি পাস দেওয়ার।

সনিও মাঝে মাঝে চেষ্টা করল। কর্নারটা দারুণ ছিল। ফ্ল্যাঙ্ক থেকে ইনসাইড কাট করার চেষ্টাও করেছে। কিন্তু ডাবল কভারিংয়ে পড়ে যাচ্ছিল। ফরোয়ার্ড প্লেয়ারদের পজিশনিং খারাপ থাকায় দ্রুত পাসও বাড়াতে পারেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE