Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
এই চ্যালেঞ্জকে বুকে টেনে নিতে তৈরি ছেলেরা, বলছেন শাস্ত্রী

‘সিরিজের ভাগ্য ঠিক করবে ব্যাটিং’

মহারণের মাঝে আর একটাই দিন। বলা হচ্ছে, বিরাট কোহালিদের কেরিয়ারে এর চেয়ে বড় সিরিজ আর আসেনি। আর কোহালিদের হেড কোচ— যাঁকে কখনও নেতিবাচক ভাবনায় আচ্ছন্ন হতে দেখা যায় না, তিনি বলে দিচ্ছেন, ছেলেরা চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি। ভয়ে সিঁটিয়ে নেই কেউ, বরং বুক চিতিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি বিরাট-বাহিনি। ঠিক যেমন তাঁরা দু’বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় বীরদর্পে মোকাবিলা করেছিলেন মিচেল জনসনের আগুনের। হেরে গেলেও যে সিরিজে তুল্যমুল্য লড়াই করেছিল ভারত। আসন্ন সিরিজ নিয়ে রবি শাস্ত্রী কথা বললেন আনন্দবাজার-এর সঙ্গে।বিরাট কোহালিদের কেরিয়ারে এর চেয়ে বড় সিরিজ আর আসেনি। আর কোহালিদের হেড কোচ— যাঁকে কখনও নেতিবাচক ভাবনায় আচ্ছন্ন হতে দেখা যায় না, তিনি বলে দিচ্ছেন, ছেলেরা চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি।

পরামর্শ: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্টে বিরাটদের ব্যাটিংই হবে ভারতের প্রধান অস্ত্র, মনে করেন শাস্ত্রী। ফাইল চিত্র

পরামর্শ: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্টে বিরাটদের ব্যাটিংই হবে ভারতের প্রধান অস্ত্র, মনে করেন শাস্ত্রী। ফাইল চিত্র

সুমিত ঘোষ
কেপ টাউন শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৪
Share: Save:

প্রশ্ন: যদি বলি, সিরিজের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে এমন একটা জিনিসকে বাছুন, কোনটা বাছবেন?

রবি শাস্ত্রী: ব্যাটিং। যারা ভাল ব্যাট করবে, তারাই এই সিরিজ জিতবে।

প্র: তবে যে বোলিং নিয়ে এত কথা বলা হচ্ছিল!

শাস্ত্রী: বোলিংও নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ হবে। ওদের নাকি পেস ব্যাটারি আছে সবাই বলছে! আরে, আমাদেরও তো আছে। দেখা যাবে মাঠে কী হয়। কিন্তু আমাকে একটা বিভাগকে বাছতে বললে ব্যাটিংকেই বাছব। সিরিজ ঠিক করে দেবে দু’দলের ব্যাটিং।

প্র: দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে কী প্রত্যাশা করছেন?

শাস্ত্রী: আপনাকে মনে করিয়ে দিই যে, আমি ভারতের কোচ। আমি নিজের ছেলেদের থেকে ভাল এবং খারুশ (মুম্বই ক্রিকেটে খুব চালু এই শব্দের অর্থ তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক বা নাছোড় ভঙ্গি) ক্রিকেট আশা করছি। দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে প্রত্যাশা করব কেন?

প্র: কটকে বসে আপনার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। বোলিং কোচ বি. অরুণ বলছিলেন, ২০১৫-র সেই অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে ছেলেদের আপনি বলেছিলেন, ভয়ডর না রেখে ক্রিকেটকে উপভোগ করো। তাতে পুরো শরীরীভাষাটাই পাল্টে গিয়েছিল দলের। এ বার কী বললেন?

শাস্ত্রী: বার্তা একই থাকছে। আমরা ভাল ক্রিকেট খেলতে চাই। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। সব সময় ফলের দিকে তাকালে হয় না। এটাও দরকার, কী ধরনের ব্র্যান্ড অব ক্রিকেট আমরা খেলতে পারছি। দক্ষিণ আফ্রিকা খুবই ভাল দল। গত এক দশকের পারফরম্যান্সে সেরা দল। যেমন ওরা বিদেশে পারফর্ম করেছে, তেমন নিজেদের দেশে ভাল খেলেছে। সবচেয়ে শক্তিশালী ক্রিকেট দলের দেশে এসে খেলাটা তো একটা দারুণ অভিজ্ঞতাও। ছেলেরাও সেটা জানে এবং ওরা এই চ্যালেঞ্জকে দু’হাতে বুকে টেনে নিতে তৈরি।

প্র: এই ভারতীয় দল হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে প্রথাকেই তুলে দিতে চাইছে। এটা কিন্তু বেশ আকর্ষণীয় ব্যাপার।

শাস্ত্রী: শুনুন, দক্ষিণ আফ্রিকায় আসার পরে অ্যারাইভাল প্রেস কনফারেন্সে একজন বিদেশে গিয়ে পারফরম্যান্সের কথাটা তুলেছিল। আমি তাকে পাল্টা প্রশ্ন করি, কোন দল বিদেশে গিয়ে ভাল খেলছে? সেই সাংবাদিকও কিন্তু তখন বলতে বাধ্য হল যে, বিদেশে গিয়ে কেউ-ই ভাল করছে না। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের অবস্থা কী হল দেখাই তো গেল। অথচ, নিজেদের দেশে ওরা তো অনেককে হারিয়ে দেবে। সে যা-ই হোক, আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরকে সুযোগ হিসেবে দেখছি। আর এত ঘন-ঘন ক্রিকেটের যুগে সবই তো বাইরে খেলা। নিজের ঘরে আর থাকে কোথায় ছেলেরা! আমরা চাইছি, বিদেশে এসেও দল নিজেদের ঘরের মতো বিদেশের পরিবেশকে উপভোগ করুক। ছেলেরা সেটা করতে উদগ্রীব।

প্রথম টেস্ট জিতে সিরিজে ব্যবধান বাড়াতে মরিয়া শাস্ত্রী-কোহালি জুটি।

প্র: টেস্টের মাঝে আর একটাই দিন। শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ব্লকবাস্টার সিরিজ। প্রস্তুতি নিয়ে আপনি কি সন্তুষ্ট?

শাস্ত্রী: হ্যাঁ, ভাল প্রস্তুতি হয়েছে। আমি বিশেষ ভাবে মুগ্ধ দেশ থেকে আসা অতিরিক্ত তিন পেস বোলারকে নিয়ে। খুব উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ওদের। প্রত্যেকটা ছেলে খুব প্রতিভাবান। এই সিরিজটার জন্য তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়ায় ওরা খুব বড় ভূমিকা পালন করে গেল।

প্র: ক’দিন ধরে একটা কথা হাওয়ায় ভাসছে যে, কেপ টাউনে নাকি খরার কারণে এ বার স্লো, টার্নিং উইকেট হবে। আপনার কী মনে হয়?

শাস্ত্রী: ধুর, ধুর। সব বাজে কথা। দক্ষিণ আফ্রিকায় যে রকম উইকেট হয়, কেপ টাউনে সে রকমই হবে। বল দ্রুতগতিতে যাবে, বাউন্সও যেমন চিরকাল থেকেছে, তেমনই থাকবে।

প্র: টার্ন করার কোনও চান্স নেই?

শাস্ত্রী: করলেও হয়তো শেষ দিনে গিয়ে করতে পারে। তবে আজ প্র্যাক্টিস পিচও যা দেখলাম, পেস আর বাউন্স বেশ ভালই ছিল। টেস্ট ম্যাচের পিচ ও রকমই হবে।

প্র: তার মানে পেস-সহায়ক সেই দক্ষিণ আফ্রিকার কঠিন পরিবেশ, পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে অগ্নিপরীক্ষা?

শাস্ত্রী: তাতে অসুবিধেটা কোথায়? সেটা ধরে নিয়েই তো এসেছে ছেলেরা! আমরা কবে বললাম যে, পরীক্ষা দিতে চাই না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE