সফর শুরুর আগে বলেছিলেন, পেসাররা ব্যর্থ হলেও তাঁর স্পিনারদের ক্ষমতা আছে সেই ব্যর্থতা ঢেকে দেওয়ার। প্রথম ম্যাচে স্পিনাররা মার খাওয়ার পরে বলেছিলেন, অশ্বিন-জাডেজা এ ভাবে ডোবাবেন ভাবতে পারেননি। শুক্রবার গাব্বায় ফের তিনশো রানের লক্ষ্য আগলে রাখতে ব্যর্থ ভারতীয় বোলাররা।
আর এ বার ধোনির বোমা— এই বোলিং আক্রমণ নিয়ে তিনশো রানের টার্গেট ডিফেন্ড করার ব্যাপারে তিনি একেবারেই আত্মবিশ্বাসী নন।
‘‘আমার তো মনে হচ্ছে বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের উপর চাপ দেওয়ার জন্য আমাদের আরও বেশি করে রান করতে হবে। পরপর দুটো ম্যাচে ৩০০ করা অবশ্যই ভাল। কিন্তু আমাদের বোলারদের যা অবস্থা দেখছি, তাতে ৩৩০ বা তারও বেশি রান আমাদের দরকার,’’ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ওয়ান ডে সাত উইকেটে হেরে বলে দিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক।
অস্ট্রেলিয়া যখন অবাধ গতিতে রান তুলে যাচ্ছে, সেই সময় আবার এক ডজন ওয়াইড দিয়ে বসে ভারত। যা নিয়েও ক্ষুব্ধ ধোনি। স্পিনাররা এ দিন তুলনামূলক ভাবে ভাল করেছেন, তা স্বীকার করার সঙ্গে সঙ্গেই ধোনির তোপ, ‘‘আমরা যে সব ওয়াইডগুলো দিয়েছি তার বেশির ভাগই সুইংয়ের জন্য নয়। পুরনো বলে বল করার সময়ও আমরা ওয়াইড দিয়ে গিয়েছি। যখন বিপক্ষের উপর চাপ বাড়ানোর কথা ছিল, তখন আমরা ওয়াইড বল করে গেলাম।’’
পিঠোপিঠি হার দিয়ে সিরিজ শুরু। এর পরে কী ভাবে টিমকে মোটিভেট করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরেও টিমের বোলারদের একহাত নিতে ছাড়েননি ভারত অধিনায়ক। ‘‘ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস যথেষ্ট ভাল জায়গায় রয়েছে। আমাদের আরও কয়েকটা শট খেলতে হবে। চাপের কথা বেশি না ভেবে খেলাটাকে উপভোগ করতে হবে। তবে খুব বেশি উইকেট হারালে তো আবার তার খেসারত দিতে হতে পারে। সব দেখেশুনে যা মনে হচ্ছে, পাল্টা লড়াইয়ের সামান্য জায়গা পেতে হলেও আমাদের ৩৩০ প্লাস স্কোর চাই।’’
তাঁর হাতে যে বোলিং বিকল্পও সে ভাবে মজুত নেই, মেনে নিচ্ছেন ধোনি। গুরকিরত মান এবং ঋষি ধবন দু’জনকে রিজার্ভ বেঞ্চে রেখে এ দিন টিমে মাত্র একটা বদল করেন ধোনি। যা নিয়ে সমালোচনা হলেও ভারতীয় অধিনায়কের মন্তব্য, ‘‘প্রথম ম্যাচে আমরা সেরা বোলিং আক্রমণ নিয়ে নেমেছি। আজ ইশান্ত ফিট ছিল বলে ওকে নিলাম। ভেবেছিলাম এখানে ও ভাল বাউন্স পাবে। সঠিক বোলিং লাইন আপ নিয়ে নামা জরুরি, কিন্তু ব্যাটিংটা ভুলে গেলেও চলবে না।’’ সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘ঋষি ধবনের মতো কাউকে টিমে নেওয়া মুশকিল। ও ভাল বল করে, কিন্তু এত ফিল্ডিং নিষেধাজ্ঞা সামলানো ওর পক্ষে বেশ কঠিন। মাঝের ওভারগুলোয় আবার এমন বোলার দরকার যে রান দেবে না। তাই ভাবতে হবে, দুই স্পিনার খেলানোই বেশি ভাল কি না। না হলে একমাত্র উপায় হল অশ্বিনকে বসানো কারণ জাডেজা রানটাও করে। আমরা তো আর ছয় বোলার খেলাতে পারব না!’’
ভারতীয় বোলিং ভরাডুবি দেখে সুনীল গাওস্করের আবার মনে হচ্ছে, বোলারদের সুযোগ দিতে হলে ওয়ান ডে-তেও গোলাপি বল ব্যবহার করা উচিত। ‘‘সাদা বলে বোলারদের জন্য কিচ্ছু নেই। ওটাকে আমি ‘ডুইং নাথিং বল’ বলি। তার চেয়ে টেস্ট ক্রিকেটে সফল গোলাপি বল সীমিত ওভারেও ব্যবহার করে দেখা যাক না। ব্যাট-বলের ভারসাম্য তাতে কিছুটা ফিরতে পারে,’’ বলেছেন গাওস্কর।
ভারত
রোহিত রান আউট ১২৪
ধবন ক ওয়েড বো প্যারিস ৬
বিরাট রান আউট ৫৯
রাহানে ক স্মিথ বো ফকনার ৮৯
ধোনি ক ম্যাক্সওয়েল বো বোল্যান্ড ১১
মণীশ ক প্যারিস বো ফকনার ৬
জাডেজা রান আউট ৫
অশ্বিন ক বোল্যান্ড বো হেস্টিংস ১
উমেশ ন.আ. ০
অতিরিক্ত ৭
মোট ৫০ ওভারে ৩০৮-৮।
পতন: ৯, ১৩৪, ২৫৫, ২৭৬, ২৯৮, ৩০২, ৩০৬, ৩০৮।
বোলিং: প্যারিস ৮-০-৪০-১, রিচার্ডসন ৮-১-৬১-০, হেস্টিংস ৮-০-৪৬-১,
বোল্যান্ড ১০-০-৬৪-১, ম্যাক্সওয়েল ৬-০-৩৩-০, ফকনার ১০-০-৬৪-২।
ফিঞ্চ ক রাহানে বো জাডেজা ৭১
শন মার্শ ক বিরাট বো ইশান্ত ৭১
স্মিথ বো উমেশ ৪৬, বেইলি ন.আ. ৭৬
ম্যাক্সওয়েল ন.আ. ২৬
অতিরিক্ত ১৯
মোট ৪৯ ওভারে ৩০৯-৩।
পতন: ১৪৫, ১৬৬, ২৪৪।
বোলিং: স্রান ৯-১-৫১-০, ইশান্ত ১০-০-৬০-১, উমেশ ১০-০-৭৪-১,
জাডেজা ৯-০-৫০-১, অশ্বিন ১০-০-৬০-০, বিরাট ১-০-৭-০।