Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

গোকুলমের নজর এড়াতে পারলেন না আলেসান্দ্রো

ডুরান্ড কাপে বুধবার গোকুলম এফসিকে হারাতে পারলে ফাইনালে উঠবে ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগানকে সেমিফাইনালে জিততে হবে রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে। তবেই ফাইনালে মুখোমুখি হতে পারে দুই প্রধান।

ভরসা: ইস্টবেঙ্গলের নতুন স্ট্রাইকার মার্কোসের সঙ্গে আলেসান্দ্রো। সোমবার দুপুরে যুবভারতীতে।  ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

ভরসা: ইস্টবেঙ্গলের নতুন স্ট্রাইকার মার্কোসের সঙ্গে আলেসান্দ্রো। সোমবার দুপুরে যুবভারতীতে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

শুভজিৎ মজুমদার
শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ০৫:১০
Share: Save:

মোহনবাগান শিবিরে তাঁর রণনীতি ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় শেষ মুহূর্তে অনুশীলনের সময় বদলে ফেলেছিলেন আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া। সকালের বদলে সোমবার দুপুরে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে খাইমে সান্তোস কোলাদোদের নিয়ে নেমে পড়েন। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হল না লাল-হলুদ কোচের।

ডুরান্ড কাপে বুধবার গোকুলম এফসিকে হারাতে পারলে ফাইনালে উঠবে ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগানকে সেমিফাইনালে জিততে হবে রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে। তবেই ফাইনালে মুখোমুখি হতে পারে দুই প্রধান। অথচ সোমবার বিকেলে ইস্টবেঙ্গলের পাশের মাঠেই প্রস্তুতি সারল গোকুলম। কেরলের দলটির কোচ ফার্নান্দো আন্দেস ভালেরাও স্পেনের। প্রস্তুতি শুরু করার আগে ড্রেসিংরুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখলেন স্বদেশীয় আলেসান্দ্রোর অনুশীলনে বোরখা গোমেস পেরেস, কোলাদো, বিদ্যাসাগর সিংহেরা কী করছেন। লাল-হলুদ কোচের অবস্থা অনেকটা প্রবল শীতে তিন হাত চাদর গায়ে দেওয়ার মতো। মাথা ঢাকতে গিয়ে পা বেরিয়ে যাচ্ছে। এক শত্রুকে এড়াতে গিয়ে আর এক শত্রুর নজরদারির সামনে পড়ে গেলেন আলেসান্দ্রো!

লাল-হলুদ শিবিরের তরফে জানানো হয়েছিল, এ দিন বিকেল তিনটে থেকে অনুশীলন শুরু হবে। অথচ দুপুর আড়াইটার মধ্যেই ফুটবলারদের নিয়ে মাঠে নেমে পড়লেন আলেসান্দ্রো। অনুশীলন শুরু করে দিলেন পৌনে তিনটে নাগাদ। তিনিও অর্ধেক মাঠে অনুশীলন ম্যাচ খেলালেন। তবে সদ্য যোগ দেওয়া নতুন বিদেশি মার্কোস ইউসেবিয়ো খিমেনেস দে লা এসপারা মার্তিন খেলার জন্য কতটা তৈরি তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই গেল। লাল-হলুদের নতুন স্ট্রাইকার শুধু অনুশীলন করলেন ফিজিক্যাল ট্রেনার কার্লোস নোদারের কাছে। বাকিদের নিয়ে সেমিফাইনালের প্রস্তুতি সারলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ।

৩৩ বছর বয়সি মায়োরকার ‘বি’ দলের প্রাক্তন স্ট্রাইকার মার্কোসের দাবি, প্রথম দিনেই তিনি মানিয়ে নিয়েছেন। বললেন, ‘‘মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই কলকাতায় এসেছি। এর মধ্যেই অনেকটা মানিয়ে নিতে পেরেছি। কারণ, বোরখা, কোলাদো আমার পরিচিত। তাই কোনও সমস্যা হচ্ছে না। দলের সঙ্গে অনুশীলন শুরু করলেই দ্রুত তৈরি হয়ে যাব।’’ গত মরসুমে স্পেনের আতলেতিকো বালেয়ারেসে ছিলেন মার্কোস। শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ ৩০ জুলাই খেলেছেন। তা হলে? মার্কোস বলছেন, ‘‘লম্বা মরসুম সবে শেষ হয়েছে। দীর্ঘ বিমানযাত্রার ক্লান্তি রয়েছে। এ ছাড়া আবহাওয়াও বদলে গিয়েছে। তাই ছন্দে ফেরার জন্য একটু সময় দরকার।’’

গত মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের সফল স্ট্রাইকার এনরিকে এসকুয়েদার বিকল্প হিসেবে মার্কোসকে নেওয়া হয়েছে। দলের প্রয়োজনে মাঝমাঠেও খেলতে পারেন বলে দাবি করলেন তিনি। বললেন, ‘‘আমি স্ট্রাইকার। তবে আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবেও খেলতে পারি। এই মুহূর্তে আমার প্রধান লক্ষ্য দলকে সাহায্য করা।’’

মার্কোসের ইস্টবেঙ্গলে আসার নেপথ্যে ডিফেন্ডার মার্তি ক্রেসপি। লাল-হলুদের নতুন স্ট্রাইকার বললেন, ‘‘ক্রেসপি আমার খুব ভাল বন্ধু। ও ইস্টবেঙ্গলে যোগ দেওয়ার পরেই ভারতীয় ফুটবল সম্পর্ক খোঁজখবর নিতে শুরু করি। ওর জন্যই লাল-হলুদে যোগ দিলাম।’’ মোহনবাগানের সালভা চামোরোর সঙ্গেও বন্ধুত্ব রয়েছে মার্কোসের। বললেন, ‘‘হং কং লিগে আমরা প্রতিপক্ষ হিসেবে বহু ম্যাচ খেলেছি। তবে কখনওই এক দলে খেলা হয়নি।’’

রবিবার বিকেলে কলকাতায় পা দেওয়ার পর থেকেই লাল-হলুদ সমর্থকেরা গোল করে ডার্বি জেতানোর আবদার জানাতে শুরু করে দিয়েছেন। ফ্রান্সিসকো তোত্তির ভক্ত বললেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে কথা শুরু হওয়ার পরেই মোহনবাগান সম্পর্কে জেনেছি। ডার্বিকে কেন্দ্র করে উন্মাদনার কথাও শুনেছি।’’

এনরিকের অভাব মার্কোস পূরণ করতে পারবেন কি না, সময়ই বলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE