সিরিজে অবশেষে ঘুরে দাঁড়াল ভারত। বুধবার ওরা যে দাপটে খেলল, সেটা টেস্ট সিরিজে এত দিনের নেতিয়ে পড়া পারফরম্যান্সের একেবারে উল্টো। কার্ডিফে ভারতকে দেখে সত্যিই এক দিনের চ্যাম্পিয়ন টিম বলে মনে হয়েছে। ওই উইকেটে ৩০৪ তোলা মোটেই সহজ কাজ ছিল না। বরং পিচ, আবহাওয়া এবং পরিবেশ সবই হোম টিমের পক্ষে ছিল। কিন্তু ভারতের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ডে নয়, ওরা যেন ভারতেরই কোনও উইকেটে খেলছে। ফরম্যাট বদলাতেই ভারতের দুরন্ত পারফরম্যান্স থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট। নীল জার্সিটা গায়ে চড়ালেই একেবারে অন্য পর্যায়ের ক্রিকেট খেলতে শুরু করে টিমটা!
বুধবার শুরুর ধাক্কা সামলে রোহিত আর রাহানেকে উইকেটে টিকে থেকে ইনিংস গড়ার কাজটা করতে দেখে ভাল লাগল। আর রায়না তো নেমে ম্যাচের চেহারাই পাল্টে দিল! ধোনির সঙ্গে ওর পার্টনারশিপই ম্যাচ ইংল্যান্ডের হাতের বাইরে নিয়ে চলে যায়। বিশেষ করে পাওয়ার প্লে-গুলোয় দারুণ বুদ্ধি করে রান তুলে গেল দু’জনে। প্রায় সতেরো ওভার রান রেট একটানা ৯-এ রেখে ডট বল প্রায় হতেই দিল না। ডান হাতি-বাঁ হাতি কম্বিনেশন আর সিঙ্গলস নেওয়ার ক্ষেত্রে দু’জনের অসাধারণ বোঝাপড়া ইংল্যান্ডকে প্রবল চাপে ফেলে দেয়।
ইংল্যান্ড বোলারদের উপর নির্মম অত্যাচার চালাল রায়না। বিশেষ করে অন-সাইডে প্রত্যেকটা শট চাবুকের মতো যাচ্ছিল। মনে রাখবেন, বলের কিন্তু যথেষ্ট মুভমেন্ট হচ্ছিল। যেটা ধরে নিয়ে রায়না শুরু থেকেই ছন্দে চলে আসে। খুব কঠিন পরিস্থিতিতে অবিশ্বাস্য সুন্দর ইনিংস খেলে গেল। এই ফর্মের রায়না সব সময়ে এক দিনের ক্রিকেট এবং টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান।
কোহলিকে দেখে মনে হচ্ছে, ও প্রমাণ করতে মরিয়া যে, এক দিনের ক্রিকেটে ও-ই রাজা। কোহলির যা রেকর্ড, তাতে পঞ্চাশ ওভারের খেলায় ওর শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে সন্দেহের জায়গা নেই। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যে বড় কঠিন ঠাঁই! যা বুঝছি, অফ ফর্ম কাটিয়ে উঠতে ও আপসে নারাজ। শুরু থেকে স্বাভাবিক আক্রমণাত্মক ব্যাটিংটা করেই খারাপ সময় কাটিয়ে উঠতে চাইছে। শুধু বলব মনে রাখ, এই লড়াইয়ে ধৈর্যটাই আসল।
ইংল্যান্ড বোলিং আর ব্যাটিং বেশ খারাপ করল। শুরুর দু’টো উইকেট বাদ দিলে, কোনও সময়েই কুকরা চালকের আসনে ছিল না। ৩০৪ তাড়া করা অসম্ভব ছিল না। কিন্তু ইংল্যান্ড পেসার সহায়ক উইকেটে ভারতীয় স্পিনারদের খেলতে পারল না। আশ্চর্য হয়েছি এটা দেখে যে, জাডেজা-সহ যে স্পিনারদের টেস্ট সিরিজে ওরা এত ভাল সামলায়, বুধবার তাদের বিরুদ্ধেই দাঁড়াতে পারল না!
সিরিজ এখনও যে কেউ জিততে পারে। ইংল্যান্ডের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে। তবে চেন্নাই সুপারকিংস-এর চারমূর্তি, ধোনি-রায়না-জাডেজা-অশ্বিনের বোঝাপড়া দুর্দান্ত। সেটা ভারতের কাজে লাগছে। তবে এর পরেও কিন্তু বাদবাকি ম্যাচগুলোয় ভারতকে পারফর্ম করে প্রমাণ করতে হবে যে, লর্ডস টেস্টের মতো কার্ডিফের জয়টা বিরল কোনও ঘটনা নয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy